প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সাথে আজ বুধবার রাতে সাক্ষাত করেছেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে এ আলোচনা হয়। এসময় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম উপস্থিত ছিলেন।
কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখনই সবকিছু বলা যাবে না। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। এখনো কারো সঙ্গেই আলোচনা শেষ হয়নি। আমরা রাষ্ট্রপতিকে দলীয় ও সরকারের অবস্থান ব্যাখা করেছি। আলোচনা শেষ হয়নি, আরো আলোচনা করতে হবে।
আপনি কী আবার প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করবেন? জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেখা করতে যেতেও পারি। এটা হাইড করার কী আছে? ওপেন সিক্রেট। আমি কয়েকদিন আগে তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। আপনারা (সাংবাদিক) পাননি। পরে আমি তো অস্বীকার করিনি। আবার দেখা করতে গেলে আপনারা জানবেন।
রাষ্ট্রপতি কী পরামার্শ দিয়েছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, কী পরামার্শ দিয়েছেন তা বলা যাবে না। আলোচনা শেষ হয়নি। খুব শিগগিরই কী ষোড়োশ সংশোধনীর রিভিউ করা হবে, জানতে চাইলে কাদের বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। পরে জানাবো।
তাছাড়া রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় দেশের বন্যা পরিস্থিতি ও গতকাল (১৫ আগস্ট মঙ্গলবার) বঙ্গবন্ধু ভবনকে ঘিরে আত্মঘাতী বোমা হামলার যে পরিকল্পনা ছিল সেটি নিয়েও নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
এর আগে গত শনিবার রাতে কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে যান ওবায়দুল কাদের।
গত রোববার বিকেলে এক অনুষ্ঠানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি প্রধান বিচারপতির বাসায় গিয়েছিলাম। তার সাথে আলোচনা হয়েছে। আমি তার সাথে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে যে পর্যবেক্ষণ ছিলো সেগুলো নিয়ে আমাদের দলের বক্তব্য জানিয়েছি। তার সাথে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে, আরো আলোচনা হবে। আলোচনা এখনো শেষ হয়নি। শেষ হওয়ার আগে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। সময়মতো সব কথা আপনারা জানবেন, আমিও বলবো।’
উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের যে পরিবর্তন ষোড়শ সংশোধনীতে আনা হয়েছিল, তা অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া রায় গত ১ অগাস্ট প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি দেশের রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি, সুশাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। তাতে ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটাক্ষ ও অবমূল্যায়ন করা হয়েছে’ অভিযোগ তুলে রায়ে সংক্ষুব্ধ সরকারি দল কড়া সমালোচনা করছে।
এদিকে জিয়াউর রহমান আমলে প্রতিষ্ঠিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ফিরিয়ে আনার এই রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম রায়ের পর্যবেক্ষণের ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য ‘এক্সপাঞ্জ’ করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন।
সূত্র: শীর্ষনিউজ ও নয়াদিগন্ত
Discussion about this post