আব্দুল করিম চৌধুরী
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি বহুল আলোচিত বিষয় হচ্ছে “মুভ ফাউন্ডেশন “। মুভ ফাউন্ডেশন এর কবলে অনেক মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী আক্রান্ত! পোষাক-পরিচ্ছেদ ও আচার-আচরণে বিশাল আবর্তিত! এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আতংক ও উৎকন্ঠের শেষ নাই।সত্যতা ও মুভ ফাউন্ডেশন নিয়ে জানারা কৌতূহলের অন্ত নাই।
জার্মানি (ক্রুসেডার) খ্রিস্টান মিশনারী কর্তৃক পরিচালিত ও জাতিসংঘের ইউনিডেপ সংস্থার অর্থসহযোগিতায় চালিত ” মুভ ফাউন্ডেশন ” নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এলো এক ভয়ানক তথ্য। যা রীতিমত গা’ শিউরে উঠার! যুগ যুগ ধরে ‘আখলাকে হাসানাহ’ ও ‘সুন্নতে নববী’ ধারণকারী কওমী মাদ্রাসা ও কওমী শীক্ষার্থীদের নিয়ে “মুভ ফাউন্ডেশন “এর পথ চলা।
মুভ ফাউন্ডেশন এর পরিচিতি ও লক্ষ্যার্থ নিচে তুলে ধরা হলো –
‘Move Foundation’ হচ্ছে জার্মান খৃষ্টান পরিচালিত তরুণদের নিয়ে চালিত বিশ্বব্যাপী একটি সামাজিক সংস্থা।যার শাখা প্রশাখা বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে বিস্তার রয়েছে।বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন উদ্দেশ্যেকে কেন্দ্রকরে গড়ে উঠেছে এই সামাজিক সংস্থা। তবে বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে এক ভয়ানক লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে!
২০১৩ সালে ঢাকায় এই ফাউন্ডেশন গড়ে উঠে। সূচনা থেকেই বাংলাদেশস্থ জার্মান রাষ্ট্রদূত ব্যবস্থাপনায় এই ফাউন্ডেশন বেড়ে উঠে। কালের পরিক্রমায় তার লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম পরিষ্কার হতে থাকে। তাদের প্রধান দু’টি উদ্দেশ্য –
১. কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের আধুনিক করা।
২.কওমী শিক্ষা সিলেবাস সংস্কার করা।
মুভ ফাউন্ডেশন এর সাইট ভিজিট করে জানা যায় যে,তাদের ফাউন্ডেশন এর মূল বা স্পেশাল লক্ষ্যই হচ্ছে উপরোক্ত দু’টি । বিস্তারিত জানতে তাদের ওয়েবসাইট দেখুন – (www.move-foundation.com)
২০১৩ সালে গড়ে উঠা এই সামাজিক সংগঠন তাদের মূল লক্ষ্যে ধীরে ধীরে পৌঁছতে থাকে। ঢাকার কিছু নামীদামী কওমী ছাত্রদেরকে সংগ্রহ করে তাদের নিয়ে প্রথম ২০১৫ সালে অনানুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। সর্বশেষ, হাতের কবজায় চলে এলে কওমী মাদ্রাসার প্রায় ৫০+ ছাত্র ও ভার্সিটি পড়ুয়া ৬০+ ছেলে-মেয়ে নিয়ে জঙ্গিবিরোধী প্রশিক্ষণ দেয়।
দু’মাস ব্যাপী এই প্রশিক্ষণে কওমী মাদ্রাসার ছেলেরা মেয়েদের পাশাপাশি বসে বেপর্দা ও গতানুগতিক ধর্মীয় অনুশাসন এর উর্ধ্বে উঠে কোর্স সমাপ্ত করে।
খৃষ্টান পরিচালিত মুভ ফাউন্ডেশন এর দু’মাস ব্যাপী প্রশিক্ষণ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে কওমী ছাত্রদের হাতে জঙ্গী বিরোধী ও সামাজিকভাবে আধুনিকায়নের উপর বিশেষত্ব লাভের জন্য “সার্টিফিকেট ” তুলে দেওয়া হয়।অনুষ্ঠনটি ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার ইনষ্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হয়।
মজার ব্যাপার হলো, সেই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকাস্থ জার্মানদূত এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামিলীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ সাহেব।আর কওমীদের মধ্যে বিশেষ অতিথি ছিলেন আল্লামা(!) মুফতি ফয়জুল্লাহ। বিস্তারিত জানতে (এখানে ক্লিক করুন)
এখানেই কওমী মাদ্রাসা নিয়ে খৃষ্টান পরিচালিত মুভ ফাউন্ডেশন এর দৌরাত্ম্য শেষ হয়নি। তারপর, তারা শুরু করে বিভিন্ন কওমী মাদ্রাসায় ভ্রমণ। সহজ সরল মুহতামিম সাহেবদের বুঝিয়ে শুনিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের মুভ ফাউন্ডেশন এর কার্যক্রমের দিকে ধাবিত করে।এবং শিক্ষা সংস্কারের নামে অপপ্রচার ও বুলি শিখিয়ে দিয়ে থাকে।
তাদের ওয়েবসাইটে একটা ভিডিওতে দেখা যায়,ঢাকাস্থ একটি কওমী মাদ্রাসার পড়াশুনার চিত্র রয়েছে। অতঃপর একজন ছাত্রের জবানবন্দি নিয়েছে। সে ছাত্র বলতেছে –
” আমরা আসলে এখানে কেবল কোরান-হাদিস পড়ি।এর বাহিরা কিছু জানি না।আমরা কোরান-হাদিসের পাশাপাশি বিজ্ঞান,আইন,সাংবাদিকতা ইত্যাদি জানতে/পড়তে চাই”।
বিস্তারিত নিচের ভিডিওতে দেখুন –
এছাড়া, তাদের ওয়েবসাইটের শতকারা ৮০% নিউজ রয়েছে কওমি মাদ্রাসা নিয়ে। একটি সংবাদে দেখা যায়, তারা কওমী ছাত্রদেরকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে ও সমাজের অভয়ারণ্য হিসেবে তুলে ধরে। বিস্তারিত দেখতে (এখানে ক্লিক করুন)
কওমী মাদ্রাসায় এভাবে এনজিও সংস্থাগুলো ঢুকে পড়লে মুফতি হওয়ার পরেও কিছু আলেম কেন নাস্তিক হবে না? আলিম হওয়ার পরেও নেহাল কেন বেহাল হবে না? কওমী মাদ্রাসাকে মন থেকে ভালোবাসি।কওমী মাদ্রাসায় কোন চক্র ঢুকে পড়ুক -তা চাই না। তাই বিভিন্ন তথ্য ঘাটিয়ে সংবাদ সরবরাহ করলাম।
(সম্পাদিত)
Discussion about this post