• যোগাযোগ
মঙ্গলবার, মে ২৭, ২০২৫
Analysis BD
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home ইসলাম

স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করলো?

জুলাই ১৯, ২০১৭
in ইসলাম
Share on FacebookShare on Twitter

আরিফ আজাদ

ল্যাম্পপোষ্টের অস্পষ্ট আলোয় একজন বয়স্ক লোকের ছায়ামূর্তি আমাদের দৃষ্টিগোচর হলো।গায়ে মোটা একটি শাল জড়ানো। পৌষের শীত। লোকটা হালকা কাঁপছেও।

–

আমরা খুলনা থেকে ফিরছিলাম। আমি আর সাজিদ।

ষ্টেশান মাষ্টারের রুমের পাশের একটি বেঞ্চিতে লোকটা আঁটসাঁট হয়ে বসে আছে।

ষ্টেশানে এরকম কতো লোকই তো বসে থাকে।তাই সেদিকে আমার বিশেষ কোন কৌতুহল ছিলো না।কিন্তু সাজিদকে দেখলাম সেদিকে এগিয়ে গেলো।

লোকটার কাছে গিয়েই সাজিদ ধপাস করে বসে পড়লো।আমি দূর থেকে খেয়াল করলাম, লোকটার সাথে সাজিদ হেসে হেসে কথাও বলছে।

আশ্চর্য! খুলনার ষ্টেশান।এখানে সাজিদের পরিচিত লোক কোথা থেকে এলো? তাছাড়া, লোকটিকে দেখে বিশেষ কেউ বলেও মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে কোন বাদাম বিক্রেতা।বাদাম বিক্রি শেষে প্রতিদিন ওই জায়গায় বসেই রাত কাটিয়ে দেয়।

আমাদের রাতের ট্রেন। এখন বাজে রাত দু’টো।এই সময়ে সাজিদের সাথে কারো দেখা করার কথা থাকলে তা তো আমি জানতামই। অদ্ভুত!

–

আমি আরেকটু এগিয়ে গেলাম। একটু অগ্রসর হতেই দেখলাম, ভদ্রলোকের হাতে একটি বইও আছে।দূর থেকে আমি বুঝতে পারি নি।

সাজিদ আমাকে ইশারা দিয়ে ডাকলো। আমি গেলাম।

লোকটার চেহারাটা বেশ চেনা চেনা লাগছে,কিন্তু সঠিক মনে করতে পারছি না।

সাজিদ বললো,- ‘এইখানে বোস।ইনি হচ্ছেন হুমায়ুন স্যার।’

হুমায়ুন স্যার? এই নামে কোন হুমায়ুন স্যারকে তো আমি চিনি না।সাজিদকে জিজ্ঞেস করতে যাবো যে কোন হুমায়ুন স্যার, অমনি সাজিদ আবার বললো,- ‘হুমায়ুন আজাদকে চিনিস না? ইনি আর কি।’

এরপর সে লোকটার দিকে ফিরে বললো,- ‘স্যার, এ হলো আমার বন্ধু, আরিফ।’

লোকটা আমার দিকে তাকালো না। সাজিদের দিকে তাকিয়ে আছে।ঠোঁটে মৃদু হাসি।

আমার তখনো ঘোর কাটছেই না।কি হচ্ছে এসব? আমিও ধপাস করে সাজিদের পাশে বসে গেলাম।

–

সাজিদ আর হুমায়ুন আজাদ নামের লোকটার মধ্যে আলাপ হচ্ছে।এমনভাবে কথা বলছে, যেন তারা পরস্পর পরস্পরকে অনেক আগে থেকেই চিনে।

লোকটা সাজিদকে বলছে,- ‘তোকে কতো করে বলেছি, আমার লেখা ‘আমার অবিশ্বাস’ বইটা ভালোমতো পড়তে। পড়েছিলি?’

সাজিদ বললো,- ‘হ্যাঁ স্যার। পড়েছি তো।’

– ‘তাহলে আবার আস্তিক হয়ে গেলি কেনো? নিশ্চয় কোন ত্যাদড়ের ফাঁদে পড়েছিস? কে সে? নাম বল? পেছনে যে আছে, কি জানি নাম?’

