ভারত থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ঝাঁকে-ঝাঁকে মারা যাচ্ছে মাছ, পাখি, জলজপ্রানী, হাঁস। পঁচা ধান, মরা মাছ, হাঁসের পঁচা দুর্গন্ধে বিপর্যস্ত পুরো হাওরের জনপদ। ধান ও মাছ পঁচার দুর্গন্ধ ও দুষিত পানিতে মানবদেহে দেখা দিচ্ছে মারাত্মক উপসর্গ।
বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে রয়েছে ওপেনপিট ইউরেনিয়াম খনি। বিশেষজ্ঞরা বলছে সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত ‘রামসার সাইট’-খ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওরের এই বিপর্যয়ের জন্য ভারতের ইউরেনিয়ামের বিষক্রিয়াই দায়ী।
এশিয়ার দুটি বৃহৎ জলাশয় হাকালুকি ও টাঙ্গুয়ার হাওরের জলজপ্রাণীর মৃত্যুর জন্য ভারতের ইউরেনিয়াম খনিই যে দায়ী সেটা গত ডিসেম্বরে মেঘালয়ের স্থানীয় খাসি জনগোষ্ঠী সেই এলাকার রানিকর নদীর পানির রঙ নীল থেকে বদলে সবুজ হয়ে যেতে দেখে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছিল।
কিন্তু আমাদের সরকার হাওরের এই মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের ব্যাপারে ততটাই নির্লিপ্ত থেকেছে, যেমনটা এই বিপর্যয়ের পরও নির্লিপ্ত আছে!!
বলা হচ্ছে— উজানের ঢলের পানি ও আগাম বন্যা নাকি এর জন্য দায়ী। তাহলে বন্যার পানি ও উজানের ঢলে প্রানী মরবে কেন? বন্যার পানিতে বিষ আসবে কোত্থেকে?
আরো বলা হচ্ছে- ভারতের কৃষিজমিতে ইউরিয়া সারের কারনে নাকি কাঁচা ধান পচে বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস তৈরি হয়েছে! যদি তাই হয়, তাহলে সেই বিষাক্ত পানি ভারতের মাছ, পাখি ও জলজপ্রানীর কোন ক্ষতি না করে বাংলাদেশের হাওরের সর্বনাশ করলো কি করে?
তার মানে নিশ্চয়ই কেউ ইচ্ছা করেই সেই বিষাক্ত পানির ঢল বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেবার জন্য আমাদের বাঁধ ভেঙে দিয়েছে! আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফের এ বিষয়ে একটি উদ্বৃতি আজকে প্রথম আলোতে এসেছে। প্রথম আলোকে হানিফ বলেন, “বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির কথা এসেছে। এই বিষয়ে তদন্ত চলছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হয়েছে। অনিয়মে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
এটাতো প্রমানিত যে, ভারতের ইউরেনিয়াম খনির তেজস্ক্রিয়তা মিশ্রিত পানির ঢল রক্ষার্থে আমাদের দেয়া বাঁধটি কেউ না কেউ ভেঙে দিয়েছে।
এটাও পরিস্কার যে, ভারতের ইউরেনিয়াম খনির তেজস্ক্রিয়তা মিশ্রিত পানির বিষক্রিয়াই হাওরের বিপর্যয়ের জন্য দায়ী।
এমনটাই ঢাকার আণবিক শক্তি কমিশনের প্রধান আজকে গণমাধ্যমকে বলেছেন যে, “ইউরেনিয়ামের কারণেই পানির রঙ পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এর কারণেই পানির নিচের মাছ-ব্যাঙ মারা যাচ্ছে। সাধারণত ধান পঁচে যে আমোনিয়া গ্যাস সৃষ্টি হয় তাতে এতো মাছ মারা যাওয়ার কথা নয়।”
Discussion about this post