অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
প্রতি বছরের মত এবারও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। প্রতিবারের ন্যায় এবারও শোভাযাত্রায় স্থান পায় বিশালকায় চারুকর্ম পাপেট, হাতি, ঘোড়া, বাঘ, পেঁচাসহ নানান পশু পাখির ভাস্কর্য বা মূর্তি। তবে এবার তাদের শোভাযাত্রায় ভয়ংকর একটি মূর্তির কপালে ইসলামের পরিচিতি চিহ্ন চাঁদ তারা অঙ্কনের মাধ্যমে ইসলামকে অবমাননা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
প্রথম আলোতে প্রকাশিত আজকের মঙ্গল শোভাযাত্রার একটি ছবিতে শয়তান বা অপশক্তির প্রতীক হিসেবে তৈরি করা ভয়ংকর আকৃতির একটি মূর্তির কপালে ইসলামের পরিচিতি চিহ্ন চাঁদ তারা অঙ্কন করা দেখা গেছে। এর মাধ্যমে মূলত ইসলামকেই অপশক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
১৯৮৯ সাল থেকে শুরু হওয়া বিতর্কিত এই শোভাযাত্রাকে আয়োজকরা সাম্প্রদায়িকতা ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে মঙ্গলকে কামনা করা শোভাযাত্রা হিসেবেই দাবি করে থাকে। অসাম্প্রদায়িকতার নামে এবার তারা ইসলামকেই অপশক্তি হিসেবে চিহ্নিত করলো।
জানা যায় এই শোভাযাত্রায় যেসব প্রতিমূর্তি প্রদর্শন করা হয়, সেগুলো নিছক কেবল পশুপাখির অবয়ব মাত্র নয়; এর সাথে মিশে আছে ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতি। হিন্দু সমাজে শ্রী কৃষ্ণের জন্ম দিনে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী মঙ্গলের প্রতীক হিসেবে পেঁচা, রামের বাহন হিসেবে হনুমান, দুর্গার বাহন হিসেবে সিংহের মুখোশ পরে ও দেবতার প্রতীক হিসেবে সূর্য এবং অন্যান্য জীব-জন্তুর মুখোশ পরে মঙ্গল শোভা যাত্রা করে থাকে।
অসাম্প্রদায়িকতার নামে সম্পূর্ণরুপে হিন্দু সংস্কৃতিতে ঠাসা এই শোভাযাত্রার মাধ্যমে ইসলামকে অপশক্তি হিসেবে চিহ্নিত করার যে ধৃষ্টতা তারা দেখিয়েছে, এর জন্য সরকারকেই দায়ী করছেন অনেকে। তাদের দাবি সরকারি প্রশ্রয়েই তারা দিনের পর দিন মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে একটি কুসংস্কারকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এমনকি এই কুসংস্কারকে এবছর সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয়োজনেরও নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
এদিকে মঙ্গল শোভাযাত্রায় ইসলামকে অপশক্তি হিসেবে দেখানোর ধৃষ্টতার বিচার দাবি করেছে ক্ষুব্ধ ইসলামপ্রিয় জনগন। তাদের মতে, অসাম্প্রদায়িকতার নামে হিন্দু সংস্কৃতি লালনকারী কতিপয় লোক ইসলামকে অশুভ শক্তি দেখানোর মাধ্যমে দেশের ৯০ শতাংশ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হেনেছে। এর বিচার অবশ্যই সরকারকে করতে হবে।
অন্যদিকে, আজ চারুকলা অনুষদের ক্যান্টিনে গরুর মাংশ রান্না করার অপরাধে কতিপয় শিক্ষার্থী কর্তৃক ক্যান্টিন ভাংচুর করা হয় ও ক্যান্টিন পরিচালককে মারধর করা হয়। এই ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসলামপ্রিয় জনগন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও এই ঘটনা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
Discussion about this post