সিলেটে আতিয়া মহল নামের বাড়িটিতে কমান্ডো অভিযান এখনো চলছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রোববার বিকেলে জানিয়েছে, সিলেট শহরের একটি ফ্ল্যাটবাড়িকে ঘিরে তাদের সম্মিলিত অভিযানে দুই উগ্রবাদী নিহত হয়েছে।
দক্ষিণ সুরমা থানার শিববাড়ি এলাকায় ‘আতিয়া মহল’ নামের ওই বাড়িটিতে আরো উগ্রবাদী থাকতে পারে বলে কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এরই মধ্যে বাড়িটির ভেতর আটকা পড়া ৭৮ জন বাসিন্দাকে উদ্ধার করেছে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী।
শনিবারই অভিযান চলাকালে শহরের অন্য দুটি জায়গায় বোমা হামলায় পুলিশসহ অন্তত ৬জন নিহত হয় এবং ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়।
কিন্তু সিলেটের এই বাড়িটিকে ঘিরে প্রায় চার দিন ধরে চলছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মিলিত অভিযান।
এর নিষ্পত্তি ঘটানো যাচ্ছে না কেন?
আইএসপিআরএর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল রাশিদুল হাসান বলছিলেন, “এখনও বাইরে থেকে বাড়িটি ঘিরে রেখে অভিযান চালানো হচ্ছে। কারণ ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ‘এক্সপ্লোসিভ’ পেতে রাখা হয়েছে। এজন্য বাইরে থেকে তাদের অন্যভাবে ‘এঙ্গেজ’ করার চেষ্টা করা হচ্ছে”।
“পাঁচতলা বাড়ি আর এতে ৩০টি ফ্ল্যাট। গতকাল যখন আটকে পড়া বাসিন্দাদের কমান্ডোরা উদ্ধার করে তখনই তারা দেখছিলে যে বিভিন্ন জায়গায় ‘এক্সপ্লোসিভ’ লাগানো আছে। খুব কৌশলে কাজ করতে হচ্ছে”-বলেন হাসান।
লেফটেন্যান্ট কর্ণেল রাশিদুল হাসান বলছিলেন “যারা ভেতরে আছে তারা বেশ প্রশিক্ষিত। আমরা বের হয়ে আসতে বললেও তারা বের হয়ে আসেনি। আমাদের এখান থেকে যে গ্রেনেড লক করে ছোঁড়া হয়েছিল, তারা আবার সেটিকে বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে”।
“তারা ‘এক্সপ্লোসিভ’ তৈরিতে ও লাগানোতে বিশেষভাবে দক্ষ বলে মনে হচ্ছে” -বলছিলেন সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা।
অভিযানের বর্ণনায় হাসান বলছিলেন “রোববার সকালে কমান্ডোরা বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করেছে। ভবনটি ছিদ্র করে ঢুকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তারপর ভবনের কয়েকটি জায়গায় বিস্ফোরক লাগিয়ে চেষ্টা করেছে, কিন্তু সেটাও কাজে না লাগায় টিয়ার গ্যাস ছোঁড়া হয় ঘরের ভেতর। এসময় উগ্রবাদীদের দৌড়াতে দেখা যায়। তারপর কমান্ডোরা গুলি ছুঁড়ে”।
এ পর্যন্ত দুজন ‘জঙ্গি’ নিহত হবার খবর নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনী। নিরাপত্তা বাহিনী বাইরে থেকে অভিযান চালাচ্ছে।
অভিযান চলাকালে ওই বাড়িটিতে থেমে থেমে বিস্ফোরণ হচ্ছে, তাই কমান্ডো অভিযান কখন শেষ হবে সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারছেন না কর্মকর্তারা।
তবে, জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের যে আশা তৈরি হয়েছিল সেই আশা নেই বলেই জানাচ্ছেন লেফটেন্যান্ট কর্ণেল রাশিদুল হাসান।
কারণ অভিযানের সময় তারা দেখেছেন কজনের গায়ে ‘সুইসাইডাল ভেস্ট’ পরা আছে।
“আত্মোৎসর্গের জন্যই তারা অপারেশন চালাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে” বলছিলেন সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা।
সূত্র : বিবিসি
Discussion about this post