মাসুদ মজুমদার
লেখক ও বিশ্লেষক
গত সপ্তাহর কলামে ট্রাম্প প্রশাসন ও ইহুদি পরিকল্পনা সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। সেই লেখায় বর্তমান পরিস্থিতির ওপর খানিকটা আলোকপাত করে কিছু ইতিহাস নিয়েও চর্চা করেছি।
এটা হলো ঘটনাপরম্পরার এক দিক। অন্য দিকে আছে সাম্রাজ্যবাদের বীভৎস রূপ। মানুষ ও মানবতার বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদ কত নিষ্ঠুর, ভয়াবহ ও জঘন্য হতে পারে তার নমুনা। যুদ্ধ-ধ্বংস কাকে বলে তার উপমা। মানুষের মৃত্যু নিয়ে মানুষ কত হীন, ঘৃণ্য ও দুর্বিনীত আচরণ করতে পারে তার উদাহরণ পশ্চিমা শক্তির যুদ্ধবাদী নীতি।
এটা সবার জানা কথা, সাম্রাজ্যবাদী শক্তি অস্ত্র বানায় নিজ গরজে; ব্রেকফাস্ট কিংবা ডিনারের জন্য নয়, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য। লাখ লাখ টন বোমা পড়েছে আফগানিস্তানের পাথুরে মাটি ও পাহাড়ের ওপর। দুটো বিশ্বযুদ্ধে যে পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ ব্যবহৃত হয়েছে, সমপরিমাণ অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে আফগানিস্তানে অসম যুদ্ধে। অধিকন্তু, অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র-ক্ষেপণাস্ত্র যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর সময়ে আবিষ্কৃত হয়েছে, ইরান-ইরাক যুদ্ধ, কুয়েত আক্রমণ ও উদ্ধারে তা ব্যবহৃত হতে পারেনি, পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালানো সম্ভব হয়নি। আফগান শিশু-নারী-বৃদ্ধ অসহায় বেসামরিক মানুষের ওপর সেটাও পরীক্ষা করা হয়েছে। অবশেষে পরীক্ষার ময়দান সম্প্রসারিত হয়ে পাকিস্তান থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও ফিলিস্তিন পর্যন্ত পৌঁছল।
সব যুদ্ধ শুরুর আগে ডব্লিউ বুশ এবং যুদ্ধবাজ পশ্চিমা শক্তি যুদ্ধের নৈতিক কারণ দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছিল। স্লোগান ছিল মানবতাবিধ্বংসী অস্ত্র উদ্ধার কিংবা ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’। বিশ্ববিবেক দর্শকের ভূমিকা পালন করলেও মার্কিনি কারণের সাথে একমত পোষণ করেনি, বরং এই যুদ্ধ মানবতার বিরুদ্ধে পরাশক্তির একতরফা নগ্নহামলা হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে। একজন ফরাসি সাংবাদিক জোর দিয়ে বলেছেন, ‘বুশের যুদ্ধের কোনো নৈতিক কারণ নেই। মার্কিনিরা নিজস্ব প্রয়োজনে একজন প্রতিপক্ষ দাঁড় করানোর গরজ বোধ করত, যদি বাস্তবে কোনো প্রতিপক্ষ না-ও থাকত।’ এই একটি তথ্যই আরোপিত যুদ্ধের আসল মতলব চিহ্নিত করে দেয়। ইরাক যুদ্ধে কিছু দিনের বন্ধু সাদ্দামকে খলনায়ক সাজানো হলো। মারণাস্ত্র আছে- এমন অভিযোগ খাড়া করল। বাস্তবে সাদ্দাম এবং গাদ্দাফি নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার, গোপন বিশ্ব সরকার ও ডলারের ব্যাপারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন- নিজেদের তেলসম্পদ আগলে রাখতে চেয়েছিলেন, আসল অপরাধ এটাই। দখল শেষ হওয়ার পর বলা হলো- ইরাকে মানবতাবিধ্বংসী কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি। তত দিনে বাগদাদ সভ্যতার অবশিষ্ট কিছু রইল না। তারপর টার্গেট হলো দামেস্ক সভ্যতা। এরপর পারস্য নয় তো অন্য কোনো মুসলিম জনপদ হবে তাদের টার্গেট। যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে টার্গেট করে ইরাককে সমর্থন জুগিয়েছে। শিয়া-সুন্নি বিভেদের জন্ম দিয়েছে। সেটা ছিল সাদ্দামকে দিয়ে ইরানকে নিঃশেষ করার উদ্যোগ।
আফগানিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ছায়াযুদ্ধের ফলাফল মেলানোর দায় কেউ বোধ করেননি। সবাই একমত যে, পৃথিবী পাল্টে যাচ্ছে। ১১ সেপ্টেম্বর পাল্টানোর দামামা বাজিয়েছে। এই যুদ্ধের শেষ কোথায়, কেউ জানে না। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির অভিন্ন স্বার্থের মেলবন্ধনে যে যুদ্ধ শুরু হয়, তা শেষ হয় না। ট্রাম্পের আমেরিকা, ইউরোপ এবং ইসরাইল এখন সেই যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে যাচ্ছে। তাই ট্রাম্প নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডারের গোপন মিশন ও ভিশন বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হননি- তা কিভাবে অস্বীকার করব!
একটি ঘটনার নানামুখী বিশ্লেষণ হতে পারে। একই ঘটনা দেখা ও পর্যবেক্ষণ ভিন্ন ভিন্ন মানুষ ভিন্ন ভিন্নভাবে করতে পারে। এটি কখনো কখনো আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। কখনো বা মানবিক সীমাবদ্ধতা কিংবা মেধার বিষয়ও হতে পারে। চিন্তা করলেই মানুষ যেমন চিন্তাবিদ বা চিন্তানায়ক হয় না, বিশেষ দৃষ্টিতে অন্বেষা বা দর্শন করলেই সবাই দার্শনিক হন না। তাই অতীত ও বর্তমানের যুদ্ধগুলো তো বটেই; আফগান যুদ্ধ, তালেবান সরকার ও ওসামা বিন লাদেনকে সবাই একই সমান্তরাল ভাব ও ভাষায় বিশ্লেষণ করবেন- এটা ভাবা যায় না। আইএস, বোকো হারাম কিংবা চরমপন্থী উগ্রবাদও ভিন্ন ভিন্নভাবে মূল্যায়িত হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র ভাবনা, মানবাধিকার দৃষ্টিভঙ্গি, স্বাধীনতার চিন্তা সম্পর্কে আজকের বিশ্বের প্রায় সব মানুষ, মুক্ত বিবেক একমত যে, মার্কিন শাসকেরা ডাবল চিন্তা বা স্ট্যান্ডার্ড এতটা আত্মস্থ করেছেন যে, তাদের প্রশাসন কোনোভাবেই মানবিক হতে পারে না। অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েই তারা বিশ্বের ওপর একক প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে চান। মনে হয়, যারা টুইন টাওয়ার এবং পেন্টাগনকে টার্গেট বানিয়েছে তারা মার্কিন জনগণ এবং মার্কিনিদের স্বাধীনতাকে, রাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডলে উদারনৈতিক শাসনতান্ত্রিক চর্চা ও আইনের শাসনের প্রতি চ্যালেঞ্জ করতে চায়নি। পশ্চিমা নষ্ট ও বস্তুবাদী সভ্যতার নাভিমূলে কিংবা অপসংস্কৃতির বেদিতে, প্রযুক্তির স্নায়ুকেন্দ্রকেও আঘাত করতে চায়নি। সরাসরি আঘাতটা করতে চেয়েছে অর্থনৈতিক অহম ও সামরিক দম্ভের ওপর; বিশ্ববাসীর ওপর দারোগার মতো ছড়ি ঘোরানোর ধৃষ্টতা প্রদর্শনের ওপর। এটা যেন দোর্দণ্ড প্রতাপশালী সবলের বিরুদ্ধে দুর্বলের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, ক্ষীণকণ্ঠের প্রতিবাদ। অবশ্য কোনো ধ্বংসই সমর্থনযোগ্য নয়, কোনো ভালো কাজই খারাপ পদ্ধতিতে হয় না।
প্রতিবাদের ভাষায় সংযম থাকে না, ব্যাকরণ থাকে না। এটা কখনো কখনো হঠকারিতায় রূপান্তরিত হতে পারে, হতে পারে আত্মঘাতী। মজলুম যখন জালেমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আর কোনো ভাষা খুঁজে পায় না, তখন সে ভাবতেই পারে- তার প্রতিবাদকে ঘৃণায় রূপান্তর করা ছাড়া উপায় নেই। ঘৃণার ভাষা সাধারণত বহুমাত্রিক, এর প্রকাশ সংযমনির্ভর নয়। তবে আমরা ঘৃণা সমর্থন করি না। ইরাক কিংবা আফগান যুদ্ধ- আসলে এটা যুদ্ধ নয়, ইরাক ও আফগান ‘যুদ্ধ’ নিয়ে ভাবলে বলতে হবে- এটা আরোপিত যুদ্ধ, অসম যুদ্ধ। এসব যুদ্ধে আমেরিকা একতরফা একটি ছায়ার বিরুদ্ধে অসম যুদ্ধ করছে। এই আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য কার্যকর প্রতিপক্ষ ছিল না। একদল মজলুম আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছে মাত্র। সংখ্যায় তারা ছিল এতই কম যে, আত্মরক্ষাকারী একজন তালেবান কিংবা ইরাকি-লিবীয় কিংবা একজন আলকায়েদা সদস্যের তুলনায় অসহায় নিরস্ত্র শিশু-বৃদ্ধ-নারীর সংখ্যা ছিল হাজার গুণ। ফলে প্রতিটি গোলা-বোমা প্রতিবারই কেড়ে নিয়েছে নিরস্ত্র এমন কোনো বনি আদমকে, তার পরিচয় হয়তো অসহায় নারী-শিশু কিংবা বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। এ কারণেই বলা যায় যে, এটা যুদ্ধ নয়, একতরফা গণহত্যা; মানুষ ও মানবতার বিরুদ্ধে অস্ত্রবাজদের অস্ত্র পরীক্ষার মহড়া।
ইউরোপ যুদ্ধের বিভীষিকা প্রত্যক্ষ করেছে। ঠাণ্ডা মাথায় আমেরিকা যখন গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছিল, ইউরোপ তখন যুদ্ধাতঙ্ক নিয়েও মার্কিনিদের সব ধরনের মদদ জুগিয়েছে। ফলে এটা রূপ পেয়েছে ইঙ্গ-মার্কিন হামলা হিসেবে। তারা চেয়েছে যুদ্ধটা যেন এশিয়ার মাটিতেই শেষ হয়ে যায়। প্রতিপক্ষ দাঁড়ানোর আগে হত্যার বিনিময়ে যুদ্ধ থেকে বাঁচা যায়। আসলে আরোপিত যুদ্ধ তাৎক্ষণিক ফলাফল নির্ণয় করে দেয় না। ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নিয়ে একটি প্রলম্বিত প্রতিক্রিয়াজাত ফলাফলের জন্ম দেয়। আফগান আক্রমণ মার্কিন অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছে। একসময়ের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ এখন আদর্শিক লড়াইকে স্পর্শ করে বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপট রচনা করেছে।
নতুন করে জালেম-মজলুমের লড়াইয়ে আমরা দেখলাম ইরাক-ইরান-কুয়েত যুদ্ধে একাধিক সমৃদ্ধ ও ঐতিহাসিক জনপদ ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন মধ্যপ্রাচ্যে চলমান যুদ্ধের পরিধি বেড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প পুরো মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দিলেন। সাতটি মুসলিম দেশের নাম উল্লেখ করলেও তার যুদ্ধ পুরো মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে। ট্রাম্প অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বসতির পক্ষে নির্লজ্জ ওকালতি শুরু করলেন। তেল আবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী জেরুসালেমে নেয়ার পরিকল্পনার কথা বললেন। এটাই তো নীল নদ থেকে ফোরাত পর্যন্ত ইসরাইলি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দ্বিতীয় উদ্যোগ।
প্রকৃত পরিস্থিতি কী হতে যাচ্ছে, তার একটি নির্মোহ পক্ষপাতমুক্ত ইতিহাস চাই। সেটা হবে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের লড়াইয়ের ইতিহাস। আদর্শিক সংগ্রামের ইতিহাস। সেটা রাজা-বাদশাহ কিংবা রাজরাজড়াদের নয়। মানুষের ইতিহাস চাই, সময়ের ইতিহাস চাই। সেই ইতিহাসে ম্যান্ডেলা, ফিদেল ক্যাস্ট্রো এবং চে গুয়েভারাদের নামও উঠে আসবে। থাকবে লুথারের নাম। মহাকাল থেকে ১১ সেপ্টেম্বর ২০০১ সাল থেকে ২৫ নভেম্বর ২০০১ তালেবান ঘাঁটি কুন্দুজের পতন পর্যন্ত মাত্র ৭৫ দিন বা দুই মাস ১৫ দিনের ইতিহাস সব ফলাফল নির্ণয় করে দেয়নি। আমরা আমাদের মতো করে ইতিহাস তুলে ধরলে ঝোঁকপ্রবণতা কাজ করতে পারে। পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই এই সময় পর্যন্ত, বিশেষত বুশ থেকে ট্রাম্প পর্যন্ত একটা নির্মোহ ইতিহাস চর্চা অত্যন্ত জরুরি।
মহাকাল থেকে সময়কে বিভাজন করা দুঃসাধ্য। তার পরও কোনো কোনো সময় সন্ধিক্ষণ অধিকতর গুরুত্ববহ। আমরা যারা বিংশ শতকের শেষটা প্রত্যক্ষ করেছি, একবিংশ শতকের সূচনাপর্ব অতিক্রম করছি, তারা অনেক উত্থান-বিকাশ ও পতনের নীরব সাক্ষী। সভ্যতার সঙ্ঘাত, সত্য-মিথ্যার লড়াই, সমাজবাদের পতন, ধনতন্ত্রের আধিপত্য, জাতিরাষ্ট্রের উত্থান, স্নায়ুযুদ্ধ, একক পরাশক্তির পদচারণা, বিজ্ঞানের উৎকর্ষ, মানবিক বিপর্যয়ের হলাহল প্রভৃতির সাক্ষ্য দিতে আমাদের উপস্থিতি অবশ্যই ইতিহাসকে বেশি প্রভাবিত করবে। তাই আগামী প্রজন্মের জন্য কিছু তাজা ভাবনা রেখে যাওয়ার দায়টা কম নয়। প্রশ্ন জাগে, সভ্যতার সঙ্ঘাতের দোহাই দিয়ে যে যুদ্ধটা পাশ্চাত্য শুরু করেছে, সেটাই কি ট্রাম্প প্রকাশ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন না? এর সঠিক মূল্যায়ন ও বিশ্লেষণ ইতিহাসের পূর্বাপর অনেক ঘটনাকে টেনে তুলবে। সেটাই মূল্যায়িত হওয়া প্রয়োজন। ডান-বাম মধ্যপন্থী নানামুখী লেখক নানাভাবে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করবেন, এটাই স্বাভাবিক। এই স্বাভাবিকতা রক্ষার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ অবস্থানে দাঁড়িয়ে সাতটি মুসলিম দেশের জনগণের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের কূটনৈতিক যুদ্ধ নিয়ে ভাবা উচিত। এর আগে ইউরোপের দেশে দেশে ও অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিমবিদ্বেষ কেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠল, তা-ও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কেন নবী করিম সা:-এর কার্টুন আঁকা হয়, মসজিদে কেন হামলা হয়, হিজাব স্কার্ফ কেন কটাক্ষের বিষয় হয়? মুসলিম হলে বিমান থেকে নামিয়ে দেয়ার মাজেজা কী!
আগেই উল্লেখ করেছি, মানবিক সীমাবদ্ধতার প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, মানুষ এক সাথে সামগ্রিক চিন্তা করতে পারে না। যা ভালো জানে তা শুধু নিজের সম্পর্কে। বাকিটা নির্ভর করে ধারণা-অনুমান, তথ্য-উপাত্ত ও নির্ভরশীলতার ওপর। মানুষ নিজের পেছনটা দেখতে পায় না; কিন্তু তার পেছনকে অস্বীকার করতে পারে না। আজকের প্রেক্ষাপটে চরমপন্থী উত্থান ও ‘জঙ্গিবাদ’ ছড়িয়ে পড়ার কারণ চিহ্নিত হওয়া যেমন জরুরি, তেমনি শোষক নিপীড়ক এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তির ভূমিকাও সামনে আনতে হবে। তাহলে ট্রাম্পের যুদ্ধ ঘোষণা কোনো ফোবিয়া, না গোপন বিশ্ব সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার বাস্তবায়নের বর্ণবাদী ইসরাইলি পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে- সেটাও পরিষ্কার হয়ে যাবে।
Discussion about this post