• যোগাযোগ
রবিবার, মে ২৫, ২০২৫
Analysis BD
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home Home Post

বাবরি মসজিদ নাকি রাম মন্দির ? ইতিহাস কি বলে ?

জানুয়ারি ২২, ২০২৪
in Home Post, আন্তর্জাতিক, ব্লগ থেকে
বাবরি মসজিদ নাকি রাম মন্দির ? ইতিহাস কি বলে ?
Share on FacebookShare on Twitter

১৫২৮ সালে মোঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা যহীরুদ্দীন বাবরের সেনাপতি মীর বাক্বী ইছফাহানী অযোধ্যায় বাবরী মাসজিদ নির্মাণ শুরু করেন। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর মাত্র ৪ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটে ৪৬৫ বছরের পুরনো ইসলামী সভ্যতার সুমহান নিদর্শনকে ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়।

বাবরী মসজিদ ভাঙার সবচেয়ে বড় কারণ ছিল এখানে হিন্দুদের শ্রী রাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পরে বাদশাহ বাবর সেই স্থানের মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মাণ করেন। কিন্তু ইতিহাস কী বলে?

বাবরী মসজিদ কি রামের জন্মভূমি ছিল? বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এর পক্ষে কোনো প্রমাণ পেশ করতে পারেনি যে, বাবরী মসজিদের স্থানে রাম মন্দির ছিল।

মসজিদের গায়ে ফার্সি ভাষায় স্পষ্ট লিখা আছে, এই মসজিদ ১৫২৮-২৯ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়েছিল এবং নির্মাণকারীর নামও লিপিবদ্ধ করা আছে। এমনকি বাবরের মেয়ে গুলবান্দ বেগম ‘হুমায়ু নামা’তে এই মসজিদ নির্মাণের কথা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনিও এ কথা উল্লেখ করেননি যে, বাবরী মসজিদ মন্দির ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছিল। যদি মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মাণ করা হতো, তবে অন্তত গর্বের উদ্দেশ্যে হলেও গুলবান্দ বেগম সে কথা ‘হুমায়ু নামা’তে লিপিবদ্ধ করতেন।

বাবরী মসজিদ নির্মাণের প্রায় ৫০ বছর পর ১৫৭৫-৭৬ সালে তুলসিদাস রামায়ণ লিপিবদ্ধ করেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, তিনি একজন হিন্দু হয়েও মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি করা হয়েছে এ কথা লিখলেন না। অন্তত তিনি রামায়ণ লিখার সময় এ কথা বলতে পারতেন যে, বাবরী মসজিদ রামের জন্মভূমি এবং সেখানে মন্দির ছিল।

১৬ এবং ১৭ শতাব্দির অযোধ্যা কেন্দ্রিক কোনো ইতিহাস গ্রন্থে এ কথা পাওয়া যায় না যে, বাবরী মসজিদের স্থানে রাম মন্দির ছিল। আবুল ফযল (রহি.) তার লিখিত ইতিহাস গ্রন্থ ‘আইনে আকবার’ গ্রন্থ লিখা সমাপ্ত করেন ১৫৯৮ খ্রিস্টাব্দে। তিনি তার গ্রন্থে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থানসমূহের মধ্যে অযোধ্যার কথা লিপিবদ্ধ করেন এবং বলেন, পূর্বদিকে ৪০ ক্রোশ এবং উত্তর দিকে ২০ ক্রোশ পবিত্র স্থান। অর্থাৎ বুঝা যায়, তখনো রামের জন্মস্থানের নির্দিষ্ট কোনো ধারণা মওজূদ ছিল না। কেননা তিনি সেই স্থানে দুই জন নবীর কবরের কথা উল্লেখ করেছেন, কিন্তু একবারের জন্যও রামের জন্মভূমির দিকে ইশারা করেননি।

