চীন নৌ শক্তিকে এক ধাপ এগিয়ে নেবার ক্ষেত্রে বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করতে যাচ্ছে। চীন তার সামুদ্রিক সামর্থ্য বজায় রাখার জন্য আরো বিমানবাহী রণতরী নির্মাণের পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে গ্লোবাল টাইমস। ভারতের গণমাধ্যম এটা দিল্লির জন্য একটি বড় হুমকি হতে পারে বলে উল্লেখ করেছে ।
একজন চীনা নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে চীনের প্রভাবশালী সরকারি পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস বলেছে যে, চীন ভবিষ্যতে অন্তত ছয় বিমানবাহী রণতরীর অধিকারী হতে পারে।
একই সাথে চীন সারা বিশ্বে আরও ১০টি নৌঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের মতো, যাদের সাথে ঘনিষ্ট অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক রয়েছে সেসব দেশে এই সব নৌ ঘাঁটি করা হবে ।এসব ঘাঁটির জন্য এই ছয় বিমান বাহী রণতরীর পরিকল্পনা করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতের ইকনমিক টাইমস পত্রিকা উল্লেখ করেছে, চীনের সাম্প্রতিক আধুনিকায়নের পরিকল্পনা ভারতবর্ষের জন্য একটি সমস্যা তৈরি করতে পারে। ভারতের পেছনের এলাকা ভারত মহাসাগরে চীনা নৌবাহিনীর তৎপরতা ক্রমেই বৃদ্ধি করছে। এর আগেই চীনা পারমাণবিক সাবমেরিন করাচিতে মোতায়েন করা হয়েছে।
চীনের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও নিরস্ত্রীকরণ সংস্থার একজন ঊর্ধ্বতন উপদেষ্টা জিউ গুয়াংয়ু গ্লোবাল টাইমসকে বলেছেন, “দীর্ঘ মেয়াদে চীনের নিজস্ব যুদ্ধ টীমে কমপক্ষে ৬টি বিমান বাহী রণতরী সংযোজন এর নিজস্ব রণতরী ব্যাপক প্রয়োজন পূরণ করতে যাচ্ছে। এ যুদ্ধ টীমে ছয়টি বিমানবাহী রণতরীর পাশাপাশি গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা চালিত ডেস্ট্রয়ার সম্মৃদ্ধ সামুদ্রিক বাহিনী এবং এটাকিং সাবমেরিন থাকবে। “চীন শীঘ্রই তার দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী, টাইপ ০০এ-১ নির্মাণ সম্পন্ন করবে বলে চীনা সেন্ট্রাল টেলিভিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে। এই দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরীটি পিএলএ নৌবাহিনী ২০২০ সালেই ব্যবহার শুরু করবে। এছাড়া চীন সাংহাইয়ে তৃতীয় বিমানবাহী রণতরী, টাইপ ০০২ তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
জিউ বলেন, চীন ছয়টি বিমানবাহী রণতরীর জন্য আরো ১০টি ঘাঁটি নির্মাণ করবে। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন যে, চীন পাকিস্তানের মতো বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলির পাশে এসব ঘাঁটি নির্মাণ করতে পারে। তবে এটি নির্ভর করবে এসব দেশ ঘাঁটি নির্মাণের ব্যপারে চীনকে সহযোগিতা করতে চায় কিনা তার উপর।
পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) দৈনিকের রিপোর্ট অনুযায়ী, চীন প্রথম এবং একমাত্র বিমানবাহী রণতরী লিয়াওনিংয়ের যুদ্ধক্ষেত্রের দক্ষতা আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগও নিয়েছে। চীন তার নিজস্ব ক্যারিয়ার-বাহিত যোদ্ধা পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এটি করছে বিশ্বের এমন সীমিত কয়েকটি দেশের মধ্যে চীন একটি।
লিয়াওনিং একটি পুরানো রাশিয়ান মডেল থেকে নতুন করে ডিজাইন করা হয়েছে। এটি সেপ্টেম্বর ২০১২ সালে চীনা নৌবাহিনীতে কমিশন করা হয়।
দক্ষিণ চীন সাগরের সামুদ্রিক বিরোধের কারণে একটি শক্তিশালী নৌবাহিনীর প্রয়োজন অনুভব করে চীন।
ইকোনমিক টাইমসে বলা হয়, ভারতের বিমানবাহী রণতরী পরিচালনার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের দক্ষতা থাকলেও তার একমাত্র বিমানবাহী রণতরী বিক্রমাদিত্যের জন্য শত্রু সাবমেরিনের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য আরো জাহাজ, সাবমেরিন এবং হেলিকপ্টার প্রয়োজন। এছাড়া ভবিষ্যতের জন্য অন্তত আরো একটি রণতরীও দরকার।
ভারতের প্রথম নিজস্ব বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রমাদিত্যের জন্য এই ধরনের হেলিকপ্টারের আরো বেশি প্রয়োজন বলে পত্রিকাটি উল্লেখ করে। এটি বিশাখাপট্টমে ২০২৩ সালের মধ্যে চীনকে মোকাবেলা করতে মোতায়েন করা হতে পারে।
সূত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর
Discussion about this post