জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রোববারের জনসভা সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। সমাবেশে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ব্যাপক উপস্থিতির মাধ্যমে অতীতের সকল রেকর্ড ভাঙ্গতে চায় দলটি।
সমাবেশকে সফল করতে এবং ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দফায় দফায় বৈঠক করছে বিএনপি। ঢাকা এবং আশপাশের জেলাগুলো, যেমন নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জসহ ঢাকা বিভাগের নেতাদের নিয়ে যৌথ সভাও করেছে দলটি। এ ছাড়া বিএনপির সহযোগী সংগঠন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতারাও যৌথ সভায় অংশ নেন।
এ সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন দলের নেতারা।
এর আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করতে কয়েক দফা অনুমতি চাইলেও সরকার তা দেয়নি। দীর্ঘ উনিশ মাস পর রাজধানীতে জনসভার আয়োজন করতে যাচ্ছে বিএনপি। রোববারের জনসভার মাধ্যমে দলটির নেতারা দেখাতে চান বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বড় রাজনৈতিক দল।
বেগম খালেদা জিয়া গত মাসে লন্ডন থেকে ফিরে আসার দিন থেকে দলটির রাজনীতিতে লক্ষণীয় পরিবর্তন এসেছে। দু’টি বড় ধরনের শোডাউনের মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীরা এখন বেশ উদ্দীপ্ত। বেগম খালেদা জিয়ার কক্সবাজার সফরে যে জনস্রোত দেখা গেছে, তাতে দলটির বিশাল সমর্থকগোষ্ঠীও আশাবাদী হয়ে উঠেছে।
সমাবেশকে ঘিরে বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও অনেক তৎপর হয়ে উঠেছেন। গত কয়েক দিনে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের ভিড় লক্ষ করা গেছে।
নেতা-কর্মীরা মনে করছেন, এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মাঠের রাজনীতিতে আরও সক্রিয় হবে। এ ছাড়া সরকারও বিএনপিকে সভা-সমাবেশ করতে দিয়ে ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ’ ফিরিয়ে আনবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সমাবেশে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকবে। সরকারের শোষণ, নিপীড়নের কারণে মানুষ অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এ কারণে মানুষ বিএনপির সমাবেশে অংশগ্রহণ করবে। এই সমাবেশে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি তো থাকবেই, তবে সাধারণ জনগণের উপস্থিতি অন্য যে কোনও সময়ের তুলনায় অনেক বেশি হবে।
প্রতিটি সমাবেশে বিপুল জনসমাবেশ হয় উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সমাবেশের জন্য স্বাভাবিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এটা মূলত ৭ নভেম্বর উপলক্ষে সমাবেশ, অন্য কিছু না। এই সরকার আসার পর থেকে যেসব সমাবেশ করা হয়েছে, প্রায় প্রতিটিতেই বিপুল জনসমাগম হয়েছে। এবারও তেমনই হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ ভাবে এই সমাবেশ করবে। জনস্রোত কোন ভাবেই দমিয়ে রাখা যাবে না। তিনি বলেন, এর আগেও যেভাবে মানুষের সমাগম ঘটেছে এতে প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার যদি অগণতান্ত্রিক কোনো কার্যকলাপ না করে, তাহলে বড় ধরনের লোক সমাগম হবে। সরকার বিরোধী দল দমনে যেসব কর্মকাণ্ড করে, তা গণতান্ত্রিক রীতির অংশ হতে পারে না। সরকারের এসব আচরণ থেকে বিরত থাকা উচিত এবং মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।
সূত্র: শীর্ষনিউজ
Discussion about this post