‘এয়ারলি ট্রাভেলস ইন ইন্ডিয়া’ গ্রন্থে উইলিয়াম ফোস্টার অযোধ্যার কথা বর্ণনা করেছেন, যখন তিনি ১৬০৮ সালে সেখানে ভ্রমণে গিয়েছিলেন। তিনি তার বর্ণনায় নদীর কথা উল্লেখ করেন, যেখানে হিন্দুরা গোসল করতো এবং সেই নদী থেকে দুই কিলোমিটার দূরে এক রহস্যপূর্ণ গুহার কথা উল্লেখ করেন। যে গুহা সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেন, এখানে রাম ভগবানের অস্থি দাফন করা আছে। অনেকটা আশ্চর্যের বিষয় হলেও সত্য, তিনি রামের জন্মস্থান নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

সুজান রায় ভান্ডারী ১৯৯৫-৯৬ সনে তার কিতাব ‘খোলাছাতুত তারীখ’ গ্রন্থ লিখা সমাপ্ত করেন। তিনি তার বইয়ে ভারত উপমহাদেশের জিওগ্রাফিক্যাল বর্ণনায় হিন্দুদের পবিত্র স্থানসমূহের কথা উল্লেখ করেন। আওরঙ্গজেব কেশোরাজের এক মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন, এ কথা লিখতে তিনি ভুলেননি। কিন্তু তিনি যখন অযোধ্যার জিওগ্রাফিক্যাল বিবরণী পেশ করেন, তখন রামের জন্মস্থানে কেউ মসজিদ নির্মাণ করেছে, শুধু তাই নয় মন্দির ভেঙে নির্মাণ করেছে- এতো বড় একটা ঘটনা লিখতে ভুলে গেলেন?!

স্যার জাদুনাথ সরকার ‘ইন্ডিয়া অফ আওরাংজেব’ গ্রন্থে বলেন, অযোধ্যা পূজার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। রামচান্দার জী এখানেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। অর্থাৎ বুঝা যাচ্ছে, রামের জন্মভূমি অযোধ্যা কিন্তু তার জন্মস্থানে যে বাবরী মসজিদ নির্মিত হয়েছে, তার কোনো ধারণা পাওয়া যায় না। বরং তার জন্মের নির্দিষ্ট কোনো স্থান উল্লেখ করতে পারেননি।

বাবরী মসজিদ যে বাদশাহ যহীরুদ্দীন বাবরের আমলে নির্মিত হয়েছিল, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সম্রাট বাবরের উদারতায় তাকে অনেক বড় মাপের হিন্দুরা সেকুলার বাদশাহ মনে করতেন। বর্তমান সময়ের হিন্দুপন্থী ফেমাস মোটিভেশনাল স্পিকার বিবেক বিন্দ্রাও বাবরকে সেকুলার এবং হিন্দু-মুসলিম বিভেদ বিরোধী বলে মনে করেন। এমনকি এখানে বাবরের জীবনী নিয়ে ‘সেকুলার এম্পায়্যার বাবর’ নামক কিতাবও মওজূদ আছে। এ ছাড়া ‘বাবর নামা’, ‘ইন্ডিয়া ডিভাইডেড’ গ্রন্থে হিন্দু মন্দিরসমূহের প্রতি বাবরের সহানুভূতিশীল দৃষ্টি এবং হিন্দুদের প্রতি সম্রাট হিসেবে তার ভালোবাসা দেখার পরে এ কথা বলা অসম্ভব যে, তিনি মন্দির ভেঙে মসজিদ বানানোর অনুমতি দিবেন বা তার যুগে কেউ মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মাণ করবে। এটা অসম্ভব।

রামগীতির সবচেয়ে পুরাতন এবং নির্ভরশীল গ্রন্থ হচ্ছে বাল্মিকী রামায়ণ। এই রামায়ণ গ্রন্থে রামের জন্মস্থান অযোধ্যা বলা হয়েছে, কিন্তু কোন অযোধ্যা তা বলা হয়নি। আর সেখানে অযোধ্যা শহরের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তার সাথে বর্তমান অযোধ্যার কোনো মিল পাওয়া যায় না। ড. দিনবন্ধু তেওয়ারীর মতে বাল্মিকী রামায়ণে অযোধ্যা শহরের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এবং জন্মস্থানের যে কথা বলা হয়েছে, তা বর্তমান বানারাস শহরের গঙ্গা নদীর তীরে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। এটা ফায়যাবাদ শহরের অযোধ্যা নয়।

