রুদ্র আহনাফ
দুর্নীতি-দু:শাসন এই দুই মিলেই বিগত ১২ বছর ধরে চলছে শেখ হাসিনার শাসন। যদিও শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতাকর্মীরা দাবি করছে দেশে নাকি উন্নয়ন ও সুশাসনের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গণমাধ্যম খুললেই প্রতিদিন দুুর্নীতি-লুটপাট আর খুন হত্যা ছাড়া অন্য কোনো খবন চোখে পড়ে না। আর গণমাধ্যমগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখার কারণে শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতাদের দুর্নীতি-লুটপাটের সঠিক তথ্য দেশবাসী জানতে পারছে না। এরপরও দুয়েকটি গণমাধ্যম মাঝে মধ্যে ছোট খাটো দুর্নীতির যে রিপোর্ট প্রকাশ করে তাতেই বুঝা যায় যে, দেশে কি পরিমাণ লুটপাট হচ্ছে।
কথিত উন্নয়নের নামে শেখ হাসিনা প্রতিদিন সারাদেশে বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন করছে। এসব প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। শেখ হাসনিার এসব কথিত উন্নয়ন প্রকল্প থেকে তার দলের নেতাকর্মীরা শত শত কোটি টাকা বিভিন্ন অজুহাতে লুটে নিচ্ছে। এমনকি এসব লুটপাটের সাথে সরকারি আমলারাও জড়িত। খোদ পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান নিজেই ক্ষোভ প্রকাশ করে সেদিন বলেছেন-প্রকল্পগুলোতে টিমওয়ার্কের মাধ্যমে দুর্নীতি হচ্ছে। এসব প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে প্রায় দিনই গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে। কিন্তু শেখ হাসিনা এসব নিয়ে কিছুই বলছে না। মনে হয় যেন তিনি নিরবে সম্মতি দিয়ে যাচ্ছেন।
এরপর দেশের সর্বচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হচ্ছে বর্তমানে স্বাস্থ্যখাত। এখানে দুর্নীতি লুটপাট এখন ওপেন সিক্রেট। স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পিয়ন থেকে শুরু করে সচিব-মহাপরিচালক-মন্ত্রী সবাই দুর্নীতি-লুটপাটে জড়িত। এই স্বাস্থ্যখাত এখন দুর্নীতির আখড়া। এখানে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হচ্ছে সরাঞ্জামাদি কেনাকাটায় ও টেন্ডারে।
এই করোনাকালীন সময়েও প্রত্যেকটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। একটি গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতাল র্কর্তৃপক্ষ ২৫০ টাকার একটি সুই কিনেছে ২৫ হাজার টাকায়। ৪০০ টাকার একটি টিস্যু ফরসেপস কিনেছে ২০ হাজার টাকায়। ৬০ টাকার প্রস্রাবের ব্যাগ কিনেছে ১ হাজার ৩০০ টাকায়। এভাবে তারা আরও অনেক পণ্য কিনেছে।
নিউরো সায়েন্স হাসপাতাল গড়ে মাসে ১০ থেকে ১১ কোটি টাকার এমএসআর পণ্য কেনাকাটা করে থাকে। বছরে প্রতিষ্ঠানটি ১৩০ কোটি টাকার বেশি কেনাকাটা করে। যার বড় অংশেই এমন সাগর চুরি হয় বলে সংশ্লিষ্টদের মত।
তারপর, করোনার টিকা নিয়ে হচ্ছে আরেককাণ্ড। বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা কেনার ক্ষেত্রেও সরকারের লোকজন শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
স্বাস্থ্যখাতের এসব দুর্নীতি-লুটপাটের টাকার বড় একটি অংশ যাচ্ছে শেখ হাসিনার পরিবারের হাতে। যার কারণে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিকসহ দুর্নীতিবাজ আমলাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না শেখ হাসিনা। এরপর, বিগত কযেক বছরে জলবায়ু ফান্ডের জন্য বিদেশ থেকে ৭০০ কোটি টাকা এনেছে সরকার। এই অর্ধেক লুটপাট করেছে সরকারের লোকজন। শেখ হাসিনা এসব জানার পরও কিছু বলেনি।
শেখ হাসিনার আশ্রয় প্রশয়েই বিগত ১২ বছর ধরে লুটপাট হচ্ছে। সব দুর্নীতি-লুটপাট থেকেই অংশ পাচ্ছে শেখ হাসিনা। দুর্নীতিবাজদেরকে তিনি মায়ের মতো ছায়া দান করছেন। তাই আমি বলবো শেখ হাসিনা এখন ‘মাদার অব অল করাপশনস।
(লেখাটি লেখকের ব্লগ থেকে সংগৃহীত)
Discussion about this post