– ‘আরিফ……’

– ‘হ্যাঁ, এই ত্যাদড়ের ফাঁদে পড়েছিস বুঝি? দাঁড়া, তাকে আমি মজা দেখাচ্ছি……..’

এই বলে লোকটা বসা থেকে উঠতে গেলো।

সাজিদ জোরে বলে উঠলো,- ‘না না স্যার। ও কিচ্ছু জানে না।’

– ‘তাহলে?’

– ‘আসলে স্যার, বলতে সংকোচ বোধ করলেও সত্য এটাই যে, নাস্তিকতার উপর আপনি যেসব লজিক দেখিয়েছেন, সেগুলো এতটাই দূর্বল যে, নাস্তিকতার উপর আমি বেশিদিন ঈমান রাখতে পারি নি।’

এইটুকু বলে সাজিদ মাথা নিঁচু করে ফেললো।

লোকটার চেহারাটা মূহুর্তেই রুক্ষ ভাব ধারন করলো। বললো,- ‘তার মানে বলতে চাইছিস, তুই এখন আমার চেয়েও বড় পন্ডিত হয়ে গেছিস? আমার চেয়েও বেশি পড়ে ফেলেছিস? বেশি বুঝে ফেলেছিস?’

সাজিদ তখনও মাথা নিঁচু করে আছে।

লোকটা বললো,- ‘যাক গে! একটা সিগারেট খাবো।ম্যাচ নেই। তোর কাছে আছে?’

– ‘জ্বি স্যার।’- এই বলে সাজিদ ব্যাগ খুলে একটি ম্যাচ বের করে লোকটার হাতে দিলো।সাজিদ সিগারেট খায় না।তবে, প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো তার ব্যাগে থাকে সবসময়।

–

লোকটা সিগারেট ধরালো।কয়েকটা জোরে জোরে টান দিয়ে ফুঁস করে একমুখ ধোঁয়া ছাড়লো।ধোঁয়াগুলো মূহুর্তেই কুন্ডুলি আকারে ষ্টেশান মাষ্টারের ঘরের রেলিং বেয়ে উঠে যেতে লাগলো উপরের দিকে।আমি সেদিকে তাকিয়ে আছি।

–

লোকটার কাশি উঠে গেলো। কাশতে কাশতে লোকটা বসা থাকে উঠে পড়লো। এই মূহুর্তে উনার সিগারেট খাওয়ার আর সম্ভবত ইচ্ছে নেই।লোকটা সিগারেটের টুকরোটিকে নিচে ফেলে পা দিয়ে একটি ঘষা দিলো।অমনি সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরোটি থেঁতলে গেলো।

সাজিদের দিকে ফিরে লোকটা বললো,- ‘তাহলে এখন বিশ্বাস করিস যে স্রষ্টা বলে কেউ আছে?’

সাজিদ হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লো।

– ‘স্রষ্টা এই বিশ্বলোক, বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছে বলে বিশ্বাস করিস তো?’

আবারো সাজিদ হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লো।

এবার লোকটা একটা অদ্ভুত ভয়ঙ্কররকম হাসি দিলো।এই হাসি এতটাই বিদঘুটে ছিলো যে আমার গা ছমছম করতে লাগলো।

লোকটি বললো,- ‘তাহলে বল দেখি, স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করলো?’

এই প্রশ্নটি করে লোকটি আবার সেই বিদঘুটে হাসিটা হাসলো। গা ছমছমে।

সাজিদ বললো,- ‘স্যার, বাই ডেফিনিশন, স্রষ্টার কোন সৃষ্টিকর্তা থাকতে পারে না।যদি বলি X-ই সৃষ্টিকর্তাকে সৃষ্টি করেছে, তৎক্ষণাৎ আবার প্রশ্ন উঠবে, তাহলে X- এর সৃষ্টিকর্তা কে? যদি বলি Y, তাহলে আবার প্রশ্ন উঠবে, Y এর সৃষ্টিকর্তা কে? এভাবেই চলতে থাকবে। কোন সমাধানে যাওয়া যাবে না।’

লোকটি বললো,- ‘সমাধান আছে।’

– ‘কি সেটা?’

