• যোগাযোগ
শুক্রবার, মে ২৩, ২০২৫
Analysis BD
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home জাতীয়

আজ শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ৮ম শাহদাতবার্ষিকী

এপ্রিল ১১, ২০২৩
in জাতীয়
আজ শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ৮ম শাহদাতবার্ষিকী
Share on FacebookShare on Twitter

শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামান রহ.। বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন প্রতিভাবান যোদ্ধা। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ২য় কেন্দ্রীয় সভাপতি। তাঁর চমৎকার লেখনির মাধ্যমে আমরা সমাজ, সভ্যতা ও পাশ্চাত্যের নানা অসঙ্গতির ইতিহাস জানাতে সক্ষম হয়েছি। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুণগত পরিবর্তন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার লড়াইয়ে তিনি ছিলেন অন্যতম। দেশে-বিদেশে সভা-সেমিনারে তাঁর ব্যতিক্রমধর্মী উপস্থাপনা সেক্যুলার ও বামপন্থীদের ইসলামী আন্দোলনের ব্যাপারে হিংসা বাড়িয়ে দিয়েছে। এভাবেই তিনি জালিমদের হিটলিস্টে চলে আসেন। তিনি ছিলেন একাধারে একজন রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, লেখক, ইসলামী ব্যক্তিত্ব, সদালাপী প্রাণপুরুষ।

শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামান যেমন একদিকে সফল রাজনীতিবিদ ও সংগঠক অন্যদিকে একজন সফল সাংবাদিক ও সম্পাদক। রাজনৈতিক ময়দানে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের পাশাপাশি মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বাংলাদেশের রাজনীতি, ইসলামী সংগঠন ও আন্দোলন, গণতন্ত্র ও তার বিকাশ, নির্বাচন, গণমাধ্যম, সমাজ সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রচুর চিন্তা ও গবেষণা করে চলেছেন। তিনি বাংলাদেশে অবাধ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাসহ ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠা ও তার কৌশল নিয়ে বেশ কয়েকটি মৌলিক গ্রন্থ রচনা করেছেন।

জন্ম ও শিক্ষা জীবন:
মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ১৯৫২ সালের ৪ জুলাই শেরপুর জেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের মুদিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম ইনসান আলী সরকার ও মাতা মরহুমা সালেহা খাতুন। তিনি শেরপুর জিকেএম ইন্সটিটিউশন থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। তিনি প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বরাবরই প্রথমস্থান অধিকার করেছেন। অষ্টম শ্রেণীতে তিনি আবাসিক বৃত্তি পান। ১৯৬৭ সালে জিকেএম ইন্সটিটিউশন থেকে ৪টি বিষয়ে লেটারসহ এসএসসি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং আবাসিক বৃত্তি লাভ করেন। ১৯৬৭-৬৯ সেশনে জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে অধ্যয়ন করেন। কিন্তু দেশে ’৬৯-এর গণআন্দোলন শুরু হওয়ায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। ১৯৭২ সালে মোমেনশাহী নাসিরাবাদ কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৭৪ সালে ঢাকা আইডিয়াল কলেজ থেকে ডিস্ট্রিংশনসহ বিএ পাস করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হন। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবৃত্তি লাভ করেন। ১৯৭৬ সালে কৃতিত্বের সাথে সাংবাদিকতায় এমএ পাস করেন।

ছাত্র রাজনীতি:
শেরপুরের বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিত্ব মরহুম কাজী ফজলুর রহমানের আহ্বানে জিকেএম ইন্সটিটিউটে নবম শ্রেণীর ছাত্র থাকাকালীন তিনি ইসলামী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন। কলেজে পা দিয়েই তিনি ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি প্রথম ঢাকা মহানগরীর সভাপতি এবং পরে সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত হন। ১৯৭৮ সালের ১৯ এপ্রিল ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং একমাস পরই নির্বাচনের মাধ্যমে সেশনের বাকি সময়ের জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৮-৭৯ সালেও শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হন।

সাংবাদিকতা:
ছাত্রজীবন শেষে মুহাম্মদ কামারুজ্জামান সাংবাদিকতাকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। ১৯৮০ সালে তিনি বাংলা মাসিক ‘ঢাকা ডাইজেস্ট’ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৮১ সালে তাকে সাপ্তাহিক ‘সোনার বাংলা’ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। মাত্র ১ জন পিয়ন ও ১ জন কর্মচারী নিয়ে যাত্রা শুরু করে সোনার বাংলা। সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সোনার বাংলায় ক্ষুরধার লেখনীর কারণে এরশাদের শাসনামলে পত্রিকাটির প্রকাশনা নিষিদ্ধ হয়। ‘সোনার বাংলা’ রাজনৈতিক কলাম ও বিশ্লেষণ বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং পত্রিকাটি দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক সাপ্তাহিকের মর্যাদা লাভ করে। কারাগারে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মুহাম্মদ কামারুজ্জামান পত্রিকাটির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া তিনি নিজস্ব উদ্যোগে একটি ব্যতিক্রমধর্মী সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘নতুন পত্র’ প্রকাশ করেন। মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত দশ বছর দৈনিক সংগ্রামের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। মুহাম্মদ কামারুজ্জামান জাতীয় প্রেস ক্লাবের একজন সদস্য এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন। ১৯৮৫-৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি অবিভক্ত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে’র কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন।

ইসলামী আন্দোলন:
পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ১৯৭৯ সালে মুহাম্মদ কামারুজ্জামান জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন, একই বছর তিনি জামায়াতের রুকন (সদস্য) হন। ১৯৮১-৮২ সালে তিনি কিছুদিনের জন্য ঢাকা মহানগরী জামায়াতের জয়েন্ট সেক্রেটারি ছিলেন। ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ সালে তাকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। জামায়াতের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কমিটি ও লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য হিসেবে বিগত স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ১৯৮৩-৯০ পর্যন্ত তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৩-৯৫ সাল পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য।

জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান জামায়াতের নির্বাহী কমিটি, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ ও বিভিন্ন কমিটির সদস্য এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসায় পর গঠিত চারদলের কেন্দ্রীয় লিয়াজোঁ কমিটির অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে তার অবদান উল্লেখযোগ্য। ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্য প্রচেষ্টায় তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। এজন্য দলীয় রাজনীতি ছাড়াও বিভিন্ন ফোরামে সভা-সমাবেশ, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে তার সক্রিয় উপস্থিতি বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়।

শেরপুরের জনগনের ম্যান্ডেট:
১৯৮৬ সাল থেকে শেরপুর সদর তথা শেরপুর-১ আসনে জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান প্রতিদ্বন্তিতা করে উল্লেখযোগ্য ভোট পেয়ে আসছেন। সর্বশেষ দুটি সাধারন নির্বাচনে(২০০১ ও ২০০৮) তিনি খুব অল্প ভোটের ব্যাবধানে হেরে গেলেও ধারনা করা হয় তিনিই প্রকৃত বিজয়ী। কারণ,ঐ দুই নির্বাচনেই আওয়ামীলীগ প্রার্থী তার নিয়ন্ত্রনাধীন এলাকার ভোট কেন্দ্রগুলো দখল করে ব্যাপক কারচুপির মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে নেন। এত কিছুর পরও ২০০১ এর নির্বাচনে কামারুজ্জামান ৬৫,৪৯০ ভোট (বিজয়ী আওয়ামী প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ৮৬,১০১)এবং ২০০৮ এর ডিজিটাল নির্বাচনে ১,১০,০৭০ ভোট পান (বিজয়ী আওয়ামী প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ১,৩৬,১২৭)। ১৯৭১ সালে শেরপুরের নারকীয় ঘটনাগুলোর প্রত্যক্ষদর্শী মানুষগুলো বেঁচে থাকতে শহীদ কামারুজ্জামানকে এত বিপুল ম্যান্ডেট দেয়া কি কোন অর্থ বহন করে না? যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে তা যদি সত্য হতো তবে তিনি এখানে জনগণের ভালোবাসা পেলেন কী করে?

লেখক কামারুজ্জামান:
মুহাম্মদ কামারুজ্জামান দেশী বিদেশী বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কলাম লিখতেন। পত্র-পত্রিকা ও বিভিন্ন জার্নালে তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তার লিখিত বইগুলো পাঠক সমাদৃত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আধুনিক যুগে ইসলামী বিপ্লব, পশ্চিমা চ্যালেঞ্জ ও ইসলাম, বিশ্ব পরিস্থিতি ও ইসলামী আন্দোলন, সংগ্রামী জননেতা অধ্যাপক গোলাম আযম, সাঈদ বদিউজ্জামান নুরসী ইত্যাদি।

বিচারিক কার্যক্রম:
২০১৩ সালের ৯ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারক মো. শাহিনুর ইসলাম মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদন্ডের রায় দেয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ৬ জুন আপিল করেন মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। গত বছরের ৫ জুন এ বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের পক্ষে আপিলের যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন তার আইনজীবীরা। এরপর ৩ নবেম্বর আপিল বিভাগের তৎকালীন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ও বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির বেঞ্চ মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে সংক্ষিপ্ত আদেশে রায় ঘোষণা করেন।

যে কারনে মৃত্যুদন্ডাশের বিরোধীতা করলেন এক বিচারপতি:
আপিলের রায়ে জ্যোষ্ঠ বিচারপতি মো.আবদুল ওয়াহহাব মিঞা রায়ে বলেন, আপিল আংশিকভাবে মঞ্জুর হলো। ২, ৪ এবং ৭ নম্বর অভিযোগে আপিলকারী দোষী না হওয়ায় (মুহাম্মদ কামারুজ্জামান) খালাস দেয়া হলো। ৪ নম্বর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যৃদন্ডের স্থলে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হলো। ২ নম্বর অভিযোগের ক্ষেত্রে প্রসিকিউশন সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণে ব্যর্থ। কারণ দোষী প্রমাণিত না হওয়ায় অভিযুক্তকে খালাস দেয়া হলো। ৩ নম্বর অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদন্ডের আদেশ সংশোধন করে যাবজ্জীবন সাজা দেয়াই যুক্তিযুক্ত। কারণ ঘটনাস্থলে অভিযুক্তের উপস্থিতি নিয়ে সন্দেহ রয়েছে, এটা অনিশ্চিত। ৪ নম্বর অভিযোগের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে ,প্রসিকিউশন অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। ৭ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, এই অভিযোগটিও প্রসিকিউশন সন্দেহাতীত প্রমাণ করতে পারেনি। তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন ‘কামারুজ্জামান কোনো কোনো দিন সকালে, কোনো কোনো দিন দুপুরে আবার কোনো কোনো দিন সন্ধ্যার পর ডাক বাংলোর ক্যাম্পে আসতো। যদি তাই হয় তাহলে কিভাবে অভিযুক্ত প্রণিধানযোগ্য আল বদর নেতা হলেন? কিভাবে সাক্ষীরা তাকে দেখেছে এবং ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা রয়েছে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এ বিষয়গুলো আরো বিস্তারিত ট্রাইব্যুনাল বিবেচনা নিতে পারতো। তাই অভিযুক্তকে খালাস দেয়া হলো।

