ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায়ের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘আদালত যত বড়ই হোক, আদালতের হাত এত বড় লম্বা হয়নি যে সংসদ ছুঁতে পারে।’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৮তম জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মোহাম্মদ নাসিম এ কথা বলেন।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আমি কোনো রায় নিয়ে কথা বলতে চাই না। অশ্রদ্ধা করে কথা বলতে চাই না আমি। শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই, এই সংসদ জনগণের সংসদ। ১৬ কোটি মানুষের সংসদ। এই সংসদে হাত দেওয়ার অধিকার কারও নেই, একমাত্র জনগণ ছাড়া। আদালত যত বড়ই হোক, আদালতের হাত এত বড় লম্বা হয়নি যে সংসদকে ছুঁতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘সংসদই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ দিয়েছে। এই সংসদই রাষ্ট্রপতি বানিয়েছে। রাষ্ট্রপতি চিফ জাস্টিস বানিয়েছেন, বিচারপতি বানিয়েছেন। তাহলে এই সংসদকে অবমাননা করতে পারে না কেউ। একমাত্র জনগণ ছাড়া কারও এত বড় হাত নেই যে সংসদকে ছুঁতে পারে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সফল হলে চক্রান্ত হয়। যখন বঙ্গবন্ধু সফল হয়েছিলেন, তখন তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। জঙ্গি দমন করা সম্ভব হয়েছে। ঠিক এই মুহূর্তে চক্রান্ত শুরু হয়েছে। বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘চক্রান্ত করবেন না। বিএনপির বন্ধুদের বলব, চক্রান্তে লাভ হবে না। রাস্তায় রাস্তায় ঘোরেন, আদালতের দরজায় ঘোরেন কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু নির্বাচন ঠিক সময়ে হবে।’
সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আদালতের বিচার নিয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করব না। যারা বলে, এই দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়, আমি তাদের বলব, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের মধ্য দিয়ে এটা কি প্রমাণ হয়নি যে এই বাংলাদেশে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন।’ বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, তারা ভোটের কথা বলে। সংসদের কথা বলে। সংসদীয় গণতন্ত্র পদ্ধতির কথা বলে, অথচ সেই সংসদের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হলে তারা উৎফুল্ল-উজ্জীবিত হয়। এই হচ্ছে বিএনপি বা তাদের মিত্রদের রাজনীতি।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে যাদের জন্ম, সেই জন্ম কখনো সুষ্ঠু রাজনৈতিক চিন্তা করতে পারে না। এটা বারবার প্রমাণিত। আজও বিএনপি তাদের কাজ দিয়ে তা প্রমাণ করছে। তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে।
খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আদালত যেন কাজ এগিয়ে নিতে না পারেন, সে জন্য আদালতের অনুমতি না নিয়ে তিনি (খালেদা জিয়া) আজকে বিদেশে। এক–এগারোর কুশীলব, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী নতুন নতুন ষড়যন্ত্রের ফ্রন্ট খোলা হচ্ছে। আমি নাম উল্লেখ করতে চাই না। অনেক ফ্রন্ট যারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে বসছে। তারা নির্বাচনকে বানচাল করতে চায়, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
সূত্র: প্রথম আলো
Discussion about this post