অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আলেম-ওলামা ও দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের দাবির মুখে সুপ্রিমকের্টের প্রাঙ্গণে স্থাপিত গ্রিক দেবীর মূর্তিটি সরিয়ে নিয়েছে সরকার। দেশের সামগ্রীক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন বিশিষ্টজনসহ সাধারণ মানুষ। এমনকি আওয়ামী লীগের কিছু লোক এর বিরোধীতা করলেও অধিকাংশ নেতাকর্মীই মূর্তি অপসারণের ঘটনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার পর মূর্তিটি অপসারণের কাজ শুরু হওয়ার পরই সেখানে উপস্থিত হন নির্মাতা মৃণাল হক। তিনি গতকাল রাতে ও আজকে সকালে বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আক্ষেপ করে গণমাধ্যমের কাছে তিনি বিভিন্ন ধরণের কথা বলেছেন। এনেক্স ভবনের সামনে মূর্তিটি পুনরায় স্থাপন করা হবে বলেও তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। মৃণাল হকের এসব বক্তব্য নিয়ে এখন বিভিন্ন মহলে চলছে কঠোর সমালোচনা।
অনেকেই বলছেন, মৃণাল হক হলেন নির্মাতা। মূর্তি কোথায় থাকবে আর কোথায় থাকবে না এটাতো তার দেখার বিষয় নয়। মৃণাল হক আসলে কী চান? তিনি কার এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছেন? এসব প্রশ্ন এখন মানুষের মুখে মুখে।
জানা গেছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন ভাস্কর্য ও মূর্তি নির্মাতার প্রধান উদ্যোক্তা মৃণাল হক। ঢাকা শহর ও দেশের বিভিন্ন ভার্সিটিতে বিভিন্ন সময় তিনি বিভিন্ন মূর্তি নির্মাণ করেছেন। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। মাঝে মধ্যে দেশে আসেন মূর্তি বানানোর জন্য।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুইটি উদ্দেশ্য নিয়ে মৃণাল হক দেশের বিভিন্ন স্থানে মূর্তি নির্মাণ করে যাচ্ছেন।
প্রথমত, আওয়ামী লীগের বিগত শাসনামলেই কামালা লোহানী, সুলতানা কামাল, শাহরিয়ার কবির, মুনতাসির মামুনসহ বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরা পরিকল্পনা করেছিল ভাস্কর্যের নাম করে দেশের আনাচে কানাচে মূর্তি নির্মাণ করার। এসব নির্মাণের জন্য তারা বেছে নিয়েছিল মৃণাল হককে। সারাদেশে মূর্তি ছড়িয়ে দেয়াই ছিল তাদের টার্গেট। বিশেষ করে মসজিদের শহর ঢাকাকে মূর্তির শহর হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে তুলে ধরা। দীর্ঘদিন ধরে তারা কৌশলে কাজগুলো করে যাচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, মৃণাল হকের জন্য এটা বড় একটা ব্যবসাও বটে। প্রতিটা মূর্তি থেকেই মোটা অংকের টাকা পাচ্ছেন মৃণাল হক। জানা গেছে, একটি মূর্তি তৈরিতে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৫-১০ লাখ টাকা। আর মৃণাল হক বিল করেন দেড় থেকে দুই কোটি টাকা। তার এ অর্থআত্মসাতের বিষয়ে কেউ কখনো প্রশ্ন তুলেনি। কারণ, তার সঙ্গে সরকারের ও বিশিষ্টজনদের বড় একটি প্রভাবশালী অংশ রয়েছে। আর বামপন্থী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরাতো আছেই।
এখন থেকে যদি আর কোনো মূর্তি নির্মাণ না করা হয় তাহলে মৃণাল হকের ব্যবসায় চরম ধস নামবে। এ থেকেই প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়েছে মৃণাল হক।
জানা গেছে, মূর্তি অপসারণের প্রতিবাদে আজ বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা যে বিক্ষোভ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে, এটা মৃণাল হকের ইন্ধনেই হয়েছে। এজন্য মৃণাল হক তাদেরকে মোটা অংকের টাকা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। মৃণালের টার্গেট যেকোনোভাবে হোক মৃর্তিটি আবার এনেক্স ভবনের সামনে স্থাপন করা যায়। বামপন্থীরা মূর্তি অপসারণের প্রতিবাদে যে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে, সেটা মৃণালের ইশারাতেই হয়েছে।
Discussion about this post