প্রাণভিক্ষা নাটক:
সরকার কামারুজ্জামান, তার পরিবার ও ইসলামী আন্দোলনকে অপদস্ত করার জন্য গুজব ছড়ায় যে, কামারুজ্জামান প্রাণভিক্ষার জন্য আবেদন করেছেন। দুইজন মেজিস্ট্রেটের কাছে তিনি এই কথা বলেছেন। এরপর মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের সাথে ১১ এপ্রিল শনিবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে পরিবারের সদস্যরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাক্ষাত করেন। সাক্ষাৎ শেষে তার ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামী বলেন, প্রাণভিক্ষা চাওয়া প্রসঙ্গে বাবা বলেছেন, প্রাণের মালিক আল্লাহ। রাষ্ট্রপতি জীবন দেয়ারও মালিক নন নেয়ারও মালিক নন যে তার কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবো। তিনি বলেন, বাবা বিচলিত নন, আমরা হাসিমুখে বিদায় দিয়ে গেলাম। তার সাথে কোন ম্যাজিস্ট্রেট দেখা করেননি বলেও জানান মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। বড় ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামী বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চওয়ার প্রশ্নই উঠে না। ক্ষমা চাইবেনতো শুধু আল্লাহর কাছে। তিনি বলেন, আমার বাবার স্বপ্ন ছিল এদেশে ইসলামী শাসন কায়েম হবে। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বেই এদেশে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।তিনি বলেন, তার বাবা বলেছেন, তার সাথে বিচারের নামে প্রহসন করা হয়েছে। ১৯ বছরের একজন কিশোরকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে। এর বিচারের ভার তিনি আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বাবার মনোবল দৃঢ় আছে। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। বাবা বিচলিত নন, আমরা হাসিমুখে বিদায় দিয়ে গেলাম।

জীবনের শেষ মুনাজাত:
১১ এপ্রিল পরিবারের সদস্যরা শেষ দেখা করতে গেলে তাদের নিয়ে জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামান কেন্ত্রীয় কারাগারে মোনাজাত করেন বলে তাকে দেখা করতে যাওয়া ২১ জন সদস্যের একজন প্রকাশ করেন। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, “আলহামদুলিল্লাহ। কাঁদতে কাঁদতে গিয়েছিলাম, হাসি মুখেই বিদায় জানিয়ে আসলাম প্রিয়জন প্রিয় নেতাকে। আমার দু চোখ, আমার হৃদয় সৌভাগ্যবান। আমি তাকে কাঁদতে দেখিনি বরং আমাদেরকেই সান্ত্বনা দিয়েছেন। উনি যখন বিদায় বেলায় আমাদেরকে নিয়ে মোনাজাত করছিলেন বলছিলেন, হে আল্লাহ আমি দেশের জন্য কাজ করেছি ইসলামের জন্য কাজ করেছি যারা এই অন্যায় বিচার করলেন, এই বিচারে সহযোগিতা করেছে এদের বিচার আপনি দুনিয়াতে এবং আখিরাতে উভয় জায়গায় করবেন। আমি আমার দুই হাত দিয়ে কোন অন্য কাজ করিনি আমার মুখ দিয়ে কাওকে গালি দেইনি আমার সম্পর্কে আপনি ভালো জানেন। আপনি আমাকে শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন। আমার পরিবার, স্বজনসহ সকলকে ধৈর্য ধারাণ করার তৌফিক দিন। মুনাজাত শেষে উনি শেরপুরসহ দেশবাসী এবং বিশ্ববাসীকে সালাম জানিয়েছেন। সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।”

অনন্তকালের যাত্রা:
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী আদেশে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের নামে জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বিশিষ্ট সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ২০১৫ সালের ১১ এপ্রিল রাত রাত ১০টা ৩০ মিনিটে হত্যা করা হয়। ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন।

চির নিন্দ্রায় শায়িত শহীদ কামারুজ্জামান:
শেরপুরে নিজের গড়া এতিমখানার পাশে চিরনিন্দ্রায় শায়িত হলেন শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। দাফনের পর থেকেই কবর জিয়ারতের জন্য নামে মানুষের ঢল। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে গতকাল রোববার ভোরে শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জমানকে দাফনের পর বেলা বাড়ার সাথে সাথেই হাজার হাজার মানুষ তার কবর জিয়ারত করতে আসছেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন কামারুজ্জামানের রূহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করছেন। এ সময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।

মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার নিজের গড়া শেরপুর সদর উপজেলার কুমরী বাজিতখিলা এতিমখানার পাশেই তার লাশ দাফন করা হয়। গতকাল রোববার ভোর ৫টা ২০ মিনিটে দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে রোববার ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে এতিমখানা মাঠে তার নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কামারুজ্জামানের আত্মীয়সহ স্থানীয়রা অংশগ্রহণ করেন। আশেপাশে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ির কারণে তারা অংশগ্রহণ করতে পারেনি। দাফনস্থলে গণমাধ্যম কর্মীসহ স্থানীয় এলাকাবাসীর প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ ছিল।

সারারাত প্রচুর ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে তার গ্রামের বাড়ির পাঁচ বর্গ কিলোমিটারের বাইরে হাজার হাজার মানুষ রাতভর অপেক্ষা করেও জানাযায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি। এমনকি ঢাকা থেকে লাশের সাথে যাওয়া গণমাধ্যম কর্মীরাও স্থানীয় বাজিতখিলা বাজারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকেছিলেন। রাতে ওই এলাকায় প্রচুর ঝড়-বৃষ্টি হয়। পুরো এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। ভোর ৪টার দিকে বিদ্যুৎ আসলেও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। তারপরও জনসমাগম কমেনি।

নিকটাত্মীয় ও কিছু গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে নামাযে জানাযার পর ৫টা ৪০ মিনিটে উপস্থিত হাজার হাজার জনতার গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও বাধা দেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মাঠের পূর্ব অংশের অর্ধেক লোক জানাযায় শরীক হতে পারেনি। মাঝখানে ব্যারিকেড দেয়াছিল। এ সময় জনতা নারায়ে তাকবীর শ্লোগানে আকাশ বাতাশ মুখরিত করে তোলে।

জাতীয় মসজিদে গায়েবানা জানাযা:
১২ এপ্রিল বাদ যোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জামায়াতের সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ডা. রেদওয়ানউল্লাহ শাহেদী, ঢাকা মহানগরী মজলিসে শূরা সদস্য ও মতিঝিল থানা আমীর কামাল হোসেনসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী ও মুসল্লি এতে উপস্থিত ছিলেন। শহীদ কামারুজ্জামানের জন্য দোয়া করার উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সৌদি আরবের জেদ্দা, তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা, পর্তুগালসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গায়েবানা নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।

১১ এপ্রিল ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার শহীদ মুহাম্মদ কামারুজ্জামান রহ.-কে খুন করে যে আন্দোলনকে নিভিয়ে দিয়ে চেয়েছিল সে আন্দোলনকে নেভানোর সাধ্য তাদের নেই। আল্লাহ তাঁর নূরকে প্রজ্জলিত করবেন, এটা আল্লাহর ওয়াদা। মহান রাব্বুল আলামীন শহীদ কামারুজ্জামান ভাইকে কবুল করুন। তাঁকে দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত করুন। আমিন।

সম্পর্কিত সংবাদ

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে
Home Post

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
কোটা, কোটা আন্দোলন ও এর ইতিহাস
কলাম

কোটা, কোটা আন্দোলন ও এর ইতিহাস

জুলাই ১৫, ২০২৪
আওয়ামী আইনে বদলিই দুর্নীতির শাস্তি!
Home Post

আওয়ামী আইনে বদলিই দুর্নীতির শাস্তি!

জুলাই ৮, ২০২৪

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • একজন বীর শহীদ তিতুমীর: মুসলিম জাতির প্রেরণা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির যত মামলা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • বিতর্কিত আজিজের সাক্ষাৎকার নিয়ে লে. কর্নেল মুস্তাফিজের বিশ্লেষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রক্তাক্ত ২৮ ফেব্রুয়ারি: নির্বিচার গণহত্যার দিন

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫
ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫
নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারার প্রবর্তন অপরিহার্য

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারার প্রবর্তন অপরিহার্য

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
হাওর ধ্বংস করে আবদুল হামিদের প্রমোদ সড়ক

হাওর ধ্বংস করে আবদুল হামিদের প্রমোদ সড়ক

মার্চ ২০, ২০২৫
  • Privacy Policy

© Analysis BD

No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে

© Analysis BD