শনিবার, অক্টোবর ২৫, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home slide

জামায়াত-শিবির যখন সকল রোগের মহৌষধ!

সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৯
in slide, Top Post, মতামত, সম্পাদকের কলাম
Share on FacebookShare on Twitter

– হাসান রূহী

বহুদিন আগে সার্ফ এক্সেল নামে একটা ডিটারজেন্ট পাউডারের বিজ্ঞাপন দেখতাম। সেখানে সকল দাগ দূর করার একমাত্র উপায় হিসেবে সার্ফ এক্সেলকে উপস্থাপন করা হতো। যেমন বলা হতো- ‘ঝোলের দাগ? চিন্তা কি! আছে সার্ফ এক্সেল…।’

যাইহোক, সার্ফ এক্সেলের বিজ্ঞাপন করার জন্য যে হাতে কলম তুলে নেই নি সে ব্যাপারে পাঠককে আশ্বস্ত করতে চাই। সেই সাথে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে কিছু হতাশার খবরও শোনাতে চাই।

গত শনিবার (৩১ আগস্ট) রাত আনুমানিক ৯টায় রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের ওপর বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। গতানুগতিক পুলিশের ওপর এ হামলার ঘটনার দায় নিয়ে টুইট করে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী দায়েশ (আইএস)। ওই হামলায় পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শাহাবুদ্দিন ও ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল আমিনুল (৪০) আহত হন।

ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে পুলিশের ওপর চালানো হামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেছেন- ‘নব্য জেএমবির নামে জামায়াত-শিবিরের লোকজনই পুলিশকে টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে’ পুলিশ কর্তা মনিরুলের এমন দাবি আজ নতুন নয়। বিগত প্রায় আট নয় বছর যাবতই তিনি সাংবাদিকদের কাছে যেকোনো ঘটনার দায় কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়াই হেসে হেসে জামায়াত শিবিরের উপর চালিয়ে দিতে বেশ অভ্যস্ত।

সে যাইহোক, প্রশ্ন হচ্ছে কোনো প্রকার তথ্য প্রমাণ ছাড়াই প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী একটি সুবৃহৎ রাজনৈতিক দলের ওপর মনগড়া অপবাদ চালিয়ে দিতে পারেন? এই সাহস কোথা থেকে মেলে? উত্তরও খুব কঠিন নয়। আপনাদের খুব মনে থাকার কথা। এই তো মাত্র কয়েকদিন পূর্বের ঘটনা। কুরবানীর ঈদে পশুর চামড়ার অস্বাভাবিত দর পতনের জেরে হাজার হাজার টন কাঁচা চামড়া রাস্তায় পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যায়। অথচ এই চামড়া ছিল বাংলাদেশের রপ্তানী খাতে তৈরী পোষাক শিল্পের পরেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের খাত। সরকারের অবহেলার কারণে এমন ভয়াবহ অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখোমুখি বাংলাদেশ আর কখনও হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। অথচ শিল্পমন্ত্রী গণমাধ্যমের সামনে এসে ঢুলতে ঢুলতে বললেন- ‘বিএনপি চামড়া কিনে রাস্তায় ফেলে দিয়েছে।’ অথচ চামড়া নিয়ে যে কি হয়েছে তা দেশের কোনো মানুষেরই অজানা নয়। যে দেশের সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি এধরণের দায়িত্বহীন, হাস্যকর ও ঘৃন্য মিথ্যাচার করতে পারে, সে দেশে মনিরুল সাহেবের মত প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা দায়িত্বজ্ঞানহীন রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে পিছিয়ে থাকবে কেন?

এগুলো যে আসলে নিজেদের অযোগ্যতা, ব্যার্থতা ও সীমাবদ্ধতা আড়ালের কৌশল তা বিবেকবান মানুষ মাত্রই বুঝতে পারবেন। তাছাড়া ইদানিং আমাদের দেশে ভাইরাল হওয়ার নেশা কিছু কিছু মানুষকে অনেকটা জামায়াত-শিবির নিয়ে কথা বলতে উৎসাহীও করে। উদাহরণ স্বরূপ দু’জন ব্যক্তির নাম না বলে পারছি না। এর একজন হচ্ছেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী কমরেড আলহাজ্ব হাসানুল হক ইনু। মাত্র বছর খানেক আগেও যখন তিনি তথ্যমন্ত্রী ছিলেন, মিডিয়ার বুম আর ক্যামেরা তার সামনে আসলেই হয়তো জামায়াত-শিবির নতুবা খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিষোদগার করতেন। আর এমন সব হাস্যকর ও অযৌক্তিক কথা বলতেন তাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় হাস্যরস আর বিদ্রুপের বন্যা বয়ে যেত। মোট কথা যাকে বলে ভাইরাল। সবাই তখন ধারণা করতেন ভাইরাল হওয়ার নেশায়ই সম্ভবত ইনু সাহেব এমন আজগুবি তথ্য দিতেন।

অপর ব্যক্তি হলেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি গোলাম মওলা রনি। যখন তিনি দেখেন যে রাজনীতির বাজারে তিনি অখাদ্য হয়ে যাচ্ছেন। তাকে কেউ আলোচনায়ই আনতে চাচ্ছেন না। তখনই তিনি জামায়াতকে জড়িয়ে পত্রিকায় কলাম লিখতে বসে যান,অথবা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও বার্তা ছাড়েন। একপ্রকার আলোচনার বাইরে চলে যাওয়া রনি সাহেবকে তখন দেখা যায় মানুষের আলোচনার শীর্ষে! এই তো মাত্র ক’দিন পূর্বে রনি সাহেবের একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে জামায়াত রাজনীতির ময়দান থেকে হারিয়ে যাচ্ছে নাকি শক্ত পোক্ত হচ্ছে তা নিয়ে তিনি এক বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন। সেখানে জামায়াতের রুকন সংখ্যা কত, আয় কত, কার্যক্রম কি এমন নানান তথ্যের ছড়াছড়ি। আ. লীগের একজন নেতা হওয়ার পরেও তার কাছে জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক যত তথ্য রয়েছে, জামায়াতের কোনো কেন্দ্রীয় নেতার কাছেও এত তথ্য আছে কিনা কে জানে!

