অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
নাগরিক স্বাধীনতা হরণকারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য মধ্য আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়ার ১০০ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগা ও ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজারিও মুরিলোর প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শনিবার (১৯ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ বিষয়টি জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উক্ত কর্মকর্তারা সুশীল সমাজের সংস্থাগুলোকে দমন করার, নাগরিক পরিসর বন্ধ করার এবং অন্যায়ভাবে সরকার সমালোচকদের আটক করার প্রচেষ্টায় অংশ নিয়েছিলেন। ওইসব সমালোচকদের মধ্যে নিকারাগুয়ার সরকারের তীব্র সমালোচক বিশপ রোলান্ডো আলভারেজও রয়েছেন।
এই বিষয়টি বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্যও প্রযোজ্য। সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের আলোচন থেকে জানা যায় তারা আরো বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে, যারা নিকারাগুয়ার গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলছে তাদের জবাবদিহিতা বাড়াতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে (একত্রে) কাজ করা চালিয়ে যাবো। আমরা নিকারাগুয়ার জনগণের মৌলিক স্বাধীনতা এবং তাদের মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দ্য হিলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক বামপন্থী গেরিলা নেতা ওর্তেগার শাসনামলে গত বছর গ্রেপ্তার হওয়া একাধিক পুরোহিতের মধ্যে আলভারেজ অন্যতম। নিকারাগুয়ার সরকার বেশ কয়েকটি ক্যাথলিক রেডিও স্টেশন বন্ধ করলে তিনি ওই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন এবং সরকারের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়েও উচ্চকণ্ঠ ছিলেন। এরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানায়, আলভারেজ যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত হওয়ার প্রস্তাব অস্বীকার করেন। সরকারকে অবমূল্যায়ন, মিথ্যা তথ্য ছড়ানো এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং অবাধ্যতার জন্য গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে ২৬ বছরের কারাদণ্ডে দেওয়া হয়েছিল। তার নিকারাগুয়ান নাগরিকত্বও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।
এদিকে স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানাচ্ছে, যে ক্ষমতাবলে নিকারাগুয়ার ১০০ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তার অধীনে দেশটির গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয় এমন নীতি প্রণয়ন বা কর্মের জন্য দায়ী ইমিগ্র্যান্ট এবং নন-ইমিগ্র্যান্ট কেউই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর নিকারাগুয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ফের (টানা চতুর্থবার) দেশটির রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসেন ড্যানিয়েল ওরতেগা। ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ছিল।
নির্বাচনের আগে ১২ জুলাই নিকারাগুয়ার সরকার এবং বিচার বিভাগের ১০০ ব্যক্তির ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র, যাদের মধ্যে প্রসিকিউটর এবং বিচারক ছাড়াও তাদের পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যও ছিলেন। ওই ব্যক্তিদের মার্কিন ভিসাও অচল করে দেওয়া হয়েছিল।
দ্য হিলের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ সালে ড্যানিয়েল ওর্তেগা টানা চতুর্থ মেয়াদে বিজয়ী হওয়ার আগে কয়েকজন বিরোধী দলীয় ব্যক্তিকে কারাগারে ঠেলে দেওয়া হয়। ওই ঘটনাকে প্রহসন আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানায় অনেকে। বিরোধীদের মধ্যে কেউ কেউ বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন।
Discussion about this post