অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বিদায়ের সময় ঘনিয়ে এসেছে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হকের। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই তার সময় শেষ হ”েছ বলে জানা গেছে। এমনকি মেয়াদ শেষের আগেও তাকে বিদায় করে দিয়ে অতিরিক্ত আইজিপি থেকে পুলিশের মহাপরিদর্শক করা হতে পারে বলেও গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহীদুল হক বর্তমানে পুলিশ বাহিনীর মধ্যে কোনঠাসা অবস্থায় আছেন। সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে অধিকাংশই তার বিপক্ষে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে নাকি প্রতিদিনই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচ্ছে।
জানা গেছে, স্বাধীনতার পর পুলিশ প্রধানের এই পদটিকে বিতর্কিত ও সমালোচিত করেছেন শহীদুল হক। এ পদে থেকে অতীতে কাউকে রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে শুনা যায়নি। সরকারকে খুশী করে পদটি ধরে রাখার জন্য তিনি অহরহ বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছেন। সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের মতোই তিনি জামায়াত-শিবিরকে গালিগালাজ করে থাকেন। দেশের কোথাও কোনো ঘটনা ঘটলেই তিনি জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করে বক্তব্য দেন। তার বক্তব্য শুনে বুঝার কোনো সুুযোগ নেই যে তিনি পুলিশ প্রধান নাকি সরকারের মন্ত্রী। তার এসব কর্মকা- নিয়ে সর্বমহলেই সমালোচনা চলে। পুলিশের ইউনিফর্ম খুলে রাজনীতিতে চলে আসার জন্যও তাকে পরামর্শ দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত।
তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার থাকাকালীনও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সরকার দলীয় এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন তার দলের কর্মী ইব্রাহীম হোসেনকে হত্যা করেছে। বিভিন্নভাবে তা প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু, তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার শহীদুল হক বলেছিলেন, আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলতে পারি শাওন ইব্রাহীমকে হত্যা করেনি। এ নিয়ে তখন সারাদেশে সমালোচনার ঝড় উঠে। তার এ বক্তব্যের কারণেই নিহত ইব্রাহীমের স্ত্রী ন্যায়বিচার পায়নি।
সর্বশেষ মঙ্গলবার আরেক নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়ে সারাদেশে হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন শহীদুল হক। গণমাধ্যমকে বলেছেন পান্থপথের ওই হোটেলে নিহত সাইফুল শিবির কর্মী ছিল। অথচ সাইফুল যে শিবির করে এটা তার বাড়ির আশপাশের মানুষও জানে না। এমনকি তার বাবা জামায়াত করার কারণে তার সঙ্গে সাইফুলের চরম মতবিরোধ চলছিল।
আর বুধবার ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, সাইফুলের রাজনৈতিক পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এজন্য আরও তদন্ত করতে হবে। কিন্তু, আইজিপি শহীদুল হক কোনো যাছাই বাছাই ছাড়াই বলে ফেললেন সাইফুল শিবির কর্মী ছিল। জামায়াত-শিবির ছাড়া এ ষড়যন্ত্র কেউ করতে পারে না।
জানা গেছে, ১৫ আগস্টের দিন পান্থপথে জঙ্গি আস্তানার আবিষ্কার, অভিযান, বিস্ফোরণ, গুলি, নিহতের ঘটনা সবই হয়েছে আইজিপি শহীদুল হকের পরিকল্পনা অনুযায়ী। কোনঠাসা শহীদুল হক সরকারের কাছ থেকে বড় একটা কৃতিত্ব নেয়ার জন্যই মূলত বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষির্কীতে একটা নাটক সাজিয়েছেন। তিনি ওইভাবে প্রচারও করেছেন যে, ৩২ নম্বরে হামলার পরিকল্পনা করেছিল তারা।
জানা গেছে, শহীদুল হকের এসব বক্তব্যকে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীই বিশ্বাস করছেন না। আর ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যের পর শহীদুল হক আরও বেকায়দায় পড়ে গেছেন। এখন পুলিশের মধ্যেই সাইফুলের পরিচয় নিয়ে মত পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। শহীদুল হকের ওপর অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করছে বলেও জানা গেছে।
Discussion about this post