শুধু কি ইনু কিংবা রনি সাহেব? না। এ তালিকা দিতে শুরু করলে শেষ হওয়ার নয়। রাজনীতির ময়দানে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়া এমন শত শত ব্যক্তির তালিকা দেয়া যাবে যারা কিনা নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে সামনে জামায়াত শিবিরের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তাতে তা যতই অপ্রাসঙ্গিক হোক না কেন।

এবার আসুন জনাব মনিরুলের দিকে নজর দেয়া যাক। পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্ব সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, গত দশ বছর যাবত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সন্ত্রাস দমনের চেয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনের কাজেই তাদের ব্যস্ত রাখা হয়েছে। গুম, খুন, আর নির্যাতনের মাধ্যমে বিরোধী মত দমন করে ক্ষমতার আসন পাকাপোক্ত করতেই সরকার এমনটি করেছে। ইসলাম ও ইসলামপন্থী মানুষের জাগরণকে স্তব্ধ করে দিতে রাতের আঁধারে নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। কুরআন-হাদীস ও ধর্মীয় বই-পত্রকে জিহাদী বই আখ্যা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। সংবিধান সম্মত রাজনৈতিক সভা সমাবেশকে গোপন বৈঠক আখ্যা দিয়ে লাখ লাখ রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো হয়েছে। আর এ সব কিছুই করা হয়েছে পুলিশকে ব্যবহার করে। মিথ্যা বানোয়াট গল্প আর নাটক সাজিয়ে ইচ্ছেমত হয়রানি করা হয়েছে দেশের বিরোধী মতের মানুষদের। তৎকালীন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম এসব মিথ্যা নাটকের অন্যতম নির্মাতা হিসেবেই ইতিহাসে স্থান পাবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

যাইহোক, হলি আর্টিজানে নৃশংস জঙ্গি হামলার পর এদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতার ব্যাপারে টনক নড়ে। সারা রাত চেষ্টা করেও জঙ্গিদের নিবৃত করতে না পেরে ভোরবেলা সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়। কিন্তু একে সফল অভিযান বলার সুযোগ কতটুকু তা বিচারের দায়িত্ব পাঠকের হাতেই ছেড়ে দিলাম। কিন্তু আমার আলোচনার উদ্দেশ্য ওই হামলার পরবর্তী সময়ে পুলিশ ও র‌্যাবের ভূমিকা নিয়ে।

হলি আর্টিজানের ঘটনার পর জঙ্গিদের নিয়ে অনেক রোমহর্ষক তথ্য মিডিয়ায় আসতে থাকে। কিন্তু তাদের দমনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানগুলো বিভিন্ন কারণে সাজানো নাটক হিসেবে জনগণের কাছে প্রতীয়মান হতে থাকে। কারণ এমন অনেক হাস্যকর অসংলগ্নতা সামনে আসতে থাকে তাতে এসব লোকদেখানো অভিযান বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়। বরং দেখা যায়, যখনই দেশের রাজনৈতিক অবস্থা খারাপ বা কোনো আন্দোলন চাঙ্গা হচ্ছে তখনই এসব জঙ্গি দমনের একেকটি নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। কিন্তু প্রতিটি নাটকের পরেই এমন কিছু তথ্য পাওয়া যেত যা পুরো ব্যাপারটিকেই হাস্যকর করে তুলতো। যেমন, নিহত ব্যক্তির পরিবার, স্বজন কিংবা এলাকাবাসী দাবি করতো তাকে অনেকদিন আগেই পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছিল। কিংবা যে বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছিল তা মাস খানেক আগে পুলিশই ভাড়া করেছিল। কিংবা বাসার বাইরে থেকে তালা দিয়ে ভিতরে গুলি চালিয়ে বা গ্রেনেড চার্জ করে লোকদের হত্যা করা হয়েছে। ইত্যাদি ইত্যাদি।

কিন্তু এসব নাটকের ফলাফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। অর্থাৎ মূলতই যারা বিপথগামী হয়ে জঙ্গিবাদের সাথে জড়িয়ে পড়েছে তারা এতে সুযোগ পেয়েছে। ভেতরে ভেতরে তারা ঠিকেই সংঘবদ্ধ থেকেছে। আর সময়মত নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিয়েছে। গত শনিবার রাতে সায়েন্স ল্যাবের ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা তাই প্রমাণ করে।

ফলে জনগণ কিংবা সংবাদ কর্মীরা মনিরুল সাহেবদের প্রশ্ন করতেই পারে, এতই যদি জঙ্গি দমন করলেন তাহলে আবার জঙ্গি এলো কোথা থেকে? যদি জঙ্গি নাইবা থাকে তাহলে ঘটনা ঘটার খুবই অল্প সময়ের মধ্যে আইএস দায় স্বীকার করে কি করে? তখন নিজেদের পিঠ বাঁচাতে দাঁত কেলিয়ে নির্লজ্জ হেসে জামায়াত শিবিরের ওপর দায় চাপানো ছাড়া মনিরুল সাহেবদের আসলেই কিছু করার থাকে না।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

জনপ্রিয় সংবাদ

  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • অসুরের মুখে দাঁড়ি-টুপি : মুসলিম বিদ্বেষে সীমা ছাড়াল ভারত

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • মুসলমানদের সেই সোনালী দিনগুলো আজ কোথায়?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD