রাজধানীর কদমতলী থেকে আটক জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, মহানগর নায়েবে আমির মঞ্জুরুল ইসলাম ভুইয়া ও মহানগর সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদসহ ৮ নেতার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিষ্ফোরক আইনে দুটি মামলা দিয়েছে পুলিশ।
বিশেষ ক্ষমতা আইনে এই দুটি মামলায় আজ আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমাণ্ড দাবি করে পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা সিএমএম কোর্টের ১১ নং আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ৮ জনকে প্রত্যেক মামলায় ৩ দিন করে মোট ৬ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলা নং ৭০/৯/১৭ ও ৭১/৯/১৭।
এদিকে পুলিশ এজাহারে উল্লেখ করেছে গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ৪৭টি ককটেল/বোমা, ৩টি চাপাতি, ২টি ছোরা, ১২টি জিহাদি বই উদ্ধার করেছে। কিন্তু জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে গ্রেফতারকৃত নেতারা সাংগঠনিক বিষয়ে আলাপ আলোচনা করার সময় তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেসময় এসব ককটেল, চাপাতিসহ সরঞ্জামাদি কিছুই তাদের কাছে ছিলোনা।
জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পুলিশ থানায় গ্রেফতারকৃতদের সামনে এসব ককটেল ও চাপাতি সাজিয়ে রেখে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করে এবং সাংবাদিকরা সেগুলোর ছবি তুলে ও ভিডিও ধরণ করে। তিনি বলেন, একজন মহানগর আমিরের কাছে কি করে ককটেল বা চাপাতি থাকতে পারে? তাছাড়া তাদের কাছে এগুলো থাকলে তারা পুলিশের সাথে এগুলো দিয়ে মোকাবেলা করেনি কেন? অস্ত্র সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দেয়া পুলিশের অনেক পুরনো ট্রিক্স বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিকে অন্যায়ভাবে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদেরকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে আজ রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়ায়েত ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর। মিছিলশেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মো. তসলিম বলেছেন, সরকার দেশকে একদলীয় বাকশালী রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য নূরুল ইসলাম বুলবুল সহ ৮ নেতাকে গ্রেফতার করেছে।
লস্কর মো. তসলিম বলেন, সরকার বিরোধী দল দমনের জন্য বিরাজনীতিকরণের পথ বেছে নিয়েছে। তারা ইতোমধ্যেই দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করে জনগণের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। রাজনৈতিক দল ও সকল নাগরিকের রাজপথে রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন সাংবিধানিক অধিকার হলেও সরকার বিরোধী দল ও জনগণকে সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। এমনকি বিরোধী দলের ঘরোয়া বৈঠকগুলোকে গোপন বৈঠক আখ্যা দিয়ে নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে রিমান্ডের নামে নির্মম ও নিষ্ঠুর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তিনি নূরুল ইসলাম বুলবুল সহ ৮ নেতার গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। অন্যথায় সরকারকে গণরোষের মুখেমুখি হতে হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল রাজধানীর কদমতলী থানার একটি বাসা থেকে পুলিশ জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলসহ ৮ শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করে। এক বিবৃতিতে জামায়াতের আমির মকবুল আহমেদ এই গ্রেফতারকে অন্যায়মূলক দাবি করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং নেতাদের নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেন।
Discussion about this post