অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
পা এবং চোখের চিকিৎসা করাতে গত শনিবার রাতে লন্ডন গেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় উঠেছেন খালেদা জিয়া। লন্ডনে যাওয়ার আগেই বিএনপির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে যে, খালেদা জিয়া এবার দুই মাসের মতো লন্ডনে অবস্থান করবেন।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসা ছাড়াও দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থাসহ দলের সার্বিক বিষয় নিয়ে খালেদা জিয়া তারেক রহমানের সঙ্গে পরামর্শ করবেন। এছাড়া লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি মতবিনিয় করবেন। এজন্যই তার এবারের সফর একটু দীর্ঘ হবে।
এদিকে, খালেদা জিয়া লন্ডন যাওয়ার একদিন পরই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা বলছেন মামলার ভয়ে খালেদা জিয়া পালিয়ে গেছেন। তিনি আর দেশে ফিরবেন না বলেও তারা সন্দেহ প্রকাশ করছেন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে ‘দেখেন, উনি(খালেদা জিয়া) ফিরে আসেন কিনা’ বলে মন্তব্য করেছেন বলে মিডিয়ায় এসেছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মামলার ভয়ে খালেদা জিয়া পালিয়ে লন্ডন চলে গেছেন। মামলার ভয়ে খালেদা জিয়া আর ফিরে আসবেন না বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। অপরদিকে, মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকেও আজ খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এক মন্ত্রীর প্রশ্নের জবাবে খোদ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেখেন ফিরে আসে কিনা।
খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ দুই শীর্ষ নেতার বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বমহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও সমালোচনার ঝড় উঠেছ।
সমালোচকরা বলছেন, ওবায়দুল কাদের সব সময়ই মিথ্যা বলতে পটু। সত্য বলার রেকর্ড তার কমই। বিএনপি নেতাকর্মীসহ দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর নিয়ে ওবায়দুল কাদের এমন মিথ্যাচার করছেন। তারা বলছেন, খালেদা জিয়া পালিয়ে লন্ডন যাননি। এটা তার পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল। যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে কয়েক হাজার নেতাকর্মী তাকে বিদায় জানিয়েছেন। তার নেত্রীরই বরং পালিয়ে যাওয়ার অভ্যাস আছে। খালেদা জিয়া জীবনের চেয়ে দেশকেই বেশি ভালবাসেন।
কেউ কেউ বলছেন, শেখ হাসিনার চেয়ে খালেদা জিয়ার দেশপ্রেম অনেক বেশি। মন্ত্রীসভার বৈঠকে খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে মিথ্যা রসিকতা করেছেন তা ভদ্রতা ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত। বিএনপি নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙ্গে দেয়ার জন্যই সরকারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে এসব মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে।
খালেদা জিয়া যাতে দেশে ফিরতে না পারে এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চক্রান্ত হচ্ছে কিনা সেটা নিয়েও অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতা একই সঙ্গে এই বিষয়টির অবতারণা করাতে এ ব্যপারে অনেকের মনেই সংশয় তৈরি হয়েছে। তবে সরকার এমনটা করতে চাইলেও সম্ভব হবে না বলেও বিশ্বাস করেন তারা।
Discussion about this post