জামায়াতে ইসলামীর আমীর মকবুল আহমাদ এবং সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমীর সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ সকল কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং মুক্তির দাবিতে হরতাল ডেকেছে জামায়াত। দলটির পক্ষ থেকে সারা দেশে কড়া হরতাল পালনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের সারাদেশে সতর্ক অবস্থানের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
কেন্দ্র ঘোষিত বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যার সর্বাত্মক হরতালের সমর্থনে রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী। রাজধানীতে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ মিছিলের আয়োজন করে। মিছিলটি রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নবাবপুর রোডে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে অপরাজনীতি, গ্রেপ্তার ও ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই আমীরে জামায়াত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জননেতা মকবুল আহমাদ এবং সেক্রেটারি জেনারেল বরেণ্য চিকিৎসক ডা. শফিকুর রহমান, সাবেক এমপি নায়েবে আমীর মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করেছে।
তারা বলেন, জনগণ সরকারের এ ষড়যন্ত্র কখনোই বাস্তবায়িত হতে দেবে না। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে আমীরে জামায়াত-সহ সকল নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। অন্যথায় সৃষ্ট পরিস্থিতির দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার ৫ জানুয়ারির তামাশা ও ভাঁওতাবাজির নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা জবর দখল করে এখন ধরাকে সরা জ্ঞান করতে শুরু করেছে। জনগণ গতবারেও সরকারের পাতানো ও ষড়যন্ত্রের নির্বাচন স্বতঃস্ফূর্তভাবে বর্জন করেছে। কথিত নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, তামাশার নির্বাচন দেশিয় ও আন্তর্জাতিক কোনো মহলেই গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। আবারো সরকার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে একপাক্ষিক ও তামাশায় পরিণত করার জন্য জনমতকে বিভ্রান্ত ও বিরোধী দলকে নির্মূল করার পথ বেছে নিয়েছে।
সমাবেশে রেজাউল করিম বলেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ এবং সেক্রেটরি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতৃবৃন্দকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু জুুলুম-নির্যাতন চালিয়ে অতীতে কোনো ফ্যাসীবাদী ও স্বৈরাচারি শক্তির শেষ রক্ষা হয়নি, আর আওয়ামী লীগেরও হবে না।
তিনি জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। অন্যথায় সরকারকে গণরোষের মুখোমুখী হতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেন।
নেতৃবৃন্দ বৃহস্পতিবার দেশব্যাপি সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে সফল করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়ে দলের নতুন ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে জানান, সারাদেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ এবং গ্রেপ্তারকৃত নেতাদের মুক্তির জন্য আগামী শুক্রবার দেশব্যাপী দোয়া দিবস হিসেবে পালিত হবে।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বৃহষ্পতিবার জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল সহিংস রূপ নিলে তখন জবাব সেরকম ভাবেই দেয়া হবে।
হরতালে বিশৃঙ্খলা এড়াতে বিকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। র্যাবের টহল দল জোরদার করেছে।
বৃহস্পতিবার শান্তিপূর্ণ হরতাল সফল করুন: জামায়াত
বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক শান্তিপূর্ণ হরতাল সফলের আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলের আমির মকবুল আহমাদ এবং সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ আটক সব নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও মুক্তির দাবিতে এ হরতালের ডাক দিয়েছে জামায়াত।
বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এ বিবৃতিতে এ আহবান জানানো হয়।
সূত্র: আরটিএনএন
Discussion about this post