মিয়ানমারে গণহত্যায় নিহত রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য দেশব্যাপী গায়েবানা জানাযা ও দোয়া কর্মসূচী পালন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। কেন্দ্রঘোষিত এই কর্মসূচীতে দেশব্যাপী দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নিয়েছে।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ
কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির কর্মসূচীর অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত গায়েবানা জানাজায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার। গায়েবানা জানাজায় ইমামতি করেন ভোলার পীর সাহেব, মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম কাওছারী।
গায়েবানা জানাজায় আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা ফরিদ হোসেন খান, আব্দুস সবুর ফকির, মোকাররম হোসাইন খান, শামসুর রহমান, কামাল হোসেন, আব্দুস সালাম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক খালিদ মাহমুদ, ছাত্রনেতা তোফাজ্জল, হাফেজ মাসুম তারিফ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
গায়েবানা জানাজায় বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সহ হাজার হাজার সাধারণ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা মহানগরী উত্তর
রাজধানীর বিশ্বরোড সংলগ্ন এলাকায় কেন্দ্র ঘোষিত ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত রোহিঙ্গা মুসলমানদের রূহের মাগফিরাত কামনায় গায়েবানা জানাজা ও আহত-আশ্রয়হীনদের কল্যাণ কামনায় দোয়া কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজা উত্তর সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, রোহিঙ্গারা মুসলমান বলেই তাদের উপর শতাব্দীর সবচাইতে নির্মম ও নিষ্ঠুর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বর্মী বর্গীরা আরাকান রাজ্যে যে গণহত্যা চালাচ্ছে তা অতীতের সকল নৃসংশতাকে হার মানিয়েছে। বাস্তুহারা, স্বজনহারা ও আশ্রয়হীন রোহিঙ্গাদের আহাজারীতে আকাশ-বাতাশ ভারী হয়ে উঠেছে। তাই রোহিঙ্গা মুসলমানদের রক্ষা করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে। তিনি রোহিঙ্গাদের অধিকার রক্ষায় জাতিসংঘ, ওআইসি, আবরলীগ ও সার্কসহ বিশ্বসংস্থাগুলোকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান।
জানাজায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য নাজিম উদ্দিন মোল্লা, শুরা সদস্য এ কে মজুমদার, জামায়াত নেতা এম এ বাশার, কামাল উদ্দিন, এম এ রহমান ও মো. কুতুব উদ্দীন, ছাত্রনেতা তরিকুর ইসলাম ও ইমরান হোসেন প্রমূখ। পরে তিনি উপস্থিত সকলকে সাথে নিয়ে নিহত, আহত ও বিপন্ন রোহিঙ্গাদের কল্যাণ কামনায় দোয়া এবং মুনাজাত পরিচালনা করেন।
চট্টগ্রাম
গণহত্যায় নিহত রোহিঙ্গা মুসলমানদের রুহের মাগফিরাত, আহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তাদের হেফাজতের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া দিবস উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজাপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠিকে জাতিগতভাবে নির্মুলের লক্ষ্যে সেনাবাহিনী গণহত্যা, গণধর্ষণ, বাড়িতে বাড়িতে অগ্নিসংযোগত, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান জা¦লিয়ে দিয়ে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক মানুষকে সে নিজ দেশ থেকে বিভিন্ন দেশে তাড়িয়ে দিয়েছে। অবিলম্বে এই জঘণ্য মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য অং সান সূচি এবং সেনা কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার করতে হবে। গত ২৫ আগষ্ট থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানেরা বাঁচার জন্য বাংলাদেশে শরণার্থী হিসাবে পালিয়ে এসে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ১৯৮২ সাল থেকে এই রোহিঙ্গা নাগরিকদের নাগরিকত্ব হরণ করেছে মিয়ানমার সরকার। অথচ তারা শত শত বছর ধরে সেখানে বসবাস করছে আসছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নিরীহ নারী,শিশু,বৃদ্ধ এবং যুবক-যুবতিকে গণহারে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। তিনি অবিলম্বে আন্তর্জাতিক আদলতে মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের দাবী জানান।
পুরাতন রেল ষ্টেশন চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,নগর জামায়াতের সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম,এসিসটেন্ট সেক্রেটারী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, নগর প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ, ছাত্রশিবির নগর উত্তর সভাপতির তাওহিদুল ইসলাম, নগর দক্ষিণ ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদমান সালেহ্, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি কাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গির হোসাইন। গায়েবানা জানাজা পূর্ব সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন, নগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা: মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুছ, মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী ও এম.এ.আলম প্রমুখ।
এছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর, কুমিল্লা, নারায়াণগঞ্জ, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, কক্সবাজার, মৌলবীবাজার, সুনামগঞ্জ, যশোর, বাগেরহাট, পাবনা, বগুড়া, দিনাজপুর, নীলফামারী, চাপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, টাংগাইলসহ দেশের আরো বিভিন্ন স্থানে গায়েবানা জানাযা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞপ্তি
Discussion about this post