হাসান রূহী
কোটা সংস্কারের দাবিতে দীর্ঘদিন যাবত আন্দোলন করে আসলেও শিক্ষার্থীদের কোন দাবিতেই মনোযোগী হচ্ছিল না সরকার। মাঝে মধ্যে দু’একটি বক্তব্য এলেও বিষয়টি বারবার এড়িয়ে গিয়েছেন সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ। কিন্তু এবার আর তা হলো না। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে ছাত্রলীগের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বিভিন্ন কর্মকান্ড আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢালার মত কাজ করেছে। ফলে শেষ পর্যন্ত অনেকটা অভিমানের সুরেই কোটা পদ্ধতি পুরোপুরি তুলে দেয়ার ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে অনেকটা বাধ্য হয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।
২০০৪ সাল থেকে কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবি উঠলেও মূলত: বিগত দুই মাস যাবত জোরদার আন্দোলনে নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোটা রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা পারিবারের জন্য ৩০ শতাংশ। এর বাইরে ১০ শতাংশ নারী কোটা, পশ্চাদপদ জেলার জন্য ১০ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য পাঁচ শতাংশ এবং এক শতাংশ কোটা আছে প্রতিবন্ধীদের জন্য। চাকরির বাজারে এই ৫৬ শতাংশ কোটার কারণে ব্যাপকভাবে বৈষম্যের শিকার হন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অসম এই কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে কমিয়ে ১০ শতাংশে নিয়ে আসার দাবি তোলেন তারা।
স্বাধীন বাংলাদেশে বৈষম্যের এ দেয়াল তাই মেনে নিতে পারছিলেন না শিক্ষার্থীরা। সবশেষে তারা বেছে নিয়েছিলেন আন্দোলনের পথ। শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান, গণস্বাক্ষর অভিযান থেকে শুরু করে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের কর্তা-ব্যক্তিদের দৃষ্টি আর্কষণের চেষ্টা করছিলেন তারা। কিন্তু কোনভাবেই তাদের দাবি নিয়ে সাড়া পড়েনি।
গত ১৪ ফেব্রয়ারি থেকে সুনির্দিষ্ট পাঁচ দফা দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন করে আসছেন কোটা সংস্কার প্রত্যাশীরা। তাদের ৫ দফা দাবি হলো- কোটা সংস্কার করে ৫৬ থেকে ১০ শতাংশে কমিয়ে আনা, কোটা প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদ গুলোতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া, চাকুরিতে একাধিকবার কোটা সুবিধা ব্যবহার না করা, কোটার কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেওয়া, চাকুরি ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা নির্ধারণ করা।
এরই মধ্যে গত ১৪ মার্চ আন্দোলনকারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি জমা দেয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে একটি মিছিল নিয়ে হাইকোর্টের সামনে গেলে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে।
এ সময় ঘটনাস্থলে আন্দোলনকারীদের অন্তত ১৫ জন আহত হন। এছাড়া দুই পর্যায়ে ৫৩ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে আটকদের মুক্তির দাবিতে শাহবাগ থানার সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছেড়ে দেয়।
এরপর গত ২৫ মার্চ প্রতিকী সনদপত্র গলায় ঝুলিয়ে ঝাড়ু হাতে নিয়ে সারাদেশে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়ে বেশ সাড়া ফেলে কোটা সংস্কার আন্দোলন।
গত ৮ এপ্রিল সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নেয়া আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া আর সংঘর্ষে শাহবাগ থেকে শুরু করে পুরো ঢাবি এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
ওইদিন প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনের রাস্তা দিয়ে বের হয়ে রাজু ভাস্কর্য হয়ে নীলক্ষেত ও কাঁটাবন ঘুরে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।শাহবাগ মোড়ে সন্ধ্যা ৭টা ৫০ এর দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় লাঠিপেটাও শুরু করে পুলিশ। একই সঙ্গে ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল।মুহুর্মূহু রাবার বুলেটে আহত হন শতাধিক শিক্ষার্থী। কাঁদানে গ্যাসের তীব্রতায় মূর্ছা যান অনেকেই। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। এসময় ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের পক্ষ না নিয়ে রহস্যজনকভাবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা শুরু করে। অথচ এই আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী হলেও তারা কোটা সংস্কারের যৌক্তিক এ আন্দোলনে অংশগ্রহন করেছিলেন।
পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্য থেকে টিএসসির দিকে অবস্থান নেয়। এসময় সড়কের বাতি নিভিয়ে বিপরীত দিক থেকে কয়েক দফায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ। যার নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির। বহিরাগত ছাত্রলীগ ক্যাডারদের সাথে নিয়ে কয়েক দফা হামলা চালায় তারা। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়া হয়। কিন্তু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অনঢ় উপস্থিতির কাছে বার বার পরাস্ত হয় তারা। একসময় শিক্ষার্থীরা ধাওয়া করলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন সোহাগ ও জাকিরের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
গভীর রাত পর্যন্ত এই ত্রিমুখী সংঘর্ষ চলার পর এক পর্যায়ে কথিত সমঝোতার বাণী নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক। এসময় তার সাথেই ছিল ছাত্রলীগ সভাপতি সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির। জাহাঙ্গীর কবির নানক জায়গা ত্যাগ করার পর পরই সোহাগ ও জাকিরের নেতৃত্বে ফের একটি জঙ্গি মিছিল বের করে ছাত্রলীগ। এর পরই ভিসির বাসভবনে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসময় ভাংচুরকারীরা ওই এলাকার সকল সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। এবং রেকর্ডবক্সের হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে যায় তারা। এসময় রহস্যজনকভাবে ভিসির নিরাপত্তায় নিয়োজিত কোন পুলিশ সদস্য কিংবা নিরাপত্তারক্ষী ছিল না। এরপর থেকেই একটি মহল ভিসির বাসভবন ভাংচুরের দায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করে।
শিক্ষার্থীদের এমন যৌক্তিক আন্দোলনের প্রতিপক্ষ হয়ে ছাত্রলীগের এ অবস্থান কেউই ভালোভাবে নেয়নি। ছাত্রলীগ শুধু এই বিপরীত অবস্থান নিয়েই ক্ষান্ত থাকেনি। শত শত বহিরাগত ক্যাডারদের নিয়ে হলের প্রতিটি কক্ষে গিয়ে তল্লাশী চালায় তারা। এসময় আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের অমানুষিক নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি নানা রকম হুমকি ধামকি দেয় ছাত্রলীগ। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে এর কয়েকটি ভিডিও ক্লিপও ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু পরেরদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এর সাথে আলোচনার আশ্বাস থাকার কারণে নীরবে সহ্য করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ততক্ষণে ছাত্রলীগের চেইন অব কমান্ড অনেকাংশেই দুর্বল হয়ে পড়ে।
পরেরদিনও কোটা সংস্কারের দাবিতে সারাদেশের মতই ঢাবিতেও আন্দোলন অব্যাহত রাখেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দুপুরের পর ওবায়দুল কাদেরের সাথে মিটিং শেষে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ২০ জন প্রতিনিধি ফিরে আসলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ওবায়দুল কাদেরের বেধে দেয়া ১ মাস সময় মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এবং অধিকাংশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা টিএসসি এলাকায় অবস্থান করে। এবং আগের কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে নতুন কমিটি ঘোষণা করে। এবং সারারাত সেখানেই অবস্থানের চেষ্টা করে।
ওইদিন সন্ধ্যার দিকেই ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতা মধুর কেন্টিনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে এক গোপন বৈঠক করে। এবং রাতে বহিরাগত ছাত্রলীগ কর্মীদের নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রস্তুতি নেয়। এখবর ছড়িয়ে পড়লে উভয় দিকেই উত্তেজনা দেখা দেয়। আন্দোলন রত শিক্ষার্থীরা পরের দিন রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিয়ে হলে ফিরে যায়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দুই দিক থেকে শত শত বহিরাগত সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করে। তাদের অধিকাংশের হাতেই ছিল চাপাতি, রামদা, হকিস্টিক, লোহার রড, স্টিলের পাইপসহ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র। অনেকের মাথায় ছিল হেলমেড। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছিল নির্বিকার। আর এ সুযোগ নিয়েই ছাত্রলীগ আবারো হলের বিভিন্ন কক্ষে খুঁজে খুঁজে আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে।এসময় কোন কোন শিক্ষার্থীকে জহুরুল হক হলের সামনের রাস্তায় ফেলে বেদম পেটাতেও দেখা যায়। মুহসীন হলে অধিকাংশ কক্ষেই চালানো হয় তান্ডব। মেয়েদের হলেও ছাত্রলীগের নেত্রীরা গেস্টরুমে ডেকে আন্দোলনে অংশ নেয়া ছাত্রীদের কুরুচীপূর্ণ গালি-গালাজ ও নানারকম হুমকি দেয়।
