রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ইফতার, ঢাকায় জাতিসংঘের নতুন ভবন উদ্বোধন এবং দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকসহ নানা কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে শেষ হলো জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ঢাকা সফর। তার এই সফর ছিল অত্যন্ত কর্মব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ।
গত ১৩ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ‘রামাদান সলিডারিটি ভিজিট’ শীর্ষক চারদিনের এ সফরের প্রথম দিনে মুসলিমদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে রোজা রাখেন তিনি। এরপর টানা দুই দিন বাংলাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। সফরের মূল লক্ষ্য ছিল রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ, বাংলাদেশে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ এবং জাতিসংঘের সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা। তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন এবং সেখানকার শরণার্থীদের সাথে ‘সলিডারিটি ইফতার’ করেন। পরদিন শনিবার তিনি ঢাকায় জাতিসংঘের নতুন ভবন উদ্বোধন করেন এবং দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বিদায়ের আগে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশকে নিয়ে নিজের প্রত্যাশার কথা জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকার যে সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে, সেখানে জাতিসংঘ সহযোগী হতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমি নিশ্চিত করতে চাই যে, শান্তি বজায় রাখতে জাতিসংঘকে বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের এক নম্বর সহযোগী হিসেবে গণ্য করতে পারেন আপনারা। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে একটি ন্যায্য ও টেকসই ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে জাতিসংঘ সহযোগিতা করবে।
তার এ সফরে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। একই সাথে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের মানবেতর জীবনযাপন ও তাদের জন্য জাতিসংঘের অর্থসহায়তা কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আতিথেয়তাকারী বাংলাদেশি জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশের জন্যই আমি বাংলাদেশ সফরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী মাস থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমে গেলে মানবিক সংকট আরও তীব্র হবে। জাতিসংঘ মহাসচিবের মতে, রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান হলো তাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন। তবে, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে এটি সম্ভব নয় বলেও তিনি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং আরাকান আর্মির মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছে। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে এবং সম্মানজনকভাবে প্রত্যাবর্তন অত্যন্ত কঠিন হবে, তা স্পষ্ট।” তিনি মনে করেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আরাকান আর্মিকেও আলোচনায় যুক্ত করা উচিত।
সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য বাংলাদেশকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করার প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, মিয়ানমারের ভেতরে মানবিক সহায়তা জোরদার করা জরুরি, যাতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়। যদি পরিস্থিতি অনুকূল হয়, বাংলাদেশ থেকে মানবিক সহায়তা চ্যানেল চালু করাও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তবে তিনি যোগ করেন, বাংলাদেশকে চ্যানেল বা করিডোর হিসেবে ব্যবহার করতে যথাযথ অনুমোদন ও সহযোগিতা প্রয়োজন।
এছাড়া, জাতিসংঘ মিয়ানমারের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেবে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে মি. গুতেরেস বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলোর সক্রিয় ভূমিকা ও চাপ প্রয়োগ করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে সহিংসতা বন্ধ করে একটি সংলাপ প্রক্রিয়া গড়ে তোলা যায়।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তার বৈঠকে নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যু গুরুত্ব পায়। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “সংস্কার অবশ্যই করতে হবে, কিন্তু তা দ্রুত শেষ করে নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে বলেছি আমরা।” জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, “আমরা সংস্কার, সুষ্ঠু নির্বাচন ও জাতীয় ঐক্য নিয়ে কথা বলেছি।”
সংস্কার ইস্যুতে জাতিসংঘ মহাসচিবের ইতিবাচক মনোভাব তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, “সংস্কার বিষয়ে যে যে সহযোগিতা প্রয়োজন, তার সবকিছুই করবেন জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টাকে সহায়তা করার জন্য এবং বাংলাদেশ ও তার জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।”
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, “বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে রয়েছে, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত আপনাদের ন্যায়সঙ্গত, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথে সমর্থন জোগানো।” তিনি আশ্বাস দেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নকে সমর্থন করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে।
বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফরকে “ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ” হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এই সফরে জাতিসংঘ মহাসচিব উপলব্ধি করেছেন যে, রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে কতটা মরিয়া। তারা তাদের পরিচয়, অধিকার ও সম্মানজনক জীবন উপভোগ করতে চায়।” জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফর বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে পারে। বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের সম্পর্ক আরও গভীর ও শক্তিশালী হওয়ার আশা করা যায়। রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদী সমাধান ও দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
‘এ সফর মিথ্যা প্রচার ও অস্থিতিশীল করার চেষ্টাকে প্রতিহত করবে’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সফর বাংলাদেশবিরোধী যেকোনো ধরনের ‘মিথ্যা প্রচার ও অস্থিতিশীল করার চেষ্টাকে’ প্রতিহত করবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশবিরোধী ভুয়া তথ্য প্রচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর এই সফর যেকোনো ধরনের মিথ্যা প্রচার ও অস্থিতিশীল করার চেষ্টাকে প্রতিহত করবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মহাসচিব আরও প্রত্যক্ষ করেছেন যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সময় কী ধরনের উত্তরাধিকার পেয়েছে। তিনি একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং দেশের প্রকৃত রূপান্তরের জন্য সংস্কার প্রক্রিয়ার জটিলতাগুলো উপলব্ধি করেছেন। তিনি যা কিছু করতে পারেন, তাঁর সবকিছু দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টাকে সহায়তা করবেন এবং বাংলাদেশ ও এর জনগণের পাশে থাকবেন।