– ‘মেনে নেওয়া যে- স্রষ্টা নাই,ব্যস!’- এইটুকু বলে লোকটি আবার হাসি দিলো। হা হা হা হা।

সাজিদ আপত্তি জানালো। বললো,- ‘আপনি ভুল, স্যার।’

লোকটি চোখ কপালে তুলে বললো,- ‘কি? আমি? আমি ভুল?’

– ‘জ্বি স্যার।’

– ‘তাহলে বল দেখি, স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করলো? উত্তর দে।দেখি কতো বড় জ্ঞানের জাহাজ হয়েছিস তুই।’

আমি বুঝতে পারলাম এই লোক সাজিদকে যুক্তির গ্যাড়াকলে ফেলার চেষ্টা করছে।

সাজিদ বললো,- ‘স্যার, গত শতাব্দীতেও বিজ্ঞানিরা ভাবতেন, এই মহাবিশ্ব অনন্তকাল ধরে আছে।মানে, এটার কোন শুরু নেই।তারা আরো ভাবতো, এটার কোন শেষও নাই।তাই তারা বলতো- যেহেতু এটার শুরু-শেষ কিছুই নাই, সুতরাং, এটার জন্য একটা সৃষ্টিকর্তারও দরকার নাই।

কিন্তু থার্মোডাইনামিক্সের তাপ ও গতির সূত্রগুলো আবিষ্কার হওয়ার পর এই ধারনা তো পুরোপুরিভাবে ভ্যানিশ হয়ই,সাথে পদার্থবিজ্ঞানেও ঘটে যায় একটা বিপ্লব।থার্মোডাইনামিক্সের তাপ ও গতির দ্বিতীয় সূত্র বলছে- ‘এই মহাবিশ্ব ক্রমাগত ও নিরবচ্ছিন্ন উত্তাপ অস্তিত্ব থেকে পর্যায়ক্রমে উত্তাপহীন অস্তিত্বের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে।কিন্তু এই সূত্রটাকে উল্টোথেকে প্রয়োগ কখনোই সম্ভব নয়।অর্থাৎ, কম উত্তাপ অস্তিত্ব থেকে এটাকে বেশি উত্তাপ অস্তিত্বের দিকে নিয়ে যাওয়া আদৌ সম্ভব নয়।এই ধারনা থেকে প্রমান হয়, মহাবিশ্ব চিরন্তন নয়।এটা অনন্তকাল ধরে এভাবে নেই।এটার একটা নির্দিষ্ট শুরু আছে।থার্মোডাইনামিক্সের সূত্র আরো বলে, – এভাবে চলতে চলতে একসময় মহাবিশ্বের সকল শক্তি নিঃশেষ হয়ে যাবে।আর মহাবিশ্ব ধ্বংস হবে।’

লোকটি বললো,- ‘উফফফফ! আসছেন বৈজ্ঞানিক লম্পু। সহজ করে বল ব্যাটা।’

সাজিদ বললো,- ‘স্যার, একটা গরম কফির কাপ টেবিলে রাখা হলে, সেটা সময়ের সাথে সাথে আস্তে আস্তে তাপ হারাতে হারাতে ঠান্ডা হতেই থাকবে।কিন্তু সেটা টেবিলে রাখার পর যে পরিমাণ গরম ছিলো, সময়ের সাথে সাথে সেটা আরো বেশি গরম হয়ে উঠবে- এটা অসম্ভব।এটা কেবল ঠান্ডাই হতে থাকবে। একটা পর্যায়ে গিয়ে দেখা যাবে, কফির কাপটা সমস্ত তাপ হারিয়ে একেবারে ঠান্ডা হয়ে গেছে। এটাই হচ্ছে থার্মোডাইনামিক্সের সূত্র।’

– ‘হুম,তো?’

– ‘এর থেকে প্রমান হয়, মহাবিশ্বের একটা শুরু আছে। মহাবিশ্বের যে একটা শুরু আছে- তারও প্রমান বিজ্ঞানিরা পেয়েছে। মহাবিশ্ব সৃষ্টি তত্বের উপর এ যাবৎ যতোগুলো থিওরি বিজ্ঞানিমহলে এসেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য, প্রমানের দিক থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী থিওরি হলো- বিগ ব্যাং থিওরি।বিগ ব্যাং থিওরি বলছে- মহাবিশ্বের জন্ম হয়েছে একটি বিস্ফোরণের ফলে।তাহলে স্যার, এটা এখন নিশ্চিত যে, মহাবিশ্বের একটি শুরু আছে।’

লোকটা হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লো।

সাজিদ আবার বলতে শুরু করলো,- স্যার, আমরা সহজ সমীকরণ পদ্ধতিতে দেখবো স্রষ্টাকে সৃষ্টির প্রয়োজন আছে কিনা, মানে স্রষ্টার সৃষ্টিকর্তা থাকতে পারে কিনা।

সকল সৃষ্টির একটা নির্দিষ্ট শুরু আছে এবং শেষ আছে………… ধরি, এটা সমীকরণ ১।

মহাবিশ্ব একটি সৃষ্টি……….. এটা সমীকরণ ২।

এখন সমীকরণ ১ আর ২ থেকে পাই-

সকল সৃষ্টির শুরু এবং শেষ আছে।মহাবিশ্ব একটি সৃষ্টি,তাই এটারও একটা শুরু এবং শেষ আছে।

তাহলে, আমরা দেখলাম- উপরের দুটি শর্ত পরস্পর মিলে গেলো,এবং তাতে থার্মোডাইনামিক্সের তাপ ও গতির সূত্রের কোন ব্যাঘাত ঘটে নি।

– ‘হু’

– ‘আমার তৃতীয় সমীকরণ হচ্ছে- ‘স্রষ্টা সবকিছু সৃষ্টি করেছেন।’

তাহলে খেয়াল করুন, আমার প্রথম শর্তের সাথে কিন্তু তৃতীয় শর্ত ম্যাচ হচ্ছে না।

আমার প্রথম শর্ত ছিলো- সকল সৃষ্টির শুরু আর শেষ আছে।কিন্তু তৃতীয় শর্তে কথা বলছি স্রষ্টা নিয়ে।তিনি সৃষ্টি নন, তিনি স্রষ্টা।তাই এখানে প্রথম শর্ত খাটে না।সাথে, তাপ ও গতির সূত্রটিও এখানে আর খাটছে না।তার মানে, স্রষ্টার শুরুও নেই, শেষও নাই।অর্থাৎ, তাকে নতুন করে সৃষ্টিরও প্রয়োজন নাই।তার মানে স্রষ্টার আরেকজন স্রষ্টা থাকারও প্রয়োজন নাই। তিনি অনাদি, অনন্ত।’

এইটুকু বলে সাজিদ থামলো। হুমায়ুন আজাদ নামের লোকটি কপালের ভাঁজ দীর্ঘ করে বললেন,- ‘কি ভংচং বুঝালি এগুলা? কিসব সমীকরণ টমীকরণ? এসব কি? সোজা সাপ্টা বল।আমাকে অঙ্ক শিখাচ্ছিস? Laws Of Causality সম্পর্কে ধারনা আছে? Laws Of Causality মতে, সবকিছুর পেছনে একটা Cause বা কারণ থাকে। সেই সূত্র মতে, স্রষ্টার পেছনেও একটা কারণ থাকতে হবে।’

সাজিদ বললো,- ‘স্যার, উত্তেজিত হবেন না প্লিজ।আমি আপনাকে অঙ্ক শিখাতে যাবো কোন সাহসে? আমি শুধু আমার মতো ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করেছি।’

– ‘কচু করেছিস তুই।Laws Of Causality দিয়ে ব্যাখ্যা কর। ‘- লোকটা উচ্চস্বরে বললো।

– ‘স্যার, Laws Of Causality বলবৎ হয় তখনই, যখন থেকে Time, Space এবং Matter জন্ম লাভ করে, ঠিক না? কারন, আইনষ্টাইনের থিওরি অফ রিলেটিভিটিও স্বীকার করে যে- Time জিনিসটা নিজেই Space আর Matter এর সাথে কানেক্টেড।Cause এর ধারনা তখনই আসবে, যখন Time-Space-Matter এই ব্যাপারগুলা তৈরি হবে।তাহলে, যিনিই এই Time-Space-Matter এর স্রষ্টা, তাকে কি করে আমরা Time-Space-Matter এর বাটখারাতে বসিয়ে Laws Of Causality দিয়ে বিচার করবো,স্যার? এটা তো লজিক বিরুদ্ধ, বিজ্ঞান বিরুদ্ধ।’