একদিকে ছাত্রলীগের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ আর ওইদিন সন্ধ্যায় মহান জাতীয় সংসদে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী কর্তৃক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরকে গণহারে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে মন্তব্য করায় ফুসে ওঠে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেই সাথে যোগ হয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের প্রাইভেটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওপর ভ্যাট আরোপের ঘোষণা। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি চলে যায় নিয়ন্ত্রনের বাইরে। পরেরদিন রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ব্যপক বিক্ষোভ প্রদর্শণ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় দেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ কর্তৃক বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটে। সকাল ১০ টা থেকে সারাদেশে সড়ক মহাসড়ক অবরোধ করে তারা। এ অবরোধে বিশেষত রাজধানী অচল হয়ে পড়ে। ঢাবি, জবি, জাবির সাথে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যুগপদ আন্দোলনে রাজধানীতে গাড়ি চলাচল এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায়।
পরের দিন একই ধরণের কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। ওইদিন মধ্যরাতে কবি সুফিয়া কামাল হলে স্মরণকালের ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দেয় ছাত্রলীগ। ওই হলের ছাত্রলীগ সভাপতি ইফফাত জাহান ইশা একটি কক্ষে আন্দোলনে অংশ নেয়া কয়েকজন ছাত্রীকে বন্দী করে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে মোরশেদা নামে এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে ফেলে। সিড়িতে আহত ওই ছাত্রীর রক্ত দেখে নির্যাতনের খবর সাড়া হলে ছড়িয়ে পড়ে। মূহুর্তে এই খবর সাড়া ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে সকল হল থেকে ছাত্ররা প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। তারা সকল হল থেকে এসে কবি সুফিয়া কামাল হলের সামনে এসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে। এসময় তারা দোষী ছাত্রলীগ নেত্রী এশাকে বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে। শুরুতে এই ঘটনাকে সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট নীলিমা আক্তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলেও হাজার হাজার ছাত্রের বিক্ষোভের মুখে শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি তাকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। গভীর রাতে টানা তিন ঘন্টা বিক্ষোভের পর বহিষ্কারের খবর শুনে হলে ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা। পরে বাধ্য হয়ে ওই নেত্রীকে দল থেকে বহিষ্কারের বিজ্ঞপ্তি দেয় ছাত্রলীগ।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে বারবার প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ানোর ফলে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব মূলত অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে। বিশেষ করে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিতর্কিত ভূমিকায় একইসাথে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অবস্থান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অবস্থান আঁচ করতে পেরেই পরেরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ছুটে যান সোহাগ ও জাকির। আর তখনই প্রধানমন্ত্রী অনেকটা বিব্রত ও ক্রোধান্বিত হয়ে ঘোষণা দেন ‘সরকারী চাকুরীতে কোন কোটা থাকবে না’। যা সোহাগ ও জাকির কিছুক্ষণ পরে ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে এসে সাংবাদিকদের সামনে ঘোষণা করে। কিন্তু এরপরও সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে পিছিয়ে না গিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা শুনে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানায়। কোটার প্রশ্নে অনঢ় অবস্থানে থাকা সরকারের এ নতি স্বীকারের নেপথ্যে ছাত্রলীগের গোয়ার্তুমি ও অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়াকেই দায়ী করছেন অনেকে। সন্ধ্যার পর জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী অনেকটা রাগত স্বরেই ঘোষণা করলেন-‘কোটা নিয়ে যখন এত কথা, এত প্রশ্ন- তাহলে কোটাই থাকবে না, কোটার দরকার নেই।’ এসময় তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে শাসানোর চেষ্টা করেন। যদিও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কি করবেন তা জানতে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।