লেনিন শুভ্র
মুজিববর্ষ শুরু হতে না হতেই মহামারি কবলে বাংলাদেশ। তাই বলে মহান মুজিববর্ষ পালন কি থেমে থাকবে? করোনার শুরুতে দেখা যায় বঙ্গপালের নামে চাল চুরির কর্মসূচী। আওয়ামী লীগের মেম্বার,চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে এমপিরাও এই কর্মসূচী স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে পালন করেছে। শুধু তাই নয় সে সময়ও চাল দেয়ার নামে বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেও মুজিববর্ষের সূচনা করেছিলো।
এরপর জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের জালালের চর রোহেলি গ্রামে করোনাভাইরাসের তল্লাশির কথা বলে গভীর রাতে পুলিশ পরিচয়ে ঘরে ঢুকে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা। তারপর রংপুরের সভাপতি মেহেদী হাসান সিদ্দিকী রনি এক স্কুল শিক্ষিকাকে ধর্ষণ করে কর্মসূচী অব্যাহত রাখেন। এরপর থেকে বঙ্গ কন্যার সোনার ছেলে খ্যাত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ ধর্ষণ, গণধর্ষণ, হত্যা, খুন, মাদক ব্যবসা, চুরি, ছিনতাই, অপহরণ ও চাঁদাবাজির কর্মসূচি পালন করে আসছে। আগামী ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত তাদের এই কর্মসূচী চলমান থাকবে বলে ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে।
তারেই ধারাবাহিকতা দেখা গেছে সিলেট এমসি কলেজেও। শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসের ছাত্রাবাসে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে এক গণধর্ষণ কর্মসূচি পালন করেছে কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় এক দম্পতি সিলেট এমসি কলেজ এলাকায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। এসময় স্ত্রীকে গাড়িতে বসিয়ে রেখে স্বামী পাশের দোকানে কেনাকাটা করছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের দুজনকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এরপর স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, ছাত্রাবাসের ৭ নম্বর ব্লকে ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমানের সভাপতিত্বে ওই নারীকে গণধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণে অংশগ্রহণকারী অন্য ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, তারেকুল ইসলাম, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম।
ধর্ষণ কর্মসূচি শেষে তারা গ্রেফতারের ভয়ে শেখ মুজিবের রুহের মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত না করেই পালিয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত গণধর্ষণ কর্মসূচির পর মুজিবের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত না করে পালিয়ে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাদের প্রতি প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়েছে। প্রতিবাদে মহানগর ছাত্রলীগের একটি অংশ তাদেরকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ করছে।
এদিকে, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ছাত্রলীগের এই গণধর্ষণ কর্মসূচির খবর গণমাধ্যমে আসার পর সারাদেশে এনিয়ে তুলকালাম সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সকল গণমাধ্যম দুইদিন ধরে তাদের এই কর্মসূচির সংবাদ প্রচার করে যাচ্ছে।
তবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদেরকে ধিক্কার জানিয়ে কিছু মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করলেও বিশিষ্টজনেরা বলছেন, ওরা আসলে ধর্ষক নয়, ওরা হলো শেখ মুজিবের পূতপবিত্র সন্তান। ওদেরটাকে ধর্ষণ বলা যাবে না। ওরা মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ওই নারীকে ধরে ওদের মুজিব বাবাবে স্মরণ করেছে।