লোকটা চুপ করে আছে। কিছু হয়তো বলতে যাচ্ছিলো। এরমধ্যেই আবার সাজিদ বললো,- ‘স্যার, আপনি Laws Of Causality’র যে সংজ্ঞা দিয়েছেন, সেটা ভুল।’

লোকটা আবার রেগে গেলো। রেগেমেগে অগ্নিশর্মা হয়ে বললো,- ‘এই ছোকরা! আমি ভুল বলেছি মানে কি? তুই কি বলতে চাস আমি বিজ্ঞান বুঝি না?’

সাজিদ বললো,- ‘না না স্যার, একদম তা বলিনি। আমার ভুল হয়েছে।আসলে, বলা উচিত ছিলো যে- Laws Of Causality’র সংজ্ঞা বলতে গিয়ে আপনি ছোট্ট একটা জিনিস মিস করেছেন।’

লোকটার চেহারা এবার একটু স্বাভাবিক হলো।বললো,- ‘কি মিস করেছি?’

– ‘আপনি বলেছেন, Laws Of Causality মতে, সবকিছুরই একটি Cause থাকে।আসলে এটা স্যার সেরকম নয়। Laws Of Causality হচ্ছে- Everything which has a beginning has a cause.. অর্থাৎ, এমন সবকিছু, যেগুলোর একটা নির্দিষ্ট শুরু আছে- কেবল তাদেরই Cause থাকে।স্রষ্টার কোন শুরু নেই, তাই স্রষ্টাকে Laws Of Causality দিয়ে মাপাটা যুক্তি এবং বিজ্ঞান বিরুদ্ধ।’

লোকটার মুখ কিছুটা গম্ভীর হয়ে গেলো।বললো,- ‘তুই কি ভেবেছিস, এরকম ভারি ভারি কিছু শব্দ ব্যবহার করে কথা বললেই আমি তোর যুক্তি মেনে নিবো? অসম্ভব।’

সাজিদ এবার মুচকি হাসলো। হেসে বললো,- ‘স্যার, আপনার হাতে একটি বই দেখছি। অইটা কি বই?’

– ‘ এটা আমার লেখা বই- ‘আমার অবিশ্বাস।’

– ‘স্যার, অইটা আমাকে দিবেন একটু?’

– ‘এই নে,ধর।’

সাজিদ বইটা হাতে নিয়ে উল্টালো। উল্টাতে উল্টাতে বললো,- ‘স্যার, এই বইয়ের কোন লাইনে আপনি আছেন?’

লোকটা ভুরু কুঁচকে বললো,- ‘মানে?’

– ‘বলছি, এই বইয়ের কোন অধ্যায়ের, কোন পৃষ্টায়, কোন লাইনে আপনি আছেন?’

– ‘তুই অদ্ভুত কথা বলছিস। আমি বইয়ে থাকবো কেনো?’

– ‘কেনো থাকবেন না? আপনি এর স্রষ্টা না?’

– ‘হ্যাঁ।’

– ‘এই বইটা কালি আর কাগজ দিয়ে তৈরি। আপনিও কি কালি আর কাগজ দিয়ে তৈরি স্যার?’

– ‘খুবই ষ্টুপিডিটি টাইপ প্রশ্ন। আমি এই বইয়ের স্রষ্টা। এই বই তৈরির সংজ্ঞা দিয়ে কি আমাকে ব্যাখ্যা করা যাবে?’

