মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘অন্য বিচারপতির পক্ষে দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি লিখে সুপারিশ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা শপথ ভঙ্গ করেছেন। তাই তার শপথ ভঙ্গের বিচার করতে হবে। তিনি অনেক দুর্নীতি করেছেন, নীতি নৈতিকতা বিবর্জিত কাজ করেছেন। তাই তাকে বিদেশ থেকে দেশে ফেরত আনতে হবে। বিএনপি তো বলছে আমরা নাকি সিনহা সাহেবকে বিতাড়িত করেছি। তাই আমাদের দাবি, ওনাকে দেশে ফেরত আনতে হবে। ফিরিয়ে এনে তার বিরুদ্ধে যে দুর্নীতি, শপথ ভঙ্গের ও নৈতিক স্থলনের ১১টি অভিযোগ উঠেছে সে কারণে আদালতে তার বিচার করতে হবে।’
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা সাহেব বলেছেন, বঙ্গবন্ধু নাকি একক নেতা ছিলেন না। আমি মহান সংসদে বলেছি তার কোন বাবা ছিল, তার কোন দেবতা, তার কোন ঠাকুর ছিল তার নাম আমরা শুনতে চাই। তার ঠাকুর আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান না জিয়া খান, কে ছিল বঙ্গবন্ধু ছাড়া অন্য দ্বিতীয় নেতা সেটা আমরা জানতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। কিন্তু তার হত্যার নেপথ্যে যারা জড়িত ছিল, সেদিন সারারাত পাকিস্তান দূতাবাস ও মার্কিন দূতাবাস খোলা রাখা হয়েছিল কেন এসব বিষয় তদন্ত করে কারা সেদিন হত্যাকারীদের মদদ যুগিয়েছিল সেই বিচার আমাদের করতে হবে। ৪০ বছর পরে যদি আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পারি তাহলে ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতে বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যে ষড়যন্ত্রকারীরা আছেন তাদেরকে আমরা খুঁজে বের করতে পারবো।’ মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সব মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর তাদের কবর রাষ্ট্রীয় খরচে একইভাবে নির্মাণ করা হবে। যেন ৫০ বা একশ বছর পরেও মানুষ কবর দেখে বলতে পারে যে এটি একটি মুক্তিযোদ্ধার কবর। এছাড়াও দেশের যেসব স্থানে যুদ্ধ হয়েছে সেসব ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজরিত স্থানগুলোকে সংরক্ষণ করে একই ধরনের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে। সব মুক্তিযোদ্ধার রাষ্ট্রীয় খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। সেই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধারা যাতে সরকারি সব যানবাহনে বিনা পয়সায় চলাচল করতে পারেন সে ব্যবস্থা সরকার গ্রহণ করবে।’
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুকরিয়া পারভীনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর-৬ এর আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক, উপজেলা চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন মণ্ডল, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিয়াকত আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান লিটন, হিলি স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ হারুন, দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান, হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন, ওসি আব্দুস সবুরসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও দলীয় নেতাকর্মীরা।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
Discussion about this post