বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ৬, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home slide

৫০ হাজার টাকার বেতনেও চালেনা না সংসার

ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২
in slide, জাতীয়
Share on FacebookShare on Twitter

মাসিক বেতন ৫০ হাজার টাকা। এ টাকার মধ্যে ১৬ হাজার টাকা বাসা ভাড়া। পানির বিল ৫০০, গ্যাস ৯৭৫, ডিশ বিল ৪০০, বুয়ার বেতন ২০০০, পত্রিকা বিল ১৫০, ইন্টারনেট ৭০০, বিদ্যুৎ গড়ে ৮০০, ময়লা ফেলার জন্য ১২৫, মাসিক ডিপিএস কিস্তি ১ হাজার, মায়ের ওষুধ ৮৫০, তিন সন্তানের লেখাপড়া বাবদ ৮ হাজার, অফিস যাতায়াত বাবদ ৩ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ৩৪ হাজার ৫০০ টাকার মতো খরচ। বাকি টাকা দিয়ে সারা মাসের চাল, ডাল, তেল, নুন, আটা, সবজি, মাছ মাংস কিনতে হয়।

আয় ও খরচের এই ফর্দটি মো. মোসলেম উদ্দিনের। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একটি বীমা কোম্পানির এই চাকুরে পরিবার নিয়ে থাকেন হাজারীবাগে। স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে ও মাকে নিয়ে তার সংসার। দুই মেয়ের বড়জন একটি কলেজে, বাকি দুই ছেলে-মেয়ে স্কুলে পড়ে। তিন কামরার বাসার এক কামরায় তিনি ও তার স্ত্রী, এক কামরায় মা, অন্য কামরায় দুই মেয়ে আর ছেলেটি থাকে ড্রয়িংরুমে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা মোসলেম উদ্দিন স্বপ্ন দেখেছিলেন একটা সাধারণ মধ্যবিত্ত জীবনের। সেই অতি সাধারণ জীবনই এখন আর চলছে না তার। মোসলেম উদ্দিন গত ছয় মাস হয় বড় বিপাকে পড়েছেন। কারণ প্রতিমাসেই বাড়ছে পণ্যের দাম।

মোসলেম উদ্দিনের বাজার-সদাই করার কাহিনীটি এমন, অধিকাংশ দিন অফিস থেকে বের হয়ে কারওয়ানবাজারের ফুটপাত থেকে কম দামে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ ও সবজি কেনেন। কারওয়ানবাজারে রাতে ট্রাকবোঝাই এসব পণ্য আসার সময় কিছু লোক এটা-সেটা চুরি করে রেখে দেয়। আবার অনেকে ফেলে দেওয়া পচা সবজির স্তূপ থেকে কিছু বেছে রাখে। পরে এসব সবজি কম দামে বিক্রি করে। মোসলেম উদ্দিন অনেক সময় যান মাছের বাজারে। উদ্দেশ্যহীন ঘোরাফেরা করে মাছ না কিনেই খামারের ব্রয়লার মুরগি কিনে বাড়ি ফেরেন। সেই ব্রয়লারের দামও এখন বেড়ে গেছে।

শুধু মোসলেম উদ্দিন নন, গত ছয় মাসে দ্রব্যমূল্য এত বেড়েছে যে, তা অধিকাংশ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। তারও আগে অর্থাৎ ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার পর মহামারীর প্রভাবে অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কা খায়। বহু মানুষ চাকরি হারিয়ে গ্রামে চলে যেতে বাধ্য হন। চাকরি বা ব্যবসা থাকলেও বহু মানুষের আয় কমে গেছে।

বাজারে আগুন, বিক্রি কম : গতকাল শুক্রবার রাজধানীর হাতিরপুল, ঝিগাতলা, মোহাম্মদপুর এলাকার ১০টি মুদি দোকানদারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় দোকানে বিক্রিও কমে গেছে।

ওই তিন এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরিবের মাছ হিসেবে পরিচিত পাঙ্গাশের দামেও আগুন। বড় আকারের পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২০০ টাকা কেজি দরে। মাঝারিগুলো বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকায়। চাষের কই মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৩০০-৩২০ টাকায়। যা গত সপ্তাহেও বিক্রি হয়েছে ২২০-২৫০ টাকায়। তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা। এ ছাড়া প্রতিকেজি বড় চিংড়ি ১১০০-১২০০, রুই ৩৫০-৪০০, কাতলা ৩০০-৩৫০, কোরাল ৬০০, নলা ২৬০, কালবাউশ ৪০০ এবং ট্যাংরা ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শীতের মৌসুমে সবজির দাম সাধারণত কম থাকে। কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম। গতকাল রাজধানীর চারটি বাজারে গড় দাম ছিল প্রতিটি মাঝারি আকারের ফুলকপি ৩৫-৪০ ও বাঁধাকপি ৩০-৩৫ টাকা। শিম প্রতিকেজি ৬০, করলা ৭০, শসা ৬০, বেগুন ৭০, পেঁপে ৩০, গাজর ৪০, টমেটো ৩০-৪০, মুলা ৪০, আলু ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।

