আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপির উদ্দেশে বলেছেন, বিদেশিরা অথবা আদালত ক্ষমতায় বসাবে এমন দিবাস্বপ্ন যারা দেখছেন, তাদের সেই রঙিন খোয়াব তাসের ঘরের মতো ভেঙে যাবে। সেদিন আর বেশি দূরে নয়। ষড়যন্ত্র করছেন, কাদের নিয়ে, কিভাবে করছেন সব আমরা জানি। আমরা জবাব দেব।
তিনি বলেন, ক্ষমতায় বসাতে পারে এ দেশের জনগণ। সেই শক্তি শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে। কোনো ষড়যন্ত্র আমাদের উন্নয়নের মহাসড়কে চলার পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারবে না। আওয়ামী লীগ সংবিধানের বাইরে যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। এটাই সংবিধান।
সোমবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছার ৮৮তম জন্মদিন উপলক্ষে এক ছাত্রী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বারবার আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন। যিনি আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তিনি তো টেমস নদীর পাড়ে চলে গেছেন। চিকিৎসার নামে সেখানে বসে বসে কি করছেন সবাই জানে। আন্দোলন তাহলে কোথায়? আন্দোলন এখন টেমস নদীর পাড়ে খালেদা জিয়ার ভ্যানিটি ব্যাগে।
তিনি বলেন, সাড়ে ৮ বছর ধরে আন্দোলন করছেন। এখন তারা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে হটানোর জন্য ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছেন।
সময়ের পরিবর্তনে বাস্তবতার প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের কৌশল পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু চেতনার শেকড় থেকে একচুলও সরে দাঁড়ায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের ভুল বুঝবেন না। আওয়ামী লীগ ভয়ঙ্কর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ট্রায়াল করেছে এবং তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। শেখ হাসিনা জনগণ, স্বাধীনতা এবং আদর্শের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে এটা করতে পেরেছে।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, আন্দোলন করতে হলে জনগণ লাগে। জনগণ তো আপনাদের সঙ্গে নেই। জনগণ তো শেখ হাসিনার সঙ্গে।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিশ্বজিতের হত্যাকাণ্ডে দণ্ডপ্রাপ্ত রাজনের মতো কর্মী ছাত্রলীগের দরকার নেই। তুফানের মতো তুফান কর্মী আমাদের প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগে নিজেদের খুশি করার প্রবণতা রয়েছে। ছাত্রলীগের নেতাদের বক্তৃতায় বৈচিত্র্য আনতে হবে। ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি। কিন্তু যারা সংগঠনের সুনাম ক্ষুণ্ন করবে, দলে তাদের ঠাঁই নেই।
বঙ্গবন্ধু পরিবারকে এ দেশের রাজনীতিতে সৎ উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিবারের চরিত্র হনন করতে কম চেষ্টা করা হয়নি। ইতিহাস প্রমাণ করেছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একমাত্র সৎ-সাহসী বঙ্গবন্ধুর পরিবার। বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র তথ্যপ্রযুক্তিতে নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছেন। মুজিব পরিবারের সদস্যদের ক্ষমতার বিকল্প কেন্দ্র হাওয়া ভবন নেই। কোনো সময়ে তাদের সম্পদ সৃষ্টির প্রতি মনোযোগ ছিল না।
ছাত্রলীগের সম্মেলন নিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের সম্মেলন যথাসময়ে হবে। সম্মেলনের জন্য নেতাদের বলে দেয়া হয়েছে। তাদের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। ছাত্রলীগকে সম্মেলনের ঘাটতি পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। সম্মেলন করতে অনেক কিছুর প্রয়োজন থাকে। সে অনুযায়ী কাজ চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ জেলা, উপজেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে বলা হয়েছে। তিনি জানান, হঠাৎ করে একদিন সম্মেলনের ঘোষণা দেয়া হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি আবিদ আল হাসানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সের পরিচালনায় এতে বক্তব্য দেন শহীদ কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন প্রমুখ।
সূত্র: যুগান্তর
Discussion about this post