‘বাবরী মাসজিদ ইয়া রাম জানামভূমি’ এই বিষয়ের ভারতের চার বিখ্যাত ঐতিহাসিক- প্রফেসর আর.এম. শারমা, প্রফেসর এম. আতহার আলী, প্রফেসর ডী. এন. ঝা. প্রফেসর সুরাজভান একত্রে একটি প্রবন্ধ লিপিবদ্ধ করেন, যার সারসংক্ষেপ আমি নিম্নে লিপিবদ্ধ করছি:

১. ১৬শ শতাব্দী এবং নিশ্চিতভাবে ১৮শ শতাব্দীর পূর্বে অযোধ্যার নির্দিষ্ট কোনো স্থানকে রামের জন্মভূমি হওয়ার কারণে পবিত্র ও সম্মানিত মনে করা হতো না।

২. যেখানে ১৫২৮-২৯ সালে বাবরী মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল, সেখানে রাম মন্দির ছিল- এ কথার কোনো প্রমাণ নেই।

৩. ১৮শ শতাব্দীর পূর্বে রামের জন্মভূমিতে বাবরী মসজিদ আছে এরূপ কোনো লোককথাও ছিল না, এমনকি ১৯শ শতাব্দীর পূর্বে কেউ এই মসজিদ ভাঙার দাবি করেননি।

৪. রামের জন্মভূমিতে বাবরী মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে, এই ধারণা নিশ্চিতভাবে ১৮৫০ এর পরে সৃষ্টি হয়।

প্রায় অনেকটা পরিষ্কার যে, রামের জন্মস্থানকে নিয়ে বর্তমান যা চলছে, তার পুরোটাই একটা নাটক এবং রাজনৈতিক ফায়দার কারণে করা হচ্ছে। মূলত রাম মন্দির বা রামের জন্মস্থান ঝগড়ার সূত্রপাত ইংরেজরা করেছিল, ভারতে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য নষ্টের উদ্দেশ্যে। কারণ হিন্দু-মুসলিমের ঐক্য নষ্ট করতে পারলে তারা এই দেশ আরও অনেক দিন শাসন করতে পারবে। সাথে সাথে মুসলিমদের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হবে। পুনরায় মুসলিমদের এই দেশ শাসন করার মুখে এই ঘটনাকে বাধা হিসাবে সৃষ্টি করাও তাদের উদ্দ্যেশ্য ছিল।

বাবরী মসজিদের স্থানে রাম মন্দির আছে- এ ধারণা সর্বপ্রথম প্রকাশ পায় ইংরেজদের কূটনীতির একটা অংশ হিসাবে ১৯শ শতাব্দীর প্রথমার্ধে। ইংরেজ লেখক লেডোন-এর ‘মেমোরাইজ অফ রাইস উদ্দীন বাবর, এমপায়ার অফ হিন্দুস্তান’ গ্রন্থের মাধ্যমে, যা ১৮১৩ সালে প্রথম প্রকাশ পায়।

১৯৪৯ সালের আগে রাম মন্দির এবং বাবরী মসজিদ নিয়ে কোনো ঝগড়া হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে ছিল না। মুসলিমরা যদি ভারত উপমহাদেশের এই লম্বা শাসনামলে মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মাণ নীতি গ্রহণ করত, তাহলে ভারতের মাটিতে কোনো মন্দির পাওয়া যেত না। সাথে সাথে এই বিশাল সংখ্যক হিন্দুর এক অংশ ভারতে থাকত কিনা সন্দেহ। এটাও বলা যায় যে, এতো কঠোর নীতি নিয়ে মুসলিম শাসক কেন, কোনো শাসকের পক্ষে ই এতো লম্বা সময় শাসন করা সম্ভব নয়।

কে এই রাম, যার সম্মানার্থে মসজিদ ভেঙে রাম মন্দির?