রাজধানীর বাজারগুলোতে গত সপ্তাহে ৯৬-১০০ টাকায় এক ডজন ফার্মের মুরগির ডিম পাওয়া যেত। গতকাল বিক্রি হচ্ছিল ১১০ টাকা দরে।

বাজার চিত্রের সঙ্গে সরকারি তথ্যের মিল নেই : গত বুধবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে জানুয়ারিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। গত ডিসেম্বরে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ০৫ শতাংশ; তার আগের মাস নভেম্বরে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। অর্থাৎ গত জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি কমেছে বা পণ্যের দাম কমেছে। খাদ্যসহ ভোগ্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে বিবিএসের এই তথ্যে সাধারণ মানুষ আস্থা রাখতে পারছে না। যেখানে খাদ্যপণ্য চাল, তেল, ডাল থেকে শুরু করে টিস্যু ও কাপড় কাচার সাবানের দাম পর্যন্ত বেড়েছে। সেখানে সরকারি জরিপ সংস্থা বলছে দাম কমেছে।

খরচ কমিয়েও টিকতে না পেরে ঢাকা ছাড়ছেন অনেকে : দেশের জনপ্রিয় একটি বেসরকারি টিভির একজন বিশেষ প্রতিনিধি বেতন পাচ্ছেন ৫০ হাজার টাকা। নাম না প্রকাশ করে তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেছেন, গত বছরে সবকিছুর দাম বেড়ে গেলে তারা মানসম্মত খাবার খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। খরচ কমিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা তখন করেছিলেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, খরচ কমিয়েও ঢাকায় টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। বাচ্চা ও স্ত্রীকে গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন তিনি।

এই সংবাদকর্মী আরও বলেন, মিরপুরে প্রায় ৮০ লাখ লোক বাস করে, যার বড় অংশ নিম্ন আয়ের। বাসা ভাড়া কম বলে মিরপুরে থাকেন তিনি। সম্প্রতি তার পরিচিত কয়েকজন তাদের পরিবারকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। তারা তাদের আয়ে সংসার চালাতে পারছেন না।

ছাঁটাই হচ্ছে, কমছে বেতন : ঢাকার ধানমন্ডির দুটি পার্লার ও একটি জিমের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, পার্লার দুটি থেকে চারজন কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। বাকিদের বেতন কমানো হয়েছে। আর জিম থেকে একজন কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। কারণ জানিয়ে জিমের মালিক ছাঁটাই হওয়া কর্মীকে বলেছেন, জিমে আগের মতো লোক আসছে না। সে কারণে আয় কমে গেছে। আয় কমে যাওয়ায় তাকে রাখা যাচ্ছে না।

টিসিবির ট্রাকের পেছনে ছুটছে মানুষ : গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর সাংবাদিকদের সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) কার্যালয়ের সামনে রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রির ট্রাক ঘিরে ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। শুধু ডিআরইউ নয়, রাজধানীর পল্টন, ঝিগাতলা, কারওয়ানবাজার ঘুরে টিসিবির ট্রাকের সামনে ক্রেতাদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।

ঝিগাতলায় টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে ভোর থেকে লোকজনকে অপেক্ষায় বসে থাকতে দেখা গেছে। ট্রাক আসতেই হুড়োহুড়ি লেগে যায়। পণ্য বিক্রি শেষ হয়েছে বেলা ১১টার মধ্যে। টিসিবির ট্রাক ঘিরে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ার চিত্র গত কয়েক দিন ধরেই গণমাধ্যমে আসছে। বেশকিছু ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, মানুষ পণ্য কেনার জন্য ট্রাকের পেছনে দৌড়াচ্ছে। ছুটন্ত এসব লোকজনের মধ্যে নারী, পুরুষ, যুবকসহ নানা বয়সীদের দেখা গেছে। আগে শুধু দরিদ্র মানুষদের টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে দেখা যেত, এখন মধ্যবিত্তরাও যোগ দিয়েছে সেই কাতারে।

দেশে দ্রব্যমূল্যের এমন ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতি এবং মানুষের নাভিশ্বাসের বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘একমাত্র লুটপাটকারী কিছু লোক ছাড়া সমাজের সর্বস্তরের মানুষ খারাপ আছে। তাদের যে আয় তা দিয়ে সংসার কোনোভাবেই চলছে না। এ পরিস্থিতি কোনোভাবেই চলতে পারে না। সরকারকে রেশনিং প্রথা আবার চালু করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যদি সরকার কমাতে না পারে, তাহলে বাজারে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির সরকারি ব্যবস্থা রাখতে হবে। এ ছাড়া মানুষ বাঁচবে না।’

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫
Home Post

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫
Home Post

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: ১৫ বছর পরেও বেপরওয়া খুনিরা, সুবিচার পায়নি শহীদ পরিবার

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Tagesordnungspunkt Spielbank Maklercourtage Ohne Einzahlung 2024

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD