জোট গঠনের ৯ দিনের মাথায় ভাঙনের মুখে পড়েছে নামসর্বস্ব দল নিয়ে গড়া এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোট (ইউএনএ)। আর্থিক লেনদেন ও নতুন জোটে আধিপত্য নিয়ে বিএনএতে এই ভাঙন ধরে বলে জোটের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
৭ মে জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশ ইসলামি ফ্রন্ট এবং জাতীয় ইসলামি মহাজোট ও বাংলাদেশ জাতীয় জোটের (বিএনএ) সমন্বয়ে ইউএনএ নামে ‘ঢাউস আকারের’ এই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন এরশাদ। এতে সর্বমোট দল ৫৬টি। সংখ্যার দিক থেকে এটি দেশের বৃহত্তম জোট, যদিও এর মধ্যে ৫৪টি দলই নামসর্বস্ব।
এর মধ্যে নামসর্বস্ব ২১-দলীয় জোট বিএনএ ভেঙে গেছে। সেখান থেকে ১১টি দল বেরিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে একই নামে আলাদা জোট গঠন করেছে। এতে গণজাগরণ পার্টির চেয়ারম্যান সেলিম হায়দারকে চেয়ারম্যান ও আমজনতা পার্টির চেয়ারম্যান বেনজির আহমদকে সদস্যসচিব এবং গণ অধিকার পার্টির চেয়ারম্যান হোসেন মোল্লাকে মুখপাত্র করা হয়েছে। তাঁরা জোটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলীকে অব্যাহতি দিয়ে নিজেদের প্রকৃত বিএনএ দাবি করছেন।
হোসেন মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, সেকেন্দার আলীকে অব্যাহতি দিয়ে ১১টি দল মিলে বিএনএর নতুন কমিটি করা হয়েছে। দলগুলো হলো গণজাগরণ পার্টি, জাতীয় তফসিল ফেডারেশন, আমজনতা পার্টি, আওয়ামী পার্টি, গণ অধিকার পার্টি, ইসলামি গণতান্ত্রিক লীগ, প্রতিবাদী জনতা পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন, তৃণমূল লীগ, সচেতন হিন্দু পার্টি ও বাংলাদেশ মাইনরিটি পার্টি। তিনি বলেন, জোটের নতুন কমিটি জাতীয় পার্টির কাছে উপস্থাপন করা হবে। এরশাদ গ্রহণ করলে তাঁরা জোটে থাকবেন।
তবে সেকেন্দার আলী প্রথম আলোকে বলেন, পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় একজন তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে আলাদা জোট করার চেষ্টা করছেন। তাঁর দাবি, বিএনএর মূলধারার সবাই তাঁর সঙ্গে আছেন। দু-চারজন এগুলো করে বেড়াচ্ছেন। এর মধ্যে কয়েকটি দল গঠিত হয়েছে রাতারাতি।
এ অবস্থায় এখন জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন জোটে দলের সংখ্যা কত বা বিএনএর কোন অংশটি জোটে আছে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। বিএনএর নতুন অংশের মহাসচিব বেনজির আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, বিএনএতে আসলে দল ছিল ১৪টি। তাঁদের সঙ্গে আছে ১১টি দল। বাকি তিনটি দল আছে সেকেন্দারের সঙ্গে। তিনি বলেন, জাপা জোটে শেষ পর্যন্ত কে টিকবে, তা পরে দেখা যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সম্মিলিত জাতীয় জোটের প্রধান মুখপাত্র এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, বিএনএর সবাই সেকেন্দার আলীকে নেতা মানতেন। তাঁদের মতানৈক্য নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমাধান করার কথা। এরপর কেন এমন হলো, তা তাঁর জানা নেই। তিনি দাবি করেন, তাঁদের জোটে দলের সংখ্যা ঠিক আছে। আরও কেউ জোটে আসতে চাইলে আসতে পারে। তাতে দলের সংখ্যা বাড়বে।
সূত্র: প্রথম আলো
Discussion about this post