অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর একদলীয় সংসদের বিরোধীদলের আসনে বসে এরশাদের জাতীয় পার্টি। অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূতের পদ ও তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে ক্ষমতারও ভাগিদার হয় জাতীয় পার্টি। এরশাদের জাতীয় পার্টি একই সঙ্গে ক্ষমতার ও বিরোধীদলের সাধ নিচ্ছে। এটাকে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা বলে মনে করেন রাজনীতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীতের মধ্যেও তত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার নিজের ভবিষ্যত নিয়ে খুবই চিন্তিত। আগামীতে যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসতে পারে তাহলে এরশাদের আবার জেলে যেতে হয় কিনা এনিয়ে তিনি টেনশনে আছেন। জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলাপ করে এমনই আভাস পাওয়া গেছে।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় একজন নেতা। যিনি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিপক্ষে ছিলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ক্ষমতার শেষ প্রান্তে এসে আমাদের চেয়ারম্যান এরশাদ সাহেব এখন শেখ হাসিনার চেয়েও বেশি টেনশনে আছেন। কারণ, তার কারণে আওয়ামী লীগ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন করতে পেরেছে। তাই বিএনপি-জামায়াতের ক্ষোভটা আওয়ামী লীগের চেয়েও তার ওপর বেশি। আগামী নির্বাচনে ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটলে বিএনপি-জামায়াত সেই প্রতিশোধ নিতে পারে।
তিনি বলেন, ২ কোটি টাকা দুর্নীতির জন্য সরকার খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়েছে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। আমরা যতটুকু জানতে পারছি, বিএনপিকে বাদ দিয়ে ৫ জানুয়ারির মতো আর কোনো নির্বাচন আওয়ামী লীগ করতে চাচ্ছে না। বিএনপিকে সমঝোতায় আনার জন্যই মূলত খালেদা জিয়াকে জেলে নিয়েছে। খালেদা জিয়া যদি সমঝোতায় চলে আসে তাহলে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে নিয়ে জোটবদ্ধ নির্বাচন করবে। কিন্তু, খালেদা জিয়া যদি সমঝোতায় না আসেন তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে। আমাদের স্যারের ভয়টা এখানেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এরশাদের একজন উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য আমাদের চেয়ারম্যানের মামলাগুলো ঝুলিয়ে রেখেছে। যাতে তিনি অন্য কোনো দিকে মুভ করতে না পারেন। এখন এ অবস্থায় যদি বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসে তাহলে মামলাগুলোর কার্যক্রম আবার পুরোদমে চালু করবে। এমনকি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রতিশোধ নিতে বিএনপি আমাদের চেয়ারম্যানকে আবারো জেলে নিতে পারে।