সোমবার, অক্টোবর ২০, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home ইসলাম

অনৈসলামিক কর্মকান্ড বন্ধে আল্লামা সাঈদীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ২, ২০২৩
in ইসলাম, জাতীয়
Share on FacebookShare on Twitter

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশকে ও সামগ্রিকভাবে সারা পৃথিবীতে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াতের নায়েবে আমীর হিসেবে আল্লামা সাঈদী রহ.-এর সারাজীবনের কার্যক্রম এর ব্যতিক্রম কিছু ছিল না। আল্লামা সাঈদীর বড় যোগ্যতা ছিল তিনি মানুষকে দাওয়াত দিতে পারতেন সহজ ভাষায়। এর বাইরে বাংলাদেশে দুইবারের এমপি হিসেবে তিনি রাষ্ট্রীয় সুবিধা ব্যবহার করে অনৈসলামিক কর্মকান্ড বন্ধে জোরালো ভূমিকা রেখেছেন। এর মধ্যে কিছু কাজে তিনি সফল হয়েছেন। সেগুলো উল্লেখ করার প্রয়োজন মনে করছি।

১.
বাংলাদেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ। এ দেশের রাজধানী ঢাকা মসজিদের শহর হিসেবে পরিচিত। এ জাতি নিদ্রা থেকে জাগ্রত হয় তাওহীদের ধ্বনি শুনে। কিন্তু মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে ৮০’র দশকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র মূর্তি বানানো হচ্ছিলো দেদারছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জারি থাকলেও মুর্তিবিরোধী আন্দোলন সফল হয়নি।

১৯৮৩ সালে রাজধানী ঢাকার জিপিওর সামনে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি নির্মাণ করা হয়েছিল। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এই ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে তাওহীদী জনতাকে সাথে নিয়ে প্রবল আন্দোলন গড়ে তোলেন বাইতুল মোকাররমের সন্নিকটে হওয়ায় এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষ যোগ দিয়েছিল। আল্লামা সাঈদী রহ. এর প্রতিবাদে জনতার বিশাল মিছিল নিয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্টে হুসেইন মোহাম্মাদ এরশাদের কাছে গিয়ে এই মূর্তি অপসারণের জন্য স্মারকলিপি পেশ করেন। কুরআনের পাখি আল্লামা সাঈদীর এই প্রতিবাদী ভূমিকার কারনে তৎকালীন সরকার সেই রাতেই অভিশপ্ত মূর্তিটি অপসারণের নির্দেশ দিতে বাধ্য হয়েছিল।

২.
১৯৮৫ সনের ২০ ডিসেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে সাফ গেমস উপলক্ষে নির্মাণ করা হয়েছিলো চব্বিশ ঘন্টা প্রজ্জলিত থাকার জন্য ‘মশাল টাওয়ার’। শিখা চিরন্তন তথা মশাল টাওয়ারের সিস্টেম অগ্নি পূজারকদের সংস্কৃতি। আগুন পূজার বিরুদ্ধে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী তাওহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে দেশে প্রবল গণ—আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন এবং মশাল টাওয়ার ভেঙ্গে ফেলার জন্য সরকারকে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। তদানীন্তন সরকার আল্লামা সাঈদীর সে আন্দোলনে ভীত হয়ে এক সপ্তাহের মধ্যেই মশাল টাওয়ার ভেঙে ফেলতে বাধ্য হয়েছিল।

৩.
১৯৮২ সালের ৫ নভেম্বর হোটেল সোনারগাঁও—এ এক জংলী রাতের আয়োজন করা হবে বলে পত্রিকার মাধ্যমে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল— যার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘হ্যালোইন নাইট’। হ্যালোইন নাইটে মদপান, নারী—পুরুষ জোড়ায় জোড়ায় নাচ, যেনা—ব্যভিচার ইত্যাদি হওয়ার কথা ছিল। তথাকথিত এই উৎসবের বিরুদ্ধে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আদালতে মামলা দায়ের করার ফলে আদালত কথিত হ্যালোইন নাইটের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কোরআনের পাখি আল্লামা সাঈদীর এই ঈমানদীপ্ত ভূমিকার কারনে হ্যালোইন নাইটের নামে হোটেল সোনারগাঁও—এর সকল অশ্লীল আয়োজন বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো।

