অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বাতিলের ঘোষণা দেয়ার পরই অ্যানালাইসিস বিডি’র একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, প্রধানমন্ত্রীর আসল উদ্দেশ্য কোটা বাতিল নয়। সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলন দমানোর জন্য কোটা বাতিলের ঘোষণা ছিল সরকারের একটি কৌশল। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি না করা এবং সর্বশেষ সোমবার কোটা আন্দোলনকারী ৩ নেতাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে সরকার আসলে কোটা বাতিল চায় না। বাতিলের ঘোষণা দিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে শান্ত করাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য।
তবে, রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সাধারণ মানুষ মনে করছে, সরকার যদি সত্যিকার অর্থেই কোটি বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি না করে ছলচাতুরির আশ্রয় নেয় তাহলে এবার পরিস্থিতি হয়তো বা আগের চেয়েও বেশি উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। এবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষও রাস্তায় বেরিয়ে আসতে পারে। তখন সেই পরিস্থিতি সামাল দেয়া সরকারের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
অপরদিকে, মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের ঘোষণার প্রতিবাদে মাঠে নামছে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সংগঠন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডও কয়েক দিন ধরে কোটা বাতিলের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন হলে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা রাজপথে নামারও হুমকি দিয়েছে।
এদিকে, মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ডের নেতারা বলছেন, কোটা সংস্কারের নামে দেশের মুক্তিযোদ্ধাদেরকে অসম্মান করা হয়েছে। এই অসম্মান তারা কোনোভাবেই মেনে নেবেন না। তাই, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষায় তারা আগামী ২৪ এপ্রিল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযোদ্ধা মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোটা বাতিলের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে মাঠে নামতে পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শাহজাহান খান। আর কাজটি তিনি করছেন সরাসরি সরকার প্রধানের নির্দেশে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা অনুযায়ীই এসব হচ্ছে।
বিদ্যমান কোটায় মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৩০ ভাগ, উপজাতি কোটা ৫ ভাগ ও নারী কোটা ৫ ভাগ রয়েছে।
সরকারের টার্গেট হলো প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে মাঠে নামানো। এরপর নামবে উপজাতিরা। সর্বশেষ নিজেদের কোটা রক্ষায় মাঠে নামবে নারীবাদী সংগঠনগুলো।
উভয় পক্ষ যখন দাবি নিয়ে মাঠে নামবে তখন সরকারের মাঝামাঝি একটা অবস্থানে যাওয়ার সুযোগ হবে। উভয়ের দাবি রক্ষায় বিদ্যমান ৫৬ ভাগ থেকে ১৬ ভাগ বাতিল করে ৪০ ভাগ কোটা বহাল রাখবে সরকার।
এখন দেখার বিষয় এই কোটা সংস্কার পরিস্থিতি আসলে কোন দিকে যায়।