অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে নিয়ে ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য দেয়া সেই বক্তা মঈনুল ইসলামসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। খবর যুগান্তরের।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় উপজেলার সাজাইল ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শাহজাহান মুন্সী বিমুল বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করে কাশিয়ানী থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মাহফিলের প্রধান বক্তা মঈনুল ইসলাম সরকারবিরোধী আলোচনা শুরু করেন। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা কাজী জাহাঙ্গীর আলম সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রদান করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি তা উপেক্ষা করে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে উসকানি ও ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য দিতে থাকেন। পুনরায় কাজী জাহাঙ্গীর আলম ওই বক্তব্য থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করলে মঞ্চে বসে থাকা বক্তাদের প্রায় ২৫০ অনুসারী উত্তেজিত হয়ে কাজী জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে আসামি ক্ষিপ্ত হয়ে কাজী জাহাঙ্গীরকে কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে আহত করে।
এজাহারে আরও বলা হয়, ঘটনার পরের দিন সন্ধ্যায় ওয়াজ মাহফিলের পার্শ্ববর্তী ঝোপের মধ্যে কালো টেপ দিয়ে মোড়ানো ৩টি ককটেল দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ককটেল উদ্ধার করে। আসামি এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য ককটেলগুলো ওখানে রেখেছিলেন।
তবে মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন এমন স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেছেন, বক্তা মঈনুল ইসলাম সরকারবিরোধী কোনো বক্তব্য প্রদান করেননি। তিনি কেবল দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী সম্পর্কে কিছু কথা বলেছেন। তাতেই আওয়ামী লীগ নেতা কাজী জাহাঙ্গীর উত্তেজিত হয়ে যান এবং জোরপূর্বক বক্তাকে স্টেজ থেকে নামিয়ে দেন। আওয়ামী লীগ নেতার এমন আচরণে উপস্থিত জনতা উত্তেজিত হয়ে তাকে ধাওয়া দিলে তিনি পালিয়ে যান। অন্যদিকে ককটেল উদ্ধারের ঘটনা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও সাজানো বলে দাবি করেন এলাকাবাসী।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মার্চ উপজেলার ছোটখারকান্দি গ্রামবাসীর উদ্যোগে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। রাত ১১টার দিকে মাহফিলের প্রধান আকর্ষণীয় বক্তা মঈনুল ইসলাম ওয়াজ করেন। এ সময় তিনি মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীকে প্রখ্যাত আলেম ও নিরপরাধ হয়েও জেল খাটছেন উল্লেখ করে সাঈদী সম্পর্কে মন্তব্য করেন।
সাঈদী সম্পর্কে আরও কিছু কথা বলার জন্য উপস্থিত লোকজনের কাছে অনুমতি চান তিনি। এ সময় মাহফিলের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী জাহাঙ্গীর আলম ওই বক্তাকে ওয়াজ করতে নিষেধ করেন এবং তাকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেন।
এতে মাহফিল শুনতে আসা লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের ওই নেতার ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে আ’লীগের ওই নেতাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে উত্তেজিত লোকজন। পরে তিনি স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হন।
কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার রাতে মামলাটি দায়ের হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।