সাজিদ আবার হেসে দিলো।বললো,- ‘না স্যার।এই বই তৈরির যে সংজ্ঞা, সে সংজ্ঞা দিয়ে মোটেও আপনাকে ব্যাখ্যা করা যাবে না। ঠিক সেভাবে, এই মহাবিশ্ব যিনি তৈরি করেছেন, তাকেও তার সৃষ্টির Time-Space-Matter-Cause এসব দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাবে না।

আপনি কালি,কলম বা কাগজের তৈরি নন, তার উর্ধ্বে।কিন্তু আপনি Time-Space-Matter-Cause এর উর্ধ্বে নন।আপনাকে এগুলো দিয়ে ব্যাখ্যা করাই যায়।কিন্তু সৃষ্টিকর্তা হচ্ছেন এমন একজন,যিনি নিজেই Time-Space-Matter-Cause এর সৃষ্টিকর্তা।তাই তাকে Time-Space-Matter-Cause দিয়ে পরিমাপ করা যাবে না।অর্থাৎ, তিনি এসবের উর্ধ্বে।অর্থাৎ, তার কোন Time-Space-Matter-Cause নাই।অর্থাৎ, তার কোন শুরু-শেষ নাই।অর্থাৎ, তার কোন সৃষ্টিকর্তা নাই।’

লোকটা উঠে দাঁড়ালো।উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বললো- ‘ভালো ব্রেইনওয়াশড! ভালো ব্রেইনওয়াশড! আমরা কি এমন তরুণ প্রজন্ম চেয়েছিলাম? হায়! আমরা কি এমন তরুণ প্রজন্ম চেয়েছিলাম?’

এটা বলতে বলতে লোকটা হাঁটা ধরলো। দেখতে দেখতেই উনি ষ্টেশানে মানুষের ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেলেন।

–

ঠিক সেই মূহুর্তেই আমার ঘুম ভেঙে গেলো। ঘুম ভাঙার পর আমি কিছুক্ষণ ঝিম মেরে ছিলাম।ঘড়িতে সময় দেখলাম।রাত দেড়টা বাজে।সাজিদের বিছানার দিকে তাকালাম।দেখলাম, সে বিছানায় শুয়ে শুয়ে বই পড়ছে।আমি উঠে তার কাছে গেলাম। গিয়ে দেখলাম সে যে বইটা পড়ছে, সেটার নাম- ‘আমার অবিশ্বাস। বইয়ের লেখক- হুমায়ুন আজাদ।

সাজিদ বই থেকে মুখ তুলে আমার দিকে তাকালো।তার ঠোঁটের কোণায় একটি অদ্ভুত হাসি।

আমি বিরাট একটা শক খেলাম। নাহ! এটা হতে পারে না। স্বপ্নের উপর কারো হাত নেই- আমি বিড় বিড় করে বলতে লাগলাম।

লেখক:  লেখক ও তুলনামুলক ধর্মতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ

সম্পর্কিত সংবাদ

আজ ইমাম হাসান আল বান্নার ৭৫ তম শাহদাতবার্ষিকী
ইসলাম

আজ ইমাম হাসান আল বান্নার ৭৫ তম শাহদাতবার্ষিকী

ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪
আল্লামা সাঈদী রহ.-কে ৪ বার গুলি করে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছিল
ইসলাম

আল্লামা সাঈদী রহ.-কে ৪ বার গুলি করে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছিল

সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩
অনৈসলামিক কর্মকান্ড বন্ধে আল্লামা সাঈদীর ভূমিকা
ইসলাম

অনৈসলামিক কর্মকান্ড বন্ধে আল্লামা সাঈদীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ২, ২০২৩

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • বিতর্কিত আজিজের সাক্ষাৎকার নিয়ে লে. কর্নেল মুস্তাফিজের বিশ্লেষণ

    বিতর্কিত আজিজের সাক্ষাৎকার নিয়ে লে. কর্নেল মুস্তাফিজের বিশ্লেষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রক্তাক্ত ২৮ ফেব্রুয়ারি: নির্বিচার গণহত্যার দিন

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির যত মামলা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • সেঞ্চুরিয়ান মানিক ও জাবির সেই সময়ের ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫
ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫
নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারার প্রবর্তন অপরিহার্য

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারার প্রবর্তন অপরিহার্য

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
হাওর ধ্বংস করে আবদুল হামিদের প্রমোদ সড়ক

হাওর ধ্বংস করে আবদুল হামিদের প্রমোদ সড়ক

মার্চ ২০, ২০২৫
  • Privacy Policy

© Analysis BD

No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে

© Analysis BD