রাম একটি কাল্পনিক চরিত্র : হিন্দুস্তানের সাহিত্যে ‘রাম’ নানা কাহিনী ও বিভিন্ন চেহারায় নিজের একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থান তৈরি করে ফেলেছে। কিন্তু রামের গল্প শুরু হওয়া এবং প্রসিদ্ধি লাভ করার সময় নিয়ে গবেষণা করলে এটা স্পষ্ট জানা যায় যে, রামের সত্য ঐতিহাসিক কোনো প্রমাণ নেই। কিন্তু বাল্মিকী রামায়ণের মধ্যে রাম, সীতা, লাও এবং কুশ-এর কথা এমনভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যেন এটি একটি সত্য ঘটনা। সাহিত্যেও রাম গল্পকথার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাকে হিন্দুদের ভগবানের স্থানও দেওয়া হয়েছে! কিন্তু ধারণাপ্রসূত এই কথার সত্যতা খুঁজতে গত কয়েক বছর হিন্দুস্তানের প্রসিদ্ধ সাহিত্যিক ও গবেষকগণ এবং পাশ্চাত্যের বিখ্যাত ঐতিহাসিকগণ রিসার্চে লিপ্ত হন। কিছু গবেষক রামায়ণের মূল অংশকে ঐতিহাসিক বলে মনে করেন, কিন্তু পরবর্তীতে বৃদ্ধিকৃত ব্যাখ্যাসমূহকে ধারণাপ্রসূত মনে করেন। কেউ সম্পূর্ণ কাহিনীকে গল্পকথা এবং রূপক মনে করেন। কেউ আবার সকল গল্পকথাকে ঐতিহাসিক বলে মনে করেন। যে ভগবানের কাহিনীর সত্যতা নিয়ে বিরোধ আছে, সেই বিরোধপূর্ণ কাহিনীকে সামনে রেখে মসজিদ ভেঙে মন্দির তৈরি একটি কলঙ্কিত ইতিহাস রচনা বৈ কি আর কিছু নয়।

এবার কিছু মতামত উল্লেখ করা যাক, ড. এ. ওয়েবার-এর মতে, সম্পূর্ণ কাহিনীকে আরিয়া সভ্যতার (Allegory) বলে মনে করেন এবং রাওয়ানের সাথে রামের লড়ায়ের ঘটনাকে তিনি ইউনানী সাহিত্যের ১ হাজার খ্রিস্টপূর্বের বিখ্যাত কবি হোমারের সাহিত্য থেকে সংগৃহীত হিসাবে মন্তব্য করেন।[1] জে.টি হুইলার-এর মতে, বৌদ্ধ এবং ব্রাহ্মণদের লড়াইয়ের দৃশ্যপট হচ্ছে রামায়ণ।[2] ড. দীনেশ চন্দ্র সেন ধারণা করেন, বাল্মিকী বৌদ্ধদের ভিক্ষুবৃত্তির সামনে ব্রাহ্মণদের গৃহের ভিতরের রূপকথা তুলে ধরার লক্ষ্যে রামায়ণ লিখেন।[3] অর্থাৎ ভদ্র ভাষায় এটি একটি রূপকথা।