৪.
ইসলাম অশ্লীল গান বাজনা হারাম ঘোষণা করেছে। ইসলামের বিধানের বিরুদ্ধে বামপন্থীরা একটি গান রচনা করে, ‘কোন কিতাবে লেখা আছে, হারাম বাজনা গান’। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রহ. বামপন্থীদের ইসলামবিরোধী সুদূরপ্রসারী এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আদালতে রীট মামলা দায়ের করেন। আল্লামা সাঈদীর রীটের শুনানী শেষে আদালত ইসলামবিরোধী ঐ গান নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলো।

৫.
১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত সপ্তম শ্রেণির বাংলা বইয়ে শাহেদ আলী রচিত ‘জিবরাইলের ডানা’ শীর্ষক একটি ইসলাম বিরোধী ও শিরকমূলক গল্প সংযোজন করা হয়। বিশ্বনন্দিত মুফাসসির আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেন এবং গল্পটি পাঠ্যপুস্তক থেকে বাতিল করার আবেদন জানিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। আল্লামা সাঈদীর মামলার কারনে মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড অবশেষে সপ্তম শ্রেণির বাংলা বই থেকে গল্পটি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিলো।

৬.
১৯৮৯ সালের মে মাসে বিতর্কিত লেখক সালমান রুশদী ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ গ্রন্থ রচনা করলে আল্লামা সাঈদী এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। বিতর্কিত লেখক সালমান রুশদীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রহ. এর নেতৃত্বে মাসিক মদীনা সম্পাদক মাওলানা মহিউদ্দিন খান রহ., শাইখুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক রহ., মওলানা কামালউদ্দিন জাফরী হাফি., মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা আবুল কাশেম মোহাম্মদ সিফাতউল্লাহ রহ.সহ দেশবরেণ্য আলেমগণ দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ হরতালের ডাক দেন।

আল্লামা সাঈদীর নেতৃত্বে আলেম সমাজের ডাকে সেদিন বাংলাদেশে অভূতপূর্ব এক হরতাল পালিত হয়। হরতাল চলাকালে গোটা বাংলাদেশ বিক্ষোভ মিছিলের দেশে পরিণত হয়েছিলো। তরুণ—যুবকরা কাফনের কাপড় পরিধান কেও সেদিন রাস্তায় নেমে এসেছিলো।

৭.
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের কার্যপ্রনালী বিধির ২৬৭(২) অনুযায়ী এ দেশে এক সময় সংসদে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় স্পীকারকে সম্মান জানিয়ে সংসদ সদস্যদের মাথা ঝুঁকানোর বিধি ছিল। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রহ. ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সংসদের প্রথম অধিবেশনের দিনেই মাথা ঝুঁকানোর এমন শিরকী বিধির বিরুদ্ধে সংসদে দাঁড়িয়ে এর তীব্র প্রতিবাদ করেন।

তিনি সংসদে ফ্লোর নিয়ে তৎকালীন স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৮ম ধারায় বলা হয়েছে, সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস হবে আমাদের যাবতীয় কার্যাবলীর ভিত্তি। সুতরাং সংসদের ২৬৭ (২) বিধি সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। মাথা ঝুঁকানোর এই শিরকী বিধি চালু থাকলে সংসদের প্রত্যেক সদস্যকে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। সুতরাং, সংসদের এই বিধি অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

এরপর আল্লামা সাঈদী রহ. সংসদে এই বিধি বাতিলের জন্য নোটিশ প্রদান করেন। সংসদে দীর্ঘ তর্ক—বিতর্ক শেষে অবশেষে সংসদে মাথা ঝুঁকিয়ে প্রবেশ ও বের হওয়ার শিরকী এই বিধি কোরআনের পাখি আল্লামা সাঈদীর কারনেই বাতিল করা হয়েছিল।

