শুধু কুরআনে নয়, ক্রীড়া-সাংস্কৃতিতেও নৈপূণ্যতা দেখিয়েছেন মাত্র ৮৬ দিনে কুরআনে হাফেজ ইয়াসিন আরাফাত। সহপাঠীদের পেছনে ফেলে প্রাতিষ্ঠানিক বার্ষিক প্রতিযোগিতায় ইসলামী সংগীতে ১ম, ঝুড়িতে বল নিক্ষেপে ১ম এবং কবিতা আবৃত্তিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে।
ইতোমধ্যে এত অল্প বয়সে মহা ঐশীগ্রন্থ কুরআন মুখস্ত করায় ইয়াসিন আরাফাতকে বিভিন্ন মহল থেকে ‘বিশ্বের বিস্ময়’, ‘বিস্ময়কর বালক’ ইত্যাদি স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কুরআনের হাফেজ ইয়াসিন আরাফাতের হাতে বৃত্তির টাকা ও পুরস্কার তুলে দেন তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান বিশিষ্ট গবেষক ও শিক্ষাবিদ ড. আবু লাবিব।
এ সময় তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদরাসা কক্সবাজার শাখার অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) হাফেজ রিয়াদ হায়দার, তানযীমুল উম্মাহ মহিলা মাদরাসা চট্টগ্রাম শাখার অধ্যক্ষ মোঃ হাবীবুর রহমান, হাফেজ ইয়াসিন আরাফাতের পিতা সাংবাদিক গোলাম আজম খান ও সাংবাদিক ইমাম খাইর উপস্থিত ছিলেন।
১১ বছর বয়সী এই মেধাবী মুখ তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদরাসা কক্সবাজার শাখার ৬ষ্ট শ্রেণীর ছাত্র। মাত্র ৮৬ দিনে পবিত্র কুরআন মুখস্ত করে পুরো মুসলিম বিশ্বে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে।
ইয়াসিন আরাফাত খান তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদরাসা কক্সবাজার শাখা থেকে ৫ম শ্রেনীতে একমাত্র সরকারী বৃত্তি লাভ করা ছাত্র।
যে বয়সে খেলাধুলা আর দুষ্টুমিতে ছেলেদের সময় কাটে, সে বয়সে মহান আল্লাহর তিরিশ পারা কালাম নির্ভুলভাবে মুখস্ত করা সত্যিই আশ্চর্যের- ঈর্ষার।
হাফেজ ইয়াসিন আরাফাতের শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি অনেক ছাত্র পেয়েছি। ইয়াসিনের মতো পাইনি। তার মেধায় যাদুকরী শক্তি আছে। পড়া দেয়ার সাথে সাথে মুখস্ত করে ফেলে। শিক্ষক ডেকে হাজিরা দেয়। চমৎকার সুশৃঙ্খল, অমায়িক ও মার্জিত হওয়ায় তার প্রতি সবার আকর্ষণটা আলাদা। ইয়াসিনের মেজাজে নেই কোনো রাগ। সাধারণ ছাত্রদের চেয়ে সে ভিন্ন। সাদাসিধে ইয়াসিনের জীবন অনেক সম্ভাবনাময়।
তিনি বলেন, সব ছাত্ররা যখন ঘুমিয়ে থাকে তখনো ওকে পড়তে দেখেছি। সবার আগে পড়া হাজিরা দেয়ার প্রবল জেদ ছিল তার ভেতরে। ছিল না ফাঁকিবাজির চরিত্র। আচরণ ছিল মুগ্ধ হওয়ার মতো। আমল-আখলাকে পরিপূর্ণ এই ছেলেটি অনেক বড় হবে একদিন। তার জন্য অপেক্ষা করছে স্বর্ণালী সময়।
তানযীমুল উম্মাহর অধ্যক্ষ হাফেজ রিয়াদ হায়দার বলেন, ক্লাসের হাজিরা খাতা অনুসারে মাত্র ২ মাস ২৬ দিনে তিরিশ পারা পবিত্র কুরআন শরীফ খতম করেছে ইয়াসিন আরাফাত। এখন থেকে যুক্ত হলো ‘হাফেজ’ শব্দ। যে শব্দটি কেনা যায় না। চুরি করেও মেলে না ‘হাফেজ’ সনদ। মেধা-সাধনা দিয়ে নিতে হয় এই সনদ।
রিয়াদ হায়দার বলেন, সাধারণ ক্লাসের পাশাপাশি এত দ্রুত সময়ের মধ্যে কুরআন হেফজ করার দৃষ্টান্ত এই অঞ্চলের জন্য নজিরবিহীন। পুরো দেশে হয়তো দু’একটা থাকতে পারে। হাফেজ আরাফাত পড়ালেখার সাথে পাল্লা দিয়ে পিছিয়ে নেই ক্রীড়া-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডেও।
কুরআনের ফুলবাগিচার সেরা এই ফুলটির বড় ভাই আবদুল্লাহ আল সিফাত প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭ সালের অনার্স ভর্তি পরীক্ষায় ‘খ’ ইউনিটে উত্তীর্ণ হয়েছে।
সূত্র: নয়াদিগন্ত
Discussion about this post