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা বোঝার জন্য মহাসচিব যুবসমাজ, সুশীল সমাজ এবং সংস্কার কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। এই কমিশনই জুলাই চার্টার এর রূপরেখা তৈরি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথনির্দেশিকা এবং রাজনৈতিক, বিচারিক, নির্বাচনী, প্রশাসনিক, দুর্নীতি দমন ও পুলিশ সংস্কারের দিকনির্দেশনা দেবে।
জাতিসংঘের কাছ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা আদায় করতে পারবেন ড. ইউনূস
জাতিসংঘ মহাসচিবের এ সফরকে বাংলাদেশ ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে উল্লেখ করেছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, এটি বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ—উভয়ের জন্যই একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কারণ, মহাসচিব নিজেই এমন এক নতুন বাংলাদেশের গঠনপর্ব প্রত্যক্ষ করছেন। যে বাংলাদেশ জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত আত্মত্যাগের মাধ্যমে এক ন্যায়সংগত, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের স্বপ্ন দেখেছে।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১ লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে আয়োজিত বিশেষ ইফতারে অংশ নিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। প্রধান উপদেষ্টার কৌশলের পরিচয় পাওয়া যায় রোহিঙ্গাদের উঁচু করে রাখা প্ল্যাকার্ডেই। রোহিঙ্গা সমস্যার মূল সমাধানের দিকে ইঙ্গিত দেয়ার জন্য এর চেয়ে কার্যকর উপায় আর কি হতে পারে! এসময় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করার পর প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা নাগরিকদের বলেছেন, এই ঈদে না হোক, তবে আগামী রোজার ঈদ যেন আপনারা নিজ মাতৃভূমিতে স্বজনদের সঙ্গে উদযাপন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আবার শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের এ প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব তার শত ব্যস্ততার মাঝেও আপনাদের সঙ্গে ইফতার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, যা আমাদের জন্য সত্যিই সৌভাগ্যের বিষয়। আজ তিনি আপনাদের সঙ্গে ইফতার করছেন, এটি তার আপনাদের প্রতি আন্তরিকতা ও সহমর্মিতার প্রতীক। রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবকে যে অনুরোধ জানিয়েছেন, আমরা তা গুরুত্বের সঙ্গে তার কাছে উপস্থাপন করছি। আপনাদের যত দ্রুত সম্ভব নিজ দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা যায়, আমরা নিরলসভাবে সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, আপনাদের সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে এত দুনিয়ায় ঝামেলা, কোথাও কোথাও যুদ্ধ চলছে, এত কিছুর পরও জাতিসংঘ মহাসচিব এখানে এসেছেন আপনাদের কথা শুনতে। শুধু আপনাদের সঙ্গে ইফতার করবে বলে এত দূর থেকে এসেছেন তিনি, যেন এটার সমাধান হতে পারে। এজন্য আমরা সবাই তাকে ধন্যবাদ জানাই। তাদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে সারা দুনিয়ার সঙ্গে প্রয়োজনে লড়াই করতে হবে। ঈদে মানুষ আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারত করে। রোহিঙ্গাদের সেই সুযোগও নেই।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইফতারের আগে রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে বলেন, এবারের সফরে আমি দুটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পেয়েছি। প্রথমত, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে, যাতে মিয়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং তাদের অধিকার সুরক্ষিত থাকে। অতীতে যে নির্যাতন ও বৈষম্যের শিকার তারা হয়েছে, তা দূর করে তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করা জরুরি। দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে আরও ভালো জীবনযাত্রার সুযোগ চায়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা তাদের খাদ্য নিরাপত্তাকে চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, এই সংকট মোকাবিলায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
এবারের সফর ছিলো অন্যবারের চেয়ে আলাদা
জাতিসংঘ মহাসচিবের কক্সবাজার সফর অন্য যেকোন সময়ের সফরের চেয়ে আলাদা। এবারের সফরের সাথে তুলনা করা যায় তার গত বছরের মিসর ও জর্ডান সফরের সাথে। মুসলিমদের সমস্যা খুব কাছ থেকে অনুভব করা , প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। গত বছর মিসর ও জর্ডান সফরের সময় মুসলিমদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রোজা রেখেছিলেন তিনি। জাতিসংঘের এ মহাসচিবকে অন্য যে কারও চেয়ে মুসলিমদের প্রতি বেশি সহানুভুতিশীল বলে মনে হয়েছে। এবারের রোজার শুরুতেই বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। এক ভিডিও বার্তায় অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা পবিত্র রমজান মাস পালন শুরু করতে চলেছেন এবং এ উপলক্ষে তাদের প্রতি আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা। রমজান হলো পরিবার ও সম্প্রদায়ের মধ্যে পুনরায় সংযোগ স্থাপনের একটি সুযোগ এবং কম ভাগ্যবানদের স্মরণ করারও একটি সুযোগ।
এবারের বাংলাদেশ সফরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সাথেও কথা বলেছেন তিনি। প্রতিনিধি দলে প্রবীণদের পাশাপাশি কয়েকজন নারী প্রতিনিধিও ছিল। কীভাবে তাঁরা দক্ষতা ও শিক্ষা অর্জন করছে, যা তাদের সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনে সহায়তা করবে তা প্রত্যক্ষ করেছেন । এই সফরের সময় মহাসচিব প্রত্যক্ষ করেছেন রোহিঙ্গারা তাদের জন্মভূমিতে ফিরে যেতে কতটা মরিয়া। তারা নিজেদের পরিচয় বজায় রাখতে চায়। নিজ ভূমিতে অধিকার ভোগ করতে চায় এবং এমন একটি জীবন যাপন করতে চায়, যা তাঁরা মর্যাদাপূর্ণ মনে করে।
মহাসচিব রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উপস্থিত থেকে তাঁদের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে তাঁরা রোহিঙ্গাদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখেন এবং বিশ্বের সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার এই জনগোষ্ঠীকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখেন। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের রোহিঙ্গা বিষয়ক সম্মেলনের সফল আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আন্তোনিও গুতেরেস।
Discussion about this post