অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
প্রবীণ সাংবাদিক ও দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদের পর এবার পত্রিকাটির প্রধান প্রতিবেদক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীকেও কারাগারের চার দেয়ালের ভেতর ঢুকিয়েছে সরকার। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই কথিত গণবান্ধব সরকার আবুল আসাদ ও রুহুল আমিন গাজীর বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছিল।
দুইটি মামলায় জামিনে থাকার পরও পুলিশ লীগের কর্মীরা সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে পত্রিকা অফিসে ঢুকে রুহুল আমিন গাজীকে তুলে নিয়ে গেছে। সাংবাদিক সমাজের ধারণা ছিল, পুলিশ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করলেও আদালত তার প্রতি ন্যায়বিচার করবে। কিন্তু সেটাও হলো না। মুজিবকোর্টের আওয়ামী বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে অসুস্থ সাংবাদিক নেতা গাজীকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
দেখা গেছে, গতকাল অফিস থেকে তুলে নেওয়া হলেও গণমাধ্যম গুলো তা প্রকাশ করিনি। বরং তাকে গ্রেফতারের পেছনে উদ্ভট কারন দেখিয়ে প্রতিবেদন তৈরী করা হয়েছে। শুধু তাই নয় এই সাংবাদিক নেতা অসুস্থ অবস্থায় থানার করিডোরে পড়েছিলেন তারপরেও নিরব ভূমিকায় দেখা গেছে গণমাধ্যমকে।
গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রুহুল আমীনের থানার করিডোরে পড়ে থাকা একটা ছবি ভাইরাল হয়। তার এই ছবি নিয়ে সাধারণ মানুষ নিন্দা জানিয়েছেন। প্রশ্ন তুলেছেন একজন নিরপরাধ মানুষকে এভাবে হয়রানির জবাব কি দিতে পারবে ক্ষমতাসীনরা?
এছাড়া লক্ষণীয় বিষয় হলো-রুহুল আমিন গাজী দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক সমাজের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। বর্তমানেও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তারপর, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও বটে। অথচ, তাকে গ্রেফতারের পর সাংবাদিক নেতা নামের কিছু দালালরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবে তো দূরের কথা, একটি বিবৃতিও দিল না।
এর আগে, শেখ হাসিনার সোনার ছেলে নামের সন্ত্রাসীরা দৈনিক সংগ্রাম অফিসে ঢুকে ইতিহাসের নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছিল। প্রবীন সাংবাদিক ও সম্পাদক আবুল আসাদকে যেভাবে অপমান-অপদস্ত ও মারধর করেছিল, তা কোনো সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না।
ওই সময়ও এদেশের সাংবাদিক নামের কিছু দালাল ও দলকানারা একটি টু শব্দও করেনি। বরং তারা এসব দৃশ্য দেখে মুচকি হাসি দিয়েছিল।
আর আজ রুহুল আমিন গাজীর গ্রেফতারের পরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিক নামের আওয়ামী কর্মীরা অট্ট হাসি দিচ্ছে। যারা প্রতিবাদ করছে তাদেরও সমালোচনা করছে এসব আওয়ামী দালালরা।
এদিকে বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা জনাব রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার প্রদত্ত এক বিবৃতিতে এর প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজের সভাপতি, দৈনিক সংগ্রামের চিফ রিপোর্টার ও বিশেষ প্রতিনিধি জনাব রুহুল আমিন গাজীকে গত ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় তার কর্মস্থল দৈনিক সংগ্রাম অফিস থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে সরকার তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইন ও দ-বিধির ১২৪-ক ধারায় মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। তাকে হয়রানি করার হীনউদ্দেশ্যে নন এফ আই আর মামলায় প্রসিকিউশন দাখিল করে, মূল মামলায় জামিনে থাকা সত্ত্বেও গ্রেফতার করে সরকার সংবিধান ও মৌলিক মানবাধিকার সুস্পষ্টভাবে লংঘন করেছে। ফ্যাসিবাদী এই সরকারের আমলে সাংবাদিকসহ কোনো মানুষই আজ নিরাপদ নয়। আমরা জনাব রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতারের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
ইতোপূর্বে দৈনিক সংগ্রামের প্রবীণ সম্পাদক, প্রথিতযশা সাংবাদিক জনাব আবুল আসাদকে গ্রেফতার করে প্রায় ১০ মাস যাবত কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। এছাড়াও দেশে অনেক সাংবাদিক গ্রেফতার, জুলুম-নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন এবং প্রতিনিয়ত হচ্ছেন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, অবিলম্বে জনাব রুহুল আমিন গাজীসহ গ্রেফতারকৃত সকল সংবাদিককে মুক্তি দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।