অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর নগ্ন হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করেও আন্দোলন দমাতে ব্যর্থ হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। সেই ব্যর্থতা আর ক্ষোভ থেকেই এখন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে ছাত্রলীগ। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক বের করে দেয়া হচ্ছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের গণহারে হল থেকে বের করে দিচ্ছে ছাত্রলীগ। আজ সকাল ৯টার দিকে লালন শাহ হল থেকে অন্তত ২২ জনকে হল ছাড়া করে তারা। হল শাখা সভাপতির কর্মী সালাহউদ্দিন আহমেদ সজল তাদের হুমকি দিয়ে নামিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। আন্দোলনকারীরা জানান, ইবিতে আন্দোলন শুরুর দিন থেকেই বিরোধীতা করে আসছিল ছাত্রলীগ। প্রতিদিনই আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন হুমকি দিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করতো তারা। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা আনন্দ মিছিল করে।
কিন্তু বুধবার রাত দশটার দিকে আন্দোলনকারীদের সালাহ উদ্দিন আহমেদ সজল তার রুমে ডেকে নেয়। এসময় তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে বিভিন্ন হুমকি দেয়। সকাল দশটার ভেতর তাদের হল থেকে নেমে যাবার নির্দেশ দেয়া হয়। শাখা সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন নিয়ন্ত্রিত ওই হল থেকে আন্দোলনকারীদের জোর পূর্বক নামিয়ে দেয়া হয়। এখন পর্যন্ত প্রায় ২২ জনকে হল ছাড়া করা হয়েছে। হল থেকে বের হবার সময় আন্দোলনকারীরা বিজয় সূচক ‘ভি’ চিহ্ন দেখায় এবং বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে স্যালুট জানিয়ে বিদায় নেয়।
হল ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কাজী বিল্লাল ও আহসানুর বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। কোটা সংস্কারের যৌক্তিক আন্দোলনে শরিক হওয়াই আমাদের দোষ। নাইম, রাসেল, আশরাফুল, আশিক, ‘সারা দেশে আমাদের ভাই বোনেরা ছাত্রলীগ ও পুলিশের মার খেয়ে রক্তাক্ত হচ্ছে। আমরা এটা সহ্য করতে না পেরে আন্দোলনে শরিক হয়েছি। আমরাও ছাত্রলীগ করি। লালন শাহ হলে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠায় আমরাই সামনে ছিলাম। অথচ আজ হুমকি দিয়ে আমাদের অপমানিত করা হলো।’
এ ব্যাপারে সজল বলেন, ‘দলীয় কমান্ড ভঙ্গ করায় তাদের হল থেকে নেমে যেতে নির্দেশ দিয়েছি। এটা সম্পূর্ণ আমাদের আভ্যন্তরিন বিষয়।’
শাখা সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিনকে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তিনি ফোন বন্ধ করে রাখেন।’
এদিকে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা হলছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। ইতোমধ্যেই ছাত্রলীগ তাদেরকে নানা ধরণের হুমকী ধামকী ও দেখে নেয়ার হুমকী দিচ্ছে বলে জানা গেছে।