মেজর মো. আখতারুজ্জামান (অব.)
সম্প্রতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে পার্লামেন্টের আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। পার্লামেন্টে তেরেসার কনজারভেটিভ দলের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও শুধু জনগণের মতামত নেওয়ার জন্য দুই বছর আগেই আগাম নির্বাচন দিয়েছেন। তেরেসা নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার আগে ব্রিটেনের বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবাইনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে ব্রেক্সিটের চরম বিরোধিতাকারী লেবার ডেমোক্র্যাট দলের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। ব্রিটেনের পরবর্তী নির্বাচন ২০২০ সালে হওয়ার কথা ছিল কিন্তু চলমান ব্রেক্সিট সমস্যার ঐক্যবদ্ধ সমাধান খোঁজার স্বার্থে ব্রিটেনের জনগণের রায় প্রয়োজন মনে করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অনেকে তেরেসার এই আচমকা সিদ্ধান্তে অবাক হলেও সাধুবাদ জানিয়েছেন। সরকার পরিচালনায় বিভিন্ন দলের মত ও পথের পার্থক্য থাকবে কিন্তু সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী নেবে, এটাই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ।
বাংলাদেশে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির আগে একটি নির্বাচন অত্যাসন্ন। ২৯ জানুয়ারি, ২০১৪ সালে বর্তমান সংসদের প্রথম সভা হয়, সে কারণে ৫ জানুয়ারি, ২০১৪ নির্বাচন হলেও সংসদের মেয়াদ ধরা হয় সংসদের প্রথম সভার তারিখ থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। সে মোতাবেক বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯ সাল। অতএব সংসদ ভেঙে না দিলে বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯ সালের আগে ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচিত হতে হবে। তার মানে ২৮ অক্টোবর, ২০১৮ থেকে ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯ সালের যে কোনো দিন নির্বাচন হতে হবে।
যদিও নির্বাচন পরিচালনা করার একক দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের, কিন্তু নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা সরকারকেই দিতে হবে। আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিলে সংসদ ভেঙে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর লিখিত অনুরোধ করতে হবে। যদি প্রধানমন্ত্রী সংসদ ভাঙতে না বলেন তাহলে ২৭ অক্টোবর, ২০১৭ সাল পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। সরকার নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশনা দিলেই নির্বাচন কমিশন আইনগতভাবে নির্বাচনের কাজ শুরু করবে। তার আগে কোনো রাজনৈতিক দলও আইনসম্মতভাবে সরাসরি নির্বাচনের কাজ করতে পারবে না। ভোটার লিস্ট হালনাগাদ করা, নির্বাচনী এলাকা পুনর্বিন্যাস করা কোনো নির্বাচনী কাজ নয়। এগুলো নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক রুটিন ওয়ার্ক। যে কোনো নির্বাচনের বৈধ কাজ শুরু হয় নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রধানমন্ত্রী নিজে স্বহস্তে স্বাক্ষরিত পত্র নির্বাচন কমিশনকে দেবেন ততক্ষণ পর্যন্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোনো কাজ পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে তারা শুরু করতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন যদি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে তাহলে জটিল সাংবিধানিক সমস্যা সৃষ্টি হবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে তার দায়িত্ব পালন করবে কিন্তু যে কোনো নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করতে হলে অবশ্যই সরকারের এবং সংসদ নির্বাচনের বেলায় প্রধানমন্ত্রীর স্বহস্তে স্বাক্ষরিত পত্র লাগবেই। কারণ বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সংসদ বহাল রেখেই সংসদ নির্বাচন হতে হবে।
এ কথা মানতেই হবে, আগাম সংসদ নির্বাচন এখনো সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। তা ছাড়া বিএনপি এখনো পর্যন্ত তার মূল রাজনৈতিক অবস্থান থেকে সরে আসেনি। বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না তা প্রায় নিশ্চিত। সরকার যত কথাই বলুক না কেন বা বিএনপির ওপর মামলা-হামলা করে যতই চাপ সৃষ্টি করুক না কেন, দলের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে বলে যত ভয়ভীতিই দেখাক না কেন, বিএনপির লোভী নেতাদের যতই দলে ভিড়াক বা বিদেশিদের দিয়ে যতই চাপ সৃষ্টি করুক অথবা ২০১৪ সালের নির্বাচনে না যাওয়া বিএনপির ভুল হয়েছিল বলে যতই উপদেশ দেওয়া হোক, সরকারের সঙ্গে আলোচনা বা বোঝাপড়া ছাড়া বিএনপির পক্ষে যে নির্বাচনে আসা সম্ভব হবে না তা চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জাতিকে পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। চলমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিএনপির আরেকটি রাজনৈতিক ভুল করার সুযোগ নেই। বিএনপি এখন সঠিক পথেই আছে। বিএনপির পেছানোর এখনো অনেক পথ ও সুযোগ আছে কিন্তু সরকার ছাদের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছে। সরকারের পেছনে যাওয়ার জায়গা দিন দিন কমে আসছে। সরকারকেই এখন সামনে এগিয়ে আসতে হবে। বিএনপিকে হুমকি-ধামকি দিয়ে নয়, ভুলিয়ে ভালিয়ে নির্বাচনে নিয়ে আসতে হবে। তার জন্য উইন উইন অবস্থা তৈরি করতে হবে। সরকারকে জনগণের আস্থা অর্জন করার পথে হাঁটতে হবে। কট্টরপন্থিদের এখন পেছনের কাতারে নিয়ে যেতে হবে। বাঁচতে হলে উদার রাজনীতি সামনে নিয়ে আসতে হবে।
আগামীতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া সরকারের অন্য কোনো বিকল্প নেই। সংবিধান সরকারের সামনে শুধু দুটি পথ খোলা রেখেছে যা সরকার নিজেই তৈরি করছে। একটি হলো সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া অথবা সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন দেওয়া। সংসদের মেয়াদ শেষ হলে কী হবে, তা কিন্তু সংবিধানে ধোঁয়াশা রাখা হয়েছে, যার ফলে সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নির্বাচন না হলে যে সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হবে তা বর্তমান সরকার এককভাবে পূরণ করতে পারবে না। কাজেই সংসদের মেয়াদ পূর্তির আগে যদি নির্বাচন না হয় তাহলে সরকার অবশ্যই সাংবিধানিক সংকটে পড়বে। তবে সেই নির্বাচন যদি সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য না হয় তাহলে যেমন সরকার ঝুঁকির মধ্যে পড়বে তেমনি যদি সুষ্ঠু নির্বাচন করানোর ঝুঁকি সরকার নেয় তাহলে সরকারের চলে যাওয়ার সম্ভাবনাও সৃষ্টি হতে পারে। আবার যদি সরকার একতরফাভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকতে চায় তাহলে সেটাও বুমেরাং হয়ে যেতে পারে।
সময় পরিবর্তন হয়েছে। ২০১৪ সালে যা সম্ভব ছিল তা ২০১৮ বা ২০১৯ সালে সম্ভব নাও হতে পারে, না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। জনগণ একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়। জনগণ ভোট দিয়ে তাদের সরকার গঠন করতে চায়। এর বাইরে জনগণ আগামীতে কোনো কিছু মেনে নেবে না তা জনগণের চোখেমুখে ইতিমধ্যেই ফুটে উঠেছে। তাই এখন সরকারকেই ভাবতে হবে সে কোন পথে হাঁটবে।একমাত্র বঙ্গবন্ধু ছাড়া সব সরকারপ্রধানের মধ্যে বর্তমান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা সবচেয়ে চৌকস, বিজ্ঞ এবং দক্ষ প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৩৭ বছরে যত রাজনৈতিক চাল চেলেছেন তার প্রায় সব কটিতেই তিনি বাজিমাত করেছেন। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তুলনীয় কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তার সামনে নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সমস্যা আসছে। আগামী নির্বাচনটা হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দেশ-বিদেশসহ সব আন্তর্জাতিক মহল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছে তিনি কীভাবে আগামী নির্বাচনটি করান। আগামী নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু হতে হবে, জনগণের অংশগ্রহণমূলক হতে হবে এবং জনগণসহ সব মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। আগামী নির্বাচনে বিএনপি এলো কি এলো না সেটি বড় বিবেচ্য হবে না, কারণ নির্বাচন বয়কট করাও গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে মানতেই হবে নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ অত্যাবশ্যক। বিএনপি না এলেও জনগণ যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাহলে সেই নির্বাচনের ফলাফল জনগণ যেমন মেনে নেবে তেমনি ভারতসহ পশ্চিমা বিশ্বও মেনে নেবে যার আলামত ইতিমধ্যেই দৃশ্যমান।
বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারত ছাড়া অন্য কোনো রাষ্ট্র এমনকি জাতিসংঘও মাথা ঘামাবে না বা হস্তক্ষেপ করবে না। পশ্চিমা বিশ্ব বা জাতিসংঘ তথাকথিত কট্টর ইসলামী শক্তি বা জঙ্গিদের উত্থান ঠেকানোর জন্য বর্তমান সরকারের ওপর অনেক বেশি আস্থাশীল। অথচ এ ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান মিশ্র, ঘোলাটে এবং নীরব। এ ছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে সব দেশ ও জাতি জঙ্গিবাদ উত্থানের বিরুদ্ধে। এমনকি সৌদি আরবও তথাকথিত মুসলমান উগ্রবাদীদের বিপক্ষে এবং বর্তমান সরকারের পক্ষে। বিএনপির এখন প্রায় একঘরে হয়ে যাওয়ার অবস্থা। সাম্প্রতিক অতিমাত্রায় ভারতবিদ্বেষী অবস্থান ও প্রচার-প্রচারণার জন্য ভারতের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব অনেক বেশি হয়ে গেছে, যা কমানোর তেমন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যায় না। ভারত বর্তমানে অত্র এলাকার আঞ্চলিক মোড়ল। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের অত্র এলাকার স্বার্থ দেখাশোনার দায়িত্বও ভারতের কাঁধে দিয়ে দিয়েছে বলে মনে হয়। বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারত ও চীনের কোনো দ্বন্দ্ব আছে বলে দৃশ্যমান হয় না। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর বডি ল্যাঙ্গুয়েজে সে রকমই ফুটে উঠেছে বলে অনেকের ধারণা।
সন্দেহ নেই ভারত তার আন্তর্জাতিক অবস্থান, ভূরাজনৈতিক স্বার্থ এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার কারণে চাইবে একটি সুষ্ঠু ও সর্বজনগ্রহণযোগ্য নির্বাচন। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নিজের অবস্থান, রাজনৈতিক স্বার্থ, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, দল ও পরিবারের ভবিষ্যৎ অস্তিত্ব ইত্যাদি বিবেচনায় এনে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে আগ্রহী। প্রধানমন্ত্রী বলে আসছেন একমাত্র দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়। এখন এই বক্তব্যের যথার্থতা প্রমাণ দেওয়ার দায়িত্ব খোদ প্রধানমন্ত্রীর ওপরই পড়েছে। তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুবার বলেছেন, তিনি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেন না যে বক্তব্যের প্রমাণ রাখার সময়ও সামনে এসে উপস্থিত হয়েছে।ওদিকে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বিরামহীনভাবে বলে আসছেন তিনি বা তার দল আলোচনা ছাড়া এ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনে যাবেন না। সরকার যদিও তার দলকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছে কিন্তু সরকারের মদদে দল ভেঙে গেলেও বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অবস্থানের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ আওয়ামীবিরোধী তাবৎ শক্তির একচ্ছত্র নেতা বেগম খালেদা জিয়া। কিছু দালাল, ক্ষমতালোভী, সুযোগসন্ধানী একশ্রেণির নেতা বিএনপি ছেড়ে গেলে বরং বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থান আরও সুদৃঢ় হবে।
তবে তখন বেগম খালেদা জিয়ার সামনে নতুন একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। সেই চ্যালেঞ্জটি হলো, সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যখন করাতে যাবে তখন তার বিরুদ্ধে জনগণকে দাঁড় করানো। সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করার চেষ্টা করলে তিনি নিঃসন্দেহে সেই নির্বাচন বয়কট করবেন। প্রশ্ন হলো সেই বয়কট জনগণ সমর্থন করে কিনা। যদি জনগণ বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে নির্বাচন বয়কট করে এবং সরকার ৫০%-এর বেশি জনগণকে ভোট দিতে নিয়ে আসতে না পারে তাহলে নির্বাচনটি গণভোটে পরিণত হবে এবং সরকার নৈতিকভাবে তার পক্ষের ম্যান্ডেট হারাবে। জনগণকে সরকারের পক্ষে ভোট দিতে না যাওয়ার জন্য আহ্বান করা বা জনগণের কাছে গিয়ে সরকারের পক্ষে ভোট দিতে অনুৎসাহিত করা কোনো অপরাজনীতি হবে না। তা ছাড়া সে ক্ষেত্রে বিএনপির রাজনৈতিক বক্তব্য হবে যারাই সরকারের পাতানো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তারা সবাই সরকারের লোক, অতএব জনগণ যেন এ পাতানো নির্বাচনে না যায়। এ নিয়ে রাজপথ গরম বা চরম কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ারও প্রয়োজন পড়বে না। শুধু নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার মতো কোনো প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ার জন্য জনগণের মাঝে প্রচারকাজ চালিয়ে জনগণকে সচেতন করলেই হবে। কোনো প্রার্থীকেই ভোট না দেওয়ার প্রচার-প্রচারণা নির্বাচন আচরণ বিধিতে কোনো অপরাধ হবে না। বিএনপি যদি এভাবে জনগণকে পাতানো নির্বাচনের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে পারে তাহলে সেটা হবে বিএনপির নেতৃত্বে জনগণের একটি যুগান্তকারী গণতান্ত্রিক বিজয়। কাজেই বিএনপি এ সুযোগ হাতছাড়া করবে বলে মনে হয় না।
পরিশেষে আবারও বলছি, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দলের কাছে বিকল্প নেই। দেশ ও জনগণের স্বার্থে আগামী নির্বাচনটিকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে দুই নেত্রীকে একসঙ্গে বসে এবং ব্যক্তিগত আবেগজড়িত কারণে বসতে না পারলে সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা তৈরি করে তাতে দুই নেত্রীর সম্মতি নিয়ে একটি অভিন্ন রাজনৈতিক ইশতেহার তৈরি করে তার ভিত্তিতে নির্বাচনের কর্মসূচি গ্রহণ করলে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। দুই নেত্রীকেই ছাড় দিতে হবে। আমাদের ইগোর চেয়ে দেশের জনগণের শান্তি অনেক বড়। আমরা কেউ থাকব না কিন্তু জনগণ থাকবে, দেশ থাকবে। সময়ের ব্যাপার মাত্র। ক্ষমতা কারও চিরস্থায়ী নয়। আসুন আমরা সবাই দায়িত্বশীল হই। প্রমাণ করি আমরা সবাই দেশপ্রেমিক। আমরা জনগণের কল্যাণে কাজ করি। সবার উপরে জনগণ।
লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
Discussion about this post