৮.
দ্বিতীয় দফা এমপি থাকাকালীন সময়ে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ৮ম জাতীয় সংসদের শেষের দিকে ২০০৬ সালের ২৯ আগষ্ট তারিখে জাতীয় সংসদে ‘কওমী সনদের স্বীকৃতি’ এবং কওমী মাদরাসার সমন্বয়, উন্নয়ন ও পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণের জন্য ‘কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বাংলাদেশ’ নামে একটি স্থায়ী প্রতিষ্ঠান গঠনের বিষয়ে জাতীয় সংসদে বিল উত্থাপন করেছিলেন।

জাতীয় সংসদে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী উত্থাপিত এই বিলের পরিপ্রেক্ষিতেই মূলতঃ পরবর্তীতে দাওরায়ে হাদীসকে ইসলামিক ষ্টাডিজ এবং এ্যারাবিক লিটারেচারে গ্রাজুয়েশান সমমান এবং এই ডিগ্রীধারীদের সরকারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ কেও দেয়া সংক্রান্ত একটি নোটিফিকেশন জারি করেছিল তৎকালীন সরকার। যেটা পরবর্তীতে ইয়াজউদ্দিন আহমেদের কেয়ারটেকার সরকারের সময়ে ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর, বুধবার, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়েছিল। প্রজ্ঞাপন নং: শিম/শা:১৬/বিবিধ—১১(৯)/২০০৩(অংশ)/১০৩১।

সরকারী স্বীকৃতি প্রাপ্তির পর কওমী শিক্ষা ব্যবস্থার স্বকীয়তা থাকা না থাকার বিতর্কের কারণে এবং সংশ্লিষ্ট আলেমগণের অনৈক্যের কারনে পরবর্তীতে এই বিলের ফলাফল আর কওমী শিক্ষা ব্যবস্থার পক্ষে আনা সম্ভব হয়নি। সরকারের মেয়াদ তখন ছিল প্রায় শেষের দিকে। তাই গেজেট প্রকাশের পরও এই স্বীকৃতির কার্যকারিতা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

অথচ, ২০২০ সালে কওমী সনদের স্বীকৃতির পুরো কৃতিত্বটা আওয়ামী সরকার তাদের বলে জোর গলায় বলে বেড়িয়েছেন। তারা একটি জ্বলন্ত সত্যকে মিথ্যা বলে প্রমানের ব্যার্থ চেষ্টা করেছেন এবং এর পিছনের ইতিহাসটাকে চরমভাবে বিকৃত করতে সচেষ্ট থেকেছেন। অথচ মূল সত্য হলো, বিশ্বাবখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীই জাতীয় সংসদে এই বিলের প্রথম উপস্থাপক। কওমী শিক্ষা ব্যবস্থার সরকারি স্বীকৃতি আদায়ের অপরিহার্যতার দায়বদ্ধতা ও কওমী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি ভালোবাসা ও সম্মানের জায়গা থেকেই আল্লামা সাঈদী এ দাবিটিকে যৌক্তিক এবং সময়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে করে জাতীয় সংসদে এই বিল উত্থাপন করেছিলেন এবং এ সংক্রান্ত গেজেটও প্রকাশিত হয়েছিল।

এছাড়া আল্লামা সাঈদী রহ. ইসলামী শরিয়তে সরাসরি নিষিদ্ধ বিষয় যেমন মদ, জুয়া ও সুদের বিরুদ্ধে সংসদে করেকবার বিল উত্থাপন করেন। কিন্তু সেগুলো পাশ করাতে ব্যর্থ হন। শিখা চিরন্তনের বিরুদ্ধে কয়েকবার আন্দোলন গড়ে তুলেন। আল্লামা সাঈদী সারাজীবন বিদআত, কুসংস্কার, শিরকের বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন। এজন্যই তিনি ভারতীয় দোসরদের চক্ষুশুলে পরিণত হয়েছেন।

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
কলাম

কোটা, কোটা আন্দোলন ও এর ইতিহাস

জুলাই ১৫, ২০২৪
Home Post

আওয়ামী আইনে বদলিই দুর্নীতির শাস্তি!

জুলাই ৮, ২০২৪

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • অসুরের মুখে দাঁড়ি-টুপি : মুসলিম বিদ্বেষে সীমা ছাড়াল ভারত

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • বিতর্কিত আজিজের সাক্ষাৎকার নিয়ে লে. কর্নেল মুস্তাফিজের বিশ্লেষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD