সিলেটের মানুষকে বরখাস্ত করা হয়েছে : আরিফ
দায়িত্ব নেয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে মেয়র পদ থেকে আবারো বহিষ্কার করার ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘এ শুধু আমাকেই বরখাস্ত করা নয়, এ হচ্ছে সিলেটের মানুষকে বরখাস্ত করা। আমি সিলেটের মানুষের মেয়র ছিলাম, আছিও।’ তিনি বলেন, সংসদ সদস্যরা কোনো মামলার আসামি হলে তাদের বরখাস্ত করা হয় না। কিন্তু স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা মামলায় জামিনে থাকলেও বরখাস্ত করা হয়। একই দেশে দুই আইন কেনো- এমন প্রশ্ন তার। তিনি বলেন, বহিষ্কার করা হলেও আমি মেয়র। জনগণের ভোটে নির্বাচিত মেয়র। মন্ত্রণালয় আমার দফতর কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু জনগণের ভোট তো কেড়ে নিতে পারবে না। তাই আমি এখন দফতরবিহীন মেয়র।
আরিফুল হক চৌধুরীকে মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি এখন ঢাকায় অবস্থান করছি। আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি মুঠোফোনে নয়া দিগন্তকে বলেন, গত রোববার উচ্চ আদালতের নির্দেশে আমি আমার কর্মস্থল সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করতে যাই এবং যথারীতি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফাইলে স্বাক্ষর করি। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের ঘণ্টা দু-এক পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে একটি ফ্যাক্স আসে। এই ফ্যাক্স পাওয়ার পর দেখি আবারো আমাকে মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরিফুল হক মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমি আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো। একই সঙ্গে জনগণের কাছেও আমি বিচার দিলাম। জনগণ ভোটের মাধ্যমে এই অবিচারের জবাব দেবে বলেও মন্তব্য করেন আরিফ।
বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে যদি এভাবে কথায় কথায় মামলার আসামি করা হয়, বরখাস্ত করা হয়, জনগণ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয় তবে সেটা মোটেই মঙ্গলজনক নয়। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় জনপ্রতিনিধিদের কাজ করার সুযোগ না দিলে তা রাষ্ট্রের জন্য অশনিসঙ্কেত।
এ প্রসঙ্গে আরিফুল হক চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম মোহাম্মদ কাফীও মুঠোফোনে ঢাকা থেকে নয়া দিগন্তকে বলেন, যে আইনে আরিফুল হক চৌধুরীকে বরখাস্ত করা হয়েছে, সে আইনের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে একটি রিট করেছি। সেটি এখনো নিষ্পন্ন হয়নি। এ অবস্থায় তাকে কিভাবে আবার বরখাস্ত করা হলো তা বুঝতে পারছি না। আমরা এ ব্যাপারে আবার আদালতের শরণাপন্ন হবো।
এর আগে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্রে নাম আসার পর ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ এক আদেশে সিসিক মেয়র আরিফকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে।
উল্লেখ্য সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সমাবেশে বোমা হামলার মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি হওয়ায় তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে বলে গত রোববার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে জানানো হয়। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের জারি করা এ বিষয়ক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মামলা ৪/২০০৯-এর সম্পূরক অভিযোগপত্র গত ২২ মার্চ আদালতে গৃহীত হয়েছে