এম. ভেনকাটারটনাম রামায়ণের কাহিনীকে সত্য বা ঐতিহাসিক মনে করলেও তিনি এ গল্পকথাকে ভারতীয় বা হিন্দুস্তানী বলে মনে করেন না। তার মতে, এই কাহিনী খ্রিস্টপূর্ব ১২২৫ থেকে ১২৯২ সনের মিশরের বাদশাহ রামসিস ছানী-এর ইতিহাস। রামসিস ছানী সেই বাদশাহ, যে ইসলামী সমাজে ফেরাঊন নামে প্রসিদ্ধ, যে বনী ইসরাঈল এবং মূসা (আ.)-এর উপর যুলুম নির্যাতনের স্টীম রুলার চালিয়েছিল এবং পরে পানিতে ডুবে মারা গিয়েছিল। স্যার ভেনকাটার টনাম ‘রাম’ শব্দের দ্বারা প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে, রামায়ণের কল্পকাহিনী ভারতীয় নয়; বরং মিসরীয় ঘটনা। কেননা ‘রাম’ শব্দটি শামী শব্দ। শামের এক বাদশাহর নামও ‘রাম’ ছিল। শাম এবং মিসর উভয় দেশেই সূর্যের পূজা করা হতো। ‘রাম’ এবং ‘রামসিস’ উভয় নামকে ব্যাখ্যা করলে, উভয়ের মধ্যে কিছু লিঙ্ক পাওয়া যায়, যার দ্বারা স্যার ভেনকাটারা টানাম প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে, রামায়ণের এই গল্পকাহিনী ভারতের নয়; বরং মিসরের। রাআ অথবা রায় শব্দের অর্থ সূর্য, যার পিতা আসমান এবং মাতা যমীন! ‘রামসিস’ رمسيس বা رعمسس শব্দের অর্থ সূর্য, যাকে জন্ম দিয়েছে। رعمسس মিশরের একজন বিখ্যাত বাদশাহ, যে তার জীবনের প্রথম অংশে শামের ক্বাদিসিয়া অঞ্চলে হামলা করে এবং নিজের হস্তগত করে ফেলে। খ্রিস্টপূর্ব ১২৭৮ পর্যন্ত তার লড়াই চলমান ছিল। তার মূল লড়াই ছিল হুত্তি গোত্রের বিরুদ্ধে। দীর্ঘ লড়াইয়ে رعمسس বিজীত হলে গোত্র প্রধানের মেয়ে সীতাকে বিয়ে করে। রামায়ণের দ্বিতীয় মূল চরিত্র ‘সীতা’ মিশরে প্রচলিত পবিত্র এবং প্রসিদ্ধ নামসমূহের একটি। এমনকি এখনো এখানে সম্মানার্থে মহিলাদের নামের পূর্বে সীতা লাগানো হয়। কায়রোর আজও একটি মসজিদের নাম ‘সীতা যায়নাব’ মসজিদ বলা হয়। স্যার ভেনকাটারাটনাম রামায়ণের অন্য সকল নামকেও মিশরী নামের সাথে মিলিয়েছেন এবং রামায়ণের ঘটনা ভারতের নয়; বরং পুরাতন মিশরের বলে মনে করেন।

যাদের প্রভুর পরিচিতির এই অবস্থা, তারা কীভাবে ৫০০ বছরের একটি মসজিদ ভেঙে নিজেদের জন্য মন্দির বানাতে পারে? যে ঘটনা সঙ্ঘটিত হয়েছে মিশরে, তার জন্মস্থান ভারতে তৈরি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটা বৈ আর কিছুই নয়। ইন্ডিয়ার প্রসিদ্ধ সাহিত্যিক এবং ভাষাবিদ ড. সুনীতি কুমার চ্যাটার্জী বলেন, রামের ইতিহাস অতীত ভারত নিয়ে পড়াশোনাকারী কোনো চিন্তাশীল, বিবেকবান ছাত্রকে আকৃষ্ট করতে পারে না।

