মঙ্গলবার, অক্টোবর ১৪, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home ফেসবুক থেকে

ফেলানী হত্যার এক যুগ

জানুয়ারি ৮, ২০২৩
in ফেসবুক থেকে
Share on FacebookShare on Twitter

মেয়েটার বাড়ি কুড়িগ্রামে। সে তার বাবার সাথে ভারতে থাকে। সেখানে নয়াদিল্লিতে একটি বাড়িতে কাজ করে মেয়েটি। তার বাবা দিনমজুরের কাজ করে নয়াদিল্লিতেই। সীমান্তের মানুষ অনায়াসেই এপার অপার যাতায়াত করে, আত্মীয়তা করে। সামাজিকতা রক্ষা করে। মেয়েটি ও তার বাবা যখন ভারতে যায় তখন সীমান্তে কাঁটাতার ছিল না। তারা প্রায় ১০ বছর ধরে নয়াদিল্লীতে থাকে। বছরে কয়েকবার তারা সীমান্ত পার হয়।

২০১১ সালে মেয়েটির বিয়ে ঠিক হয়। পাত্রের বাড়ি কুড়িগ্রামেই, মেয়েটির খালাতো ভাই। বিয়ের প্রস্তুতি নিতে মেয়েটির বাবা ও মেয়েটি বাংলাদেশে ফিরে আসতে গিয়ে দেখে সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়া। কাঁটাতারের পাশে মই লাগিয়ে পারাপারের ব্যবস্থাও আছে। মেয়েটির বাবা পার হয়ে যান আগে। এরপর মেয়েটি পার হতে গেলে তার কাপড় আটকে যায় কাঁটাতারের সাথে। ভয়ে চিৎকার করে ওঠে মেয়েটি।

তার চিৎকার শুনে সচকিত হয় ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)। বিএসএফ সদস্য অমীয় ঘোষ কোনো কিছু জিজ্ঞাসা না করেই পাখি শিকারের মতো করে নির্দয়ভাবে ভয়ার্ত মেয়েটিকে টার্গেট করে গুলি করে। আর্তচিতকার করে ওঠে মেয়েটি। এটা তার শেষ চিৎকার। গুলিবিদ্ধ মেয়েটির হাত ফসকে যায়। সে ঢলে পড়ে। কিন্তু তার কাপড় আটকে থাকে কাঁটাতারে। ঝুলতে থাকে মেয়েটি।

তার বাবা চেয়েছেন ঝুলে থাকা মেয়েটিকে নামিয়ে আনতে। চিকিতসার ব্যবস্থা করতে। না! বিএসএফ তা হতে দেয়নি। মেয়েটি ঝুলে ছিল প্রায় পাঁচ ঘন্টা। কোনো ফাঁসীর আসামীকেও মনে হয় এতক্ষণ ঝুলতে হয় না। ১৫ বছরের সেই মেয়েটির নাম ফেলানী। গতকাল ৭ জানুয়ারি ছিল ফেলানী হত্যার ১২ বছর।

আমার জানামতে ফেলানীর মৃত্যুর এই মর্মান্তিক খবর ছাপে শুধুমাত্র আমার দেশ পত্রিকা। কয়েকদিন এই নিয়ে রিপোর্ট করার পর অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমগুলোতেও আসা শুরু করেছিলো। এদিকে বাংলা ব্লগগুলো ছিল তখন তুমুল জনপ্রিয়। বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী হেলাল এম রহমান ভাই ছিলেন আমার দেশ পাঠকমেলার দায়িত্বশীল। আমার যতদূর মনে আছে তাঁর একটি বিপ্লবাত্মক লেখা সেসময় ৭ টি ব্লগে স্টিকি পোস্ট/ নির্বাচিত পোস্ট ছিল। তার নেতৃত্বে চট্টগ্রামে প্রথম ফেলানী হত্যার প্রতিবাদে ভারতের বিরুদ্ধে মানববন্ধন হয় চট্টগ্রামে। এরপর ঢাকায় এবং সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।

টুইটার স্টর্মের মাধ্যমে সারাবিশ্বের ভারতীয় হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মানুষ কথা বলতে থাকে। বাংলাদেশের মেইন্সট্রিম মিডিয়াও এই আলোচনা শুরু হয়। এতেও বোধোদয় হয় না বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের। কিন্তু এই নিয়ে বাংলাদেশের অনলাইন এক্টিভিস্টরা ও পৃথিবীর নানান মানবাধিকার সংস্থা সোচ্চার থাকে। এদিকে বিএসএফ ধারাবাহিকভাবে সীমান্তে হত্যা জারি রাখে।

২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার আটরশিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান নামক ব্যক্তিকে বিএসএফ হাত-পা বেঁধে বিবস্ত্র করে রাইফেলের বাঁট ও লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে পেটায়। এর ভিডিও কিছুদিন পর ভাইরাল হয়। এতে আবারো অনলাইন এক্টিভিস্টরা ক্ষিপ্ত হয়। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার ও ভারত সরকার থাকে একদম নির্বিকার।

২০১২ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে বাংলাদেশ ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার্স নামে একটি হ্যাকার গ্রুপ ভারতের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করে। তারা একটি ভিডিও বার্তা দেয় যান্ত্রিক কন্ঠে।

// হ্যালো বাংলাদেশের নাগরিকরা, আমরা বাংলাদেশ ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারস। এখন সময় আমাদের চোখ খুলবার। বিএসএফ এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করেছে, তাদের গুলিতে আহত হয়েছে আরও ৯৮৭ বাংলাদেশি। অপহৃত হয়েছে হাজারো মানুষ। এটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। তারা অবিচার করছে। সংকটময় এ মুহূর্তে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে আমাদের কিছু দায়িত্ববোধ রয়েছে, আমরা চাই ভারত সরকার নিরপরাধ বাংলাদেশিদের হত্যা করা বন্ধ করুক। নতুবা আমরা ভারতীয়দের বিরুদ্ধে সাইবার-যুদ্ধ শুরু করব। এটি চলতেই থাকবে।//

ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার্স শুধু ভারতীয় সাইট ডাউন করেনি। একইসাথে বাংলাদেশ সরকারের নীরবতায় ক্ষুব্দ হয়ে বাংলাদেশেরও অনেক সরকারি সাইট ডাউন করে দিয়েছিল। ভারতের শেয়ার মার্কেট তিনদিন বন্ধ থাকে এই সাইবার আক্রমণে। ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার্সের আহ্বানে চীন ও পাকিস্তানের কিছু হ্যাকার গ্রুপ সমানতালে ভারতের বিভিন্ন সাইট ডাউন করে দেয়। এই ঘটনায় সারাবিশ্বের গণমাধ্যমের নজর কাড়তে সক্ষম হয় ফেলানী হত্যা ইস্যু।

সারাবিশ্বের চাপে ২০১৩ সালের ১৩ অগাস্ট কোচবিহারে বিএসএফের বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যার বিচারকাজ শুরু হয়। সেখানে ফেলানীর বাবা ও মামা হানিফ সাক্ষ্য দেন। ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাদ দেয় ভারতের কোচবিহারের সোনারী ছাউনিতে স্থাপিত বিএসএফের বিশেষ আদালত।

পুনঃবিচারের দাবিতে ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে ভারত সরকারের নিকট আবেদন করেন। পরে বিজিবি-বিএসএফের দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে ফেলানী হত্যার পুনঃবিচারের সিদ্ধান্ত হয়।

২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনঃবিচার শুরু করে বিএসএফ। ওই বছরের ১৭ নভেম্বর ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বিএসএফের বিশেষ আদালতে অমিয় ঘোষকে অভিযুক্ত করে পুনরায় সাক্ষ্য প্রদান করেন এবং অমিয় ঘোষের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। ২০১৫ সালের ২ জুলাই এ আদালতে অমিয় ঘোষ আবারও বেকসুর খালাস পান।

২০১৫ সালের ১৩ জুলাই ভারতীয় ‘মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ’ (মাসুম) ফেলানী খাতুন হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন করে। ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর শুনানীর পর ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে বারবার তারিখ পিছাতে থাকে। ফলে থমকে যায় ফেলানী খাতুন হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি। ফেলানী বাংলাদেশের নাগরিক। অথচ বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে ফেলানীর পাশে দাঁড়ায়নি। এই কারণেই হয়তো বিচার পাওয়া আরো কঠিন হচ্ছে।

আজ ১২ বছর হলো। বিচার হলো না। বরং সীমান্তে মানুষ হত্যা হচ্ছেই। পৃথিবীর আর কোনো সীমান্তে এত হত্যা হয় না যত হত্যা হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। অথচ ভারতের সাথে আমাদের কোনো যুদ্ধ। উপরন্তু দুই দেশের ক্ষমতাবানরা দাবি করে আমরা নাকি বন্ধু রাষ্ট্র! আজিব!

সম্পর্কিত সংবাদ

ইসলাম

আজ ইমাম হাসান আল বান্নার ৭৫ তম শাহদাতবার্ষিকী

ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪
ফেসবুক থেকে

আজ মুন্সিগঞ্জের বাবা আদম শহীদের শাহদাতবার্ষিকী

সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩
ফেসবুক থেকে

যেভাবে বাংলাদেশে কেয়ারটেকার সরকার এলো! (পর্ব – ০৩)

জুলাই ১৭, ২০২৩

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • ‘হেল্প সেল’ এর তৎপরতা বন্ধ করতেই ছাত্রদল নেতা নুরুকে হত্যা?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • অনৈসলামিক কর্মকান্ড বন্ধে আল্লামা সাঈদীর ভূমিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • বিতর্কিত আজিজের সাক্ষাৎকার নিয়ে লে. কর্নেল মুস্তাফিজের বিশ্লেষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD