বিশেষ প্রতিনিধি, অ্যানালাইসিস বিডি
দিন যত যাচ্ছে ততবেশি নির্বাচনী উত্তাপ চড়াচ্ছে সিরাজগঞ্জ শহর, নগর, গ্রাম-গঞ্জ আর চায়ের টেবিলে। নিজেদের প্রার্থী হিসেবে জানান দিতে এবং ভোটারদের কাছে পরিচিতি পেতে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন দলের নবীণ-প্রবীণসহ সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। থেমে নেই প্রার্থীদের সমর্থকরাও। যে যার পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।
দেশের তৃতীয় বৃহৎ রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরাও বসে নেই। প্রশাসনের নজরদারী আর মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে বিভিন্ন কৌশলে তারাও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন, অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচীতে। সিরাজগঞ্জের ০৬ টি আসনের মধ্যে নির্বাচনের জন্য জামায়াত ০৩ টি আসনকে টার্গেট করে প্রার্থীদেরকে মাঠে নামিয়েছে।
তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে সিরাজগঞ্জে অন্তত ২টি আসন যে কোন মুল্যে জোটের কাছ থেকে আদায় করবে জামায়াত। আসন দুটি হল- সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া-সলংগা) এবং সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসন।
২টি আসনের মধ্যে বিগত জোটবদ্ধ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া-সলংগা) আসনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা, শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বর্তমান জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল রফিকুল ইসলাম খাঁন বিগত নির্বাচনে জোটের প্রার্থী ছিলেন না বটে, তবে জোটের পক্ষ থেকে আসনটি ওপেন করে দেয়ায় বিএনপি প্রার্থী এম আকবার আলীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পিছনে ফেলে লক্ষাধিক ভোট পেয়ে উল্লাপাড়া আসনে জোটের প্রাথী হিসেবে নিজের অবস্থান অনেক উর্ধে তুলে ধরেন ও উল্লাপাড়ার রাজনীতিতে জামায়ায়াতের অবস্থানে নতুন মাত্রা যোগ করেন । এ ছাড়া জাতীয় রাজনীতিতে তিনি জোটের প্রথম সারির নেতাদের অন্যতম। দেশের গণতান্ত্রিক সকল আন্দোলন সংগ্রামে তার ভূমিকা ও অবদান রয়েছে। হ্যাভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান অপ্রতিদ্বন্দ্বী । যার ফলশ্রুতিতে এবারো জোটের প্রার্থী হিসেবে ও জয়ের ব্যপারে তিনি অনেকটাই নিশ্চিত এ আসনটিতে।
সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শু’রা সদস্য, বেলকুচি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের বতর্মান ভারপ্রাপ্ত আমীর বর্ষিয়ান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আলহাজ অধ্যক্ষ মোঃ আলী আলমকে গ্রীন সিগনাল দিয়েছে জামায়াত। বিগত নির্বাচনে এ আসনে জোটের ঘোষিত প্রার্থী ছিলেন তিনি। কিন্তু ১/১১ প্রেক্ষাপটে সে নির্বাচন বন্ধ হয়ে গেলে তিনি পরবর্তী নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হন। সব ভুলে জাতীয় ও জোটের স্বার্থে তিনি জামায়াতের সকল নেতা-কর্মীকে বিএনপির প্রার্থী মেজর মঞ্জুর কাদের এর পক্ষে কাজ করে জোটের প্রার্থীকে বিজয় করে ছাড়ের রাজনীতিতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ ছাড়া সৎ, যোগ্য ও ক্লিন ইমেজের রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তার রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। বেলকুচি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এ ছাড়াও ২০ দলীয় জোটের অান্দোলন সংগ্রামে বেলকুচি-চৌহালীতে জামায়াত ছিল সরব ও অগ্রভাগে। সাম্প্রতিক কালের ভয়াবহ বন্যায় বেলকুচি-চৌহালীসহ এনায়েতপুরের প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে জামায়াতের পক্ষে বানভাসি অসহায় মানুষের পাশেও তাকে ব্যপকভাবে দাঁড়াতে দেখা গেছে। তখন থেকেই চায়ের টেবিল, দোকানপাট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র তার নাম ব্যাপকভাবে আলোচিত হতে থাকে। কয়েকটি জাতীয় পত্র-পত্রিকা ও অনলাইনে এ সংক্রান্ত নিউজও প্রকাশিত হয়। ইতোমধ্যে তিনি বেলকুচি-চৌহালীতে জামায়াতের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ব্যাপক গণসংযোগ করে যাচ্ছেন।
এ দুটি আসন ছাড়াও সিরাজগঞ্জ-২ (সিরাজগঞ্জ সদর-কামারখন্দ) আসনে জামায়াতের প্রার্থী জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী, সাবেক ছাত্রনেতা অধ্যাপক মাওলানা জাহিদুল ইসলাম গণসংযোগ চালাচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে সিরাজগঞ্জ জেলা কমর্পরিষদ সদস্য, বেলকুচি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম সোহেলকে ফোন করলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, ৩টি আসনেই কেন্দ্রের নির্দেশনার অালোকে জামায়াত পরিকল্পিতভাবে নির্বচনী প্রস্তুতি গ্রহন করেছে। এ ৩টি আসনই জোটের কাছে দাবী জানাবে জামায়াত। তবে, জামায়াত ২’টি আসনে (সিরাজগঞ্জ-৪ ও ৫) যে কোন ভাবেই নির্বাচন করবে ও বিজয়ী হবে বলে তিনি জোরালো আশাবাদ ব্যক্ত করেন’।
Discussion about this post