শুধু আইনি লড়াই চালিয়ে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না বলে এখন মনে করছেন বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ; এজন্য রাজপথের আন্দোলন চাইছেন তিনি।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত দলীয় চেয়ারপারসনের জামিনের মুক্তির সম্ভাবনা পিছিয়ে গেলেও বিএনপি এখনও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কর্মসূচিতেই রয়েছে।
খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী মওদুদ জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় রায়ের আগে থেকেই বলে আসছিলেন, সাজা হলেও উচ্চ আদালত থেকে জামিনে তার নেত্রীকে বের করে আনা হবে। বিএনপি প্রধানের ভোট করতেও সমস্যা হবে না।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় রায়ের পর খালেদা জিয়া বন্দি হলেও একই আশা দেখিয়ে আসছিলেন মওদুদ।
কিন্তু রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পেতে দেরির জন্য খালেদার আপিল করা পিছিয়ে যায়; আপিল করার পর হাই কোর্ট জামিন দিলেও আপিল বিভাগে তা আটকে যায়। আগামী ৮ মে আপিল বিভাগে শুনানির তারিখ নির্ধারিত আছে, তার আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তি কোনো সম্ভাবনাই নেই।
এই অবস্থায় বিএনপি ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড কারলাইলকে আইনজীবী নিয়োগের দুই দিনের মধ্যে বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক আলোচনা অনুষ্ঠানে আইনি লড়াই নিয়ে হতাশার কথা বললেন মওদুদ।
সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, “নিম্ন আদালত, নিম্ন আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, বেঞ্চ ক্লার্করা, কেরানিরা, স্টাফরা- এরা তো সব সরকারের কর্মচারী।
“সুতরাং আমরা আইনি লড়াই করব, আমাদের আবার রাজপথেও থাকতে হবে। শুধু আইনি লড়াই দিয়ে এই যুদ্ধে জয়লাভ করার সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি না।”
নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধির গেজেট হয়ে যাওয়ার পরে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণে সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্য্কারিতা হারিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ব্যারিস্টার মওদুদ।
“কারণ নিম্ন আদালত এখন সরকারের অধীনে চলে গেছে। তাহলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকে কীভাবে?”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য একইসঙ্গে বলেন, “আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ইনশাল্লাহ আমাদের মধ্যে ফিরে আসবেন। যতই কলা-কৌশল করা হোক না কেন।”
খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মওদুদ।
আওয়ামী লীগের শাসনামলকে ‘ভয়ংকর’ বর্ণনা করে বিএনপি নেতা বলেন, “এক বিরাট সঙ্কটকাল চলছে। আমার জীবনে এমন সঙ্কট দেখি নাই। অনেক আন্দোলন দেখেছি, অনেক বড় বড় সঙ্কট দেখেছি, মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে সঙ্কটময় দেখেছি কিন্তু এরকম অবস্থা বর্ণনা করা যায় না।”
সরকারি সুবিধা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘একদলীয় নির্বাচনী প্রচারণা’ এবং সরকারের ‘লুটপাট-দুর্নীতি’র সমালোচনা করেন সাবেক মন্ত্রী মওদুদ।
আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফজলুর রহমান, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, কেন্দ্রীয় নেতা শাহ আবু জাফর, মিজানুর রহমান মিজান বক্তব্য রাখেন।
সূত্র: বিডিনিউজ