অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে রাজনীতিতে বিতর্ক থাকলেও দেশ গঠনে তার অবদান কেউ অস্বীকার করে না। দলমত নির্বিশেষে সবাই তার প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ করে।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ৯ বছরে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে বিতর্ক উঠেছে বা তাকে নিয়ে যেসব সমালোচনা হয়েছে অতীতে এমন বিতর্ক বা সমালোচনা কখনো হয়নি। আর বঙ্গবন্ধুকে বিতর্ক সৃষ্টির বা তার সমালোচনা করার সুযোগ মূলত আওয়ামী লীগ নেতারাই তৈরি করে দিয়েছে।
দেখা গেছে, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরই আওয়ামী লীগ সরকার গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্থাপনার নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধুর নামে এগুলোর নামকরণ করে। বিশেষ করে সবার প্রিয় নেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নামে করা ভাসানী নভোথিয়েটারের নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার নামকরণ করায় সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সেন্টিমেন্টে আঘাত লেগেছে। এছাড়া চীন-মৈত্রি সম্মেলনের নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন করার বিষয়টিও মানুষ সহজভাবে মেনে নেয়নি।
এরপর, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে এদেশের মানুষের কাছে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু, আওয়ামী লীগ সরকার কোর্টের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষক থেকে জিয়ার নাম বাদ দিয়ে সেখানে বঙ্গবন্ধুর নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। সকল স্থাপনা থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলেছে। বিশেষ করে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করায়ও মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছে।
এছাড়া, আওয়ামী লীগ নেতারা প্রতিনিয়ত বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযুদ্ধের চর, স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকার ও খুনি আখ্যায়িত করে গালাগালি করছে। এসব কারণে বিএনপি নেতারাও পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করছে। আর বিভিন্ন ধরণের আইন তৈরি করে সরকার মানুষের মুখ বন্ধ করে রাখলেও এনিয়ে সাধারণ মানুষের ভেতরে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হচ্ছে।
সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, আগে বঙ্গবন্ধুর প্রতি মানুষের যে ভালবাসা ও শ্রদ্ধা ছিল এখন আর তা নাই।
সর্বশেষ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে দেয়া বঙ্গবন্ধুর দেয়া ভাষণ ইউনেসকোতে স্থান দেয়ার পর আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে উৎসবে মেতে উঠেছে। এনিয়ে সভা-সমাবেশ ডেকে স্কুলের শিশুদের পর্যন্ত এসবে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে। গত ১৮ নভেম্বর ও গতকাল শনিবার আনন্দ শোভাযাত্রার নামে সরকার যা করেছে তা নজিরবিহীন। সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী, ব্যাংক কর্মকর্তা ও স্কুলের শিশুদেরকে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়েছে। এনিয়ে আজ রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও কঠোর সমালোচনা হচ্ছে।
রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সাধারণ মানুষ বলাবলি করছে, সরকার স্কুল পড়ুয়া শিশুদের ডেকে এনে ৭ মার্চের ভাষণ গিলানোর চেষ্টা করছে। এতে করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি মানুষের যে শ্রদ্ধাটুকু ছিল তাও চলে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। আওয়ামী লীগ এসব করে বঙ্গবন্ধুকে উপরে উঠাতে গিয়ে আরও ডোবাচ্ছে।
Discussion about this post