আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী নির্বাচনের বিষয়ে সংলাপের প্রয়োজন নেই। সংলাপ করার পরিবেশ বিএনপি রাখেনি। যদি কখনো সংকট আসে, সংলাপের বিষয়ে তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
বিএনপির সংবাদ সম্মেলনের প্রতিক্রিয়া জানাতে আজ শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগ। সেখানে এ মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি। আজ বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি সুশীল সমাজসহ সব দলের অংশগ্রহণে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পদ্ধতি নির্ধারণের দাবি জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবিধানে নির্বাচনের বিষয়ে পথনির্দেশনা দেখানো আছে। সেই পথ নিয়ে আবার সংলাপের প্রয়োজন কেন? নির্বাচন বিএনপির অধিকার, সুযোগ নয়। নির্বাচন বিএনপির গণতান্ত্রিক অধিকার। দয়া-দাক্ষিণ্যের মাধ্যমে কি বিএনপি নির্বাচন করবে? তিনি আরও বলেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে সাহায্য করবে। এ বিষয়ে সংলাপের কোনো প্রয়োজন দেখছি না। সংলাপ করার পরিবেশ বিএনপি রাখেনি। সামনে কোনো সংকট কিংবা সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি হলে, তখন দেখা যাবে।’
আবারও ‘জ্বালাও-পোড়াও’কে কি সংকট বলছেন? সাংবাদিকের এ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যদি কোনো সংকটের মুহূর্ত আসে, সেই পরিস্থিতিতে বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করতে পারবে না। তারা কি আগের মতো আগুনসন্ত্রাস করে মানুষ পুড়িয়ে মারবে? জনগণ বিএনপির কথায় আর সায় দেবে না। মানুষ পুড়িয়ে মারার জন্য এই নির্বাচন নয়, আরও অনেক দিন বিএনপিকে খেসারত দিতে হবে। মিথ্যাচার আর মানুষ পুড়িয়ে বিএনপি তাদের ভোটব্যাংক হারিয়েছে। বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমান স্বাধীন দেশে পাকিস্তানের স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের প্রসঙ্গ টেনে যাঁরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তুলনা করেন, তাঁরা আসলে পাকিস্তানি ভাবধারায় বিশ্বাসী। দেশের ১৬ কোটি মানুষ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে খুশি হয়েছেন। বিএনপি এই ভাষণে হতাশ হয়েছে।
এদিকে আজ দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মওদুদ আহমদ বলেছেন, সংবিধানে নিরপেক্ষ সরকার বলে যেমন কিছু নেই, তেমনি নির্বাচনকালীন সরকার বলেও কিছু নেই। জাতিকে বিভ্রান্ত করতে এটা বলা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে এক সাংবাদিক দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মওদুদ আহমদের বিষয়ে যত কম কথা বলা যায়, তত ভালো। ৪০ বছর একটি বাড়ি অবৈধভাবে দখল করে ছিলেন। মৃত ব্যক্তির নামে ভুয়া কাগজ বানিয়ে বাড়ি ভোগদখল করেছেন। তিনি আইনের মুখোশ পরে বেআইনি কথা বলেন। সংবিধানে সব বলা আছে, তাঁকে আরেকবার সংবিধান পড়ার কথা বলব।’
বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগ সংলাপ করতে চেয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ কি সংলাপ করতে চায়নি? বিএনপি রাজনৈতিকভাবে স্টান্টবাজি করতে গিয়ে সেই সুযোগ হারিয়েছে। বিএনপির মাথায় সংলাপের বিষয় নেই, তারা সংলাপ চায় না। সংলাপের বিষয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মাথায় থাকলে তিনি তখন সংলাপের কথা প্রত্যাখ্যান করতেন না।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: প্রথম আলো