শরীয়তপুরে ছয় নারীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ ও সেসব দৃশ্য গোপনে ভিডিও করে ছড়িয়ে দেওয়া সেই ছাত্রলীগ নেতা আরিফ হোসেনকে ছয় দিনেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থা আজ বৃহস্পতিবার মানববন্ধন করতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির অজুহাতে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেয়নি পুলিশ।
শরীয়তপুরের নারায়ণপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেনের বিরুদ্ধে ছয় নারীকে ধর্ষণ ও তার ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় গত শনিবার আরিফের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী এক নারী। কিন্তু মামলার পর ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও আরিফকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা নড়িয়া উন্নয়ন সমিতির (নুসা) আয়োজনে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নড়িয়া উপজেলা সদরে মানববন্ধন করার ঘোষণা দেওয়া হয়। কর্মসূচির সংবাদ সংগ্রহের জন্য বুধবার ওই সংস্থার পক্ষ থেকে শরীয়তপুরে কর্মরত সংবাদকর্মীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু পুলিশ মানববন্ধন করতে দেবে না, এমন কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মানববন্ধন স্থগিত করা হয়।
জানতে চাইলে নুসার সহকারী পরিচালক কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভেদরগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা আরিফ ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন। এর প্রতিবাদে আমরা মানববন্ধন করতে চেয়েছিলাম। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। কিন্তু মানববন্ধন করা যাবে না বলে কর্মসূচি বন্ধ করতে বলে পুলিশ।’
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, নড়িয়াতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে কিছু সমস্যা আছে। ওই এনজিও আওয়ামী লীগের এক পক্ষের সমর্থকেরা চালান। মানববন্ধন করলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে—এমন আশঙ্কা থেকে এ কর্মসূচি বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘কারা মানববন্ধন করতে চেয়েছে তা আমার জানা নেই। পুলিশের মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার কথা নয়। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখব। আরিফকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।’
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আরিফ হোসেন হাওলাদার। তিনি ফেরাঙ্গিকান্দি গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে ও স্থানীয় একটি কলেজের স্নাতক শ্রেণির ছাত্র। ফাঁদে ফেলে ছয় নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। গত ১৫ অক্টোবর ছয় নারীকে ধর্ষণের ভিডিও ও ছবি মানুষের হাতে ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ পেয়ে ১৯ অক্টোবর ভেদরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ আরিফকে বহিষ্কার করে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় শনিবার জেলা ছাত্রলীগ আরিফকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে।
সূত্র: প্রথম আলো
Discussion about this post