ভারতে ৫০ কোটির মত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগার নেই, ফলে বিরাট সংখ্যক জনগোষ্ঠী মল-মূত্র ত্যাগ করেন খোলা জায়গায়, মাঠে, জঙ্গলে, ফসলের ক্ষেতে।
খোলা স্থানে মলত্যাগ করার কারণে অনেক নারীকেই দেশটিতে যৌন হয়রানির শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ – এমনকি অনেকে ধর্ষণের শিকারও হয়েছেন।
এবার এই বিষয়টিকে নিয়ে হিন্দি ভাষার একটি সিনেমা তৈরি হয়েছে দেশটিতে, যেটির নাম ‘টয়লেট-এক প্রেম কাথা’।
এমন একটি সময়ে সিনেমাটি বানানো হয়েছে, যখন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাড়িতে বাড়িতে আরো শৌচাগার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন।
‘টয়লেট-এক প্রেম কাথা’ একটি প্রেমের সিনেমা, আর এখানে খলনায়ক হচ্ছে টয়লেট।
“সিনেমাটি আসলে অনেক মজার। কিন্তু এর মধ্যেই সমাজের খুব বড় একটা সমস্যাকে তুলে ধরা হয়েছে”, বলছিলেন সিনেমাটির মূল নারী চরিত্র ভূমি পেডনেকার।
তিনি এই সিনেমায় অভিনয়ের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, “অভিনয়ের জন্য খোলা স্থানে কাপড় তুলে মলমূত্র ত্যাগ করতে গিয়ে আমি বুঝতে পারলাম এটা কতখানি অস্বস্তিকর। আমার মনে হল আমার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হচ্ছে”।
সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রচারণার প্রেক্ষাপটে।
২০১৪ সালে তিনি ঘোষণা করেন ভারতের লক্ষ লক্ষ বাড়িতে তিনি শৌচাগার নির্মাণ করে দেবেন।
এই সিনেমাটিকেও তিনি অনুমোদন দিয়েছেন।
সিনেমার অভিনেতা আকশায় কুমার জানান প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার দেখা হয়েছে এবং এই সিনেমার বিষয়বস্তু শুনে খুশি হয়েছেন।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর প্রচারণা সফল করার জন্য বলিউডে সিনেমা বানানোর দরকার হলো কেন?
আকশায় কুমার বলেন, “ভারতে একসময় ৬৩ শতাংশ মানুষের শৌচাগার ছিল না। এখন সেটা ৫৩ শতাংশ। অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে ধীরে ধীরে। এটা শুধু বলিউডের অন্য আরেকটা সিনেমার মতো না। ভারতকে পরিষ্কার রাখতে একটা ছোট প্রয়াস বলতে পারেন”।
কিন্তু ভারতের মানুষ বাড়িতে টয়লেট বানায় না কেন?
অভিনেত্রী ভূমি দিচ্ছেন নিজের ব্যাখ্যা।
“আমাদের সিনেমার ট্রেলারে একটা ডায়লগ আছে .. যে বাড়িতে তুলসী গাছ আছে, সেই বাড়িতে শৌচাগার থাকবে কিভাবে। অর্থাৎ যেখানে প্রার্থনা করা হয়, সেখানে মলমুত্র ত্যাগ কেন”?
সূত্র: বিবিসি বাংলা
Discussion about this post