বাবা সাহেব আম্বেটকার শ্রী রামের জন্মভূমি বানারাস শহর বলে উল্লেখ করেছেন। ভারতের পুরনো বৈদিক সাহিত্যে চার জন রামের কথা পাওয়া যায়। ফাদার কামেল বালকের মতে, বৈদিক যুগে যে রামায়ণের লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল বা রাম নামক যে চরিত্র প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল, তার কোনো অস্তিত্ব বেদাক বা বৈদিক সাহিত্যে পাওয়া যায় না। তিনি আরও বলেন, রামায়ণের কিছু নাম ইতিহাসের ব্যক্তি বা স্থানের নামের সাথে মিলে যায়। তার অর্থ এই নয় যে, পূর্ব যুগে এই সমস্ত নামে রামায়ণে প্রচলিত চরিত্রের অধিকারীগণ বাস্তবে ছিলেন। বরং শুধু এতটুকু বলা যেতে পারে, এই সমস্ত নাম পূর্ব যুগে বিদ্যমান ছিল। অর্থাৎ তিনি রাম চরিত্রকে ইতিহাসের বাস্তব বলে স্বীকার করতে চাননি; বরং বুঝাতে চেয়েছেন এটি একটি কাল্পনিক গল্পকথা মাত্র।

পরিশেষে বলা যায়, রামকে নিয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো বর্ণনা পাওয়া যায় না। বিভিন্ন রামায়ণে রামের যে চরিত্রের কথা বলে হয়েছে, তা রামায়ণ লেখকরা কোথা থেকে সংগ্রহ করেছেন, সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট জবাব পাওয়া যায় না। ইতিহাসও এ বিষয়ে একদম নিশ্চুপ। আজকাল যে রামায়ণ প্রচলিত আছে, তা তুলসি দাস এবং বাল্মিকীর লেখা রামায়ণ, যাতে যুগ পরিবর্তনে নানা পরিবর্তন এসেছে।

সুতরাং সময় এসেছে রামের পরিচয় স্পষ্ট করা। প্রকৃত সত্য মানুষের সামনে পেশ করা এবং সে দায়িত্ব হিন্দুত্ববাদী ঐতিহাসিকসহ সকল ঐতিহাসিকের। ইসলামে অন্য ধর্মের প্রভুদের গালি দিতে এবং মন্দ কথা বলা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু এরকম হ য ব র ল একটি চরিত্রকে সামনে রেখে ভারতের ৫০০ বছরের ভারত সভ্যতার নিদর্শনকে ভেঙে রামের মন্দির নির্মাণ করা কতটা যৌক্তিক? শুধু তাই নয়, বর্তমান অযোধ্যা রামের জন্মস্থান কিনা তা নিয়ে যখন প্রশ্নের শেষ নেই, তখন জোর করে বাবরী মসজিদ ভেঙে মন্দির নির্মাণ করার মূল কারণ কী? আশা করি আগামীতে জাতির সন্তানেরা তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনের সাথে সাথে মসজিদকে পুনরায় ফিরিয়ে আনবে।

 

তথ্যসূত্র:

মুহাম্মাদ আরেফ ইকবাল, বাবরী মসজিদ এক তারিখী দাস্তাবেজ (১ম ও ২য় খণ্ড)।

ছানাউল্লাহ, আফকারে মিল্লী, নয়া দিল্লী, বাবরী মসজিদ সংখ্যা।

সম্পর্কিত সংবাদ

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব
Home Post

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫
ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?
Home Post

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫
নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে
Home Post

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

এপ্রিল ৩০, ২০২৫

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • বিতর্কিত আজিজের সাক্ষাৎকার নিয়ে লে. কর্নেল মুস্তাফিজের বিশ্লেষণ

    বিতর্কিত আজিজের সাক্ষাৎকার নিয়ে লে. কর্নেল মুস্তাফিজের বিশ্লেষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির যত মামলা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রক্তাক্ত ২৮ ফেব্রুয়ারি: নির্বিচার গণহত্যার দিন

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ইসরায়েলে নিহত বেড়ে ২৫০, আহত ১ হাজার ৫০০

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫
ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫
নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারার প্রবর্তন অপরিহার্য

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারার প্রবর্তন অপরিহার্য

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
হাওর ধ্বংস করে আবদুল হামিদের প্রমোদ সড়ক

হাওর ধ্বংস করে আবদুল হামিদের প্রমোদ সড়ক

মার্চ ২০, ২০২৫
  • Privacy Policy

© Analysis BD

No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে

© Analysis BD