অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সরকারের আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। তিনি নিজেকে একজন স্বচ্ছ ও সত্যবাদী মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। তার দাবি, তিনি জীবনে কখনো মিথ্যা কথা বলেন নি।
গত অক্টোবর মাসে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ছুটির দরখাস্ত নিয়ে যখন সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়, তখন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে জানালেন এই দরখাস্ত প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার হাতের লেখা। এই ছুটির দরখাস্ত নিয়ে আইনজীবী ও বিশিষ্টজনদের অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, এটা প্রধান বিচারপতির হাতের লেখা। আমি জীবনে কখনো মিথ্যা বলিনি।
তবে, আনিসুল হক নিজেকে সত্যবাদী হিসেবে দাবি করলেও তিনি যে মিথ্যা কথা বলেন অবশেষে এটার প্রমাণ মিলেছে।
গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদের ১৭২ তম বৈঠকে দেশের ভিআইপিদের চলাচলের জন্য মহসড়কে আলাদা লেন তৈরি করার একটি প্রস্তাব দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ভিআইপিরা ডান দিক যায়, রাস্তার উল্টা দিক দিয়ে যায়। নানা রকমের ঝামেলা হয়। ভিআইপিদের অনেক সময় যাওয়া লাগে। অনেক দেশেই ভিআইপিদের জন্য আলাদা লেন আছে। আমাদের দেশেও সেটি করা যায় কিনা…।
এরপর ভিআইপিদের জন্য আলাদা লেনের প্রস্তাবের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পরই এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। বিশিষ্টজনেরাও কঠোর ভাষায় এ প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানান।
কিন্তু পরের দিন মঙ্গলবার মানুষের তীব্র সমালোচনার মুখে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, মন্ত্রিপরিষদে এ ধরনের কোনো প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়নি।
পরে আনিসুল হকের এ বক্তব্য নিয়ে আবার সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। অনেকেই তাকে সেই দিনের বক্তব্য স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, আনিসুল হক জীবনে কখনো মিথ্যা কথা বলেন নি। এটাও একটা বড় মিথ্যাচার।
এরপর রোববার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও প্রমাণ করে দিলেন যে আনিসুল হক মিথ্যা কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের রোববার সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন যে, ভিআইপিদের জন্য মহাসড়কে আলাদা লেন তৈরির প্রস্তাব তার কাছে এসেছে।
ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্য থেকে প্রমাণ হয়েছে যে, ভিআইপিদের জন্য আলাদা লেন তৈরির প্রস্তাব নিয়ে আনিসুল হক সেদিন মিথ্যাচার করেছেন। তিনি নিজেকে একজন সত্যবাদী হিসেবে দাবি করলেও বাস্তবে প্রমাণ দিলেন যে তিনি একজন মিথ্যাবাদী।