অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
প্রেসিডেন্ট মুরসির ইন্তেকাল নিয়ে যখন বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের বিতর্ক তোলা হচ্ছে তখন এরই মাঝে চাঞ্চল্যকার তথ্য দিয়ে সামনে এসেছেন পাকিস্তানের পারমানবিক বোমা আবিস্কারের পেছনের মুল কারিগর এবং মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরমানু বিজ্ঞানী ড. আব্দুল কাদির খান।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদ পর্যবেক্ষণকারী ব্রিটিশ ওয়েবসাইট মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে উঠে এসছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রেসিডেন্ট মুরসির ইন্তেকালের পর পরমানু বিজ্ঞানী ড. আব্দুল কাদির খান ফেসবুকে কিছু তথ্য দিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। মুলত এই স্ট্যাটাসে তিনি ২০১৩ সালে মিশরে হওয়া সামরিক অভ্যুত্থানের পেছনের ইতিহাস ফাঁস করেছেন। একই সাথে তিনি এই ঘটনার পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল এবং আরো কিছু মিশরীয় এজেন্টেদের ভুমিকাও তুলে ধরেছেন।
ড. আব্দুল কাদির খান বলেন, প্রেসিডেন্ট মুরসি দায়িত্ব গ্রহনের পর রাশিয়া, ভারত ও পাকিস্তান সফরে এসেছিলেন। কিন্তু অনেকেই জানেনা যে, সেই সফরকালে প্রেসিডেন্ট মুরসি রাশিয়ার সহযোগিতা নিয়ে মিশরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ একটি পারমানবিক চুল্লী চালু করতে সম্মত হয়েছিলেন। মিশরের বিদ্যুৎ সংকট দূর করার জন্যই তিনি এই পারমানবিক চুল্লী প্রকল্প স্থাপন করতে চেয়েছিলেন। শুধু এই একটি নয়, পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে একই উদ্দেশ্যে আরো একটি পারমানবিক চুল্লী প্রকল্প চালু করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল।
কাদির খান বলেন, আমি মিশরের আভ্যন্তরীন বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাইনা। তবে মিশরের মানুষের প্রকৃত সত্য জানা উচিত। মিশরীয়রা কি আদৌ জানে যে, মুরসির এই সফরটি গোটা পশ্চিমা জগতকে কতটা আতংকে ফেলে দিয়েছিল? মুরসির পরিকল্পনা সফল হলে মিশরের বিদ্যুৎ সংকট চিরতরে নিরসন হয়ে যেতো। পাশাপাশি, মিশর তখন আফ্রিকার একটি বড় অংশেও বিদ্যুৎ রফতানি করতে সক্ষম হতো।
তিনি আরও বলেন, মিশরীয় নাগরিকদের এটাও জানা উচিত যে, প্রেসিডেন্ট মুরসির সময়ে মিশর জার্মানীর কাছ থেকে দুটো সাবমেরিন গ্রহন করেছিল। ইসরাইল সেসময়ে জার্মানীর উপর ব্যপক চাপ সৃষ্টি করেছিল যাতে মিশরকে এই সাবমেরিন না দেয়া হয়। এই সাবমেরিনটি দিয়ে মিশর সাবমেরিন থেকে আকাশে চলাচলরত বিমানে ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করার সক্ষমতা অর্জন করে- যা ইসরাইলকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয়।
কাদির খান বলেন, অনেকেই জানেনা যে, প্রেসিডেন্ট মুরসি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে ক্ষেপনাস্ত্র সহযোগিতা চেয়েছিলেন। রাশিয়া সেই সহযোগিতা করতে রাজিও হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট মুরসি চুক্তি করতে তার পক্ষ থেকে দূত পাঠালেও পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কারনে চুক্তিটি আর সম্পন্ন করা যায়নি।
মিডল ইস্ট মনিটরের আরেকটি খবর থেকে জানা যায়, পশ্চিমা মহল থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাকে (হামাস নিয়ন্ত্রিত) মিশরের সাথে যুক্ত করে নেয়ারও একটা প্রস্তাব প্রেসিডেন্ট মুরসিকে দেয়া হয়েছিল। তিনি সরাসরি তা প্রত্যাখান করেন। হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সাবেক প্রধান খালিদ মিশাল কাতারের দোহায় প্রেসিডেন্ট মুরসির গায়েবানা জানাজায় যোগ দিতে এসে এই তথ্য প্রকাশ করেন।
মিডল ইস্ট মনিটরের প্রতিবেদনটি পড়ুন: Pakistan nuclear physicist reveals new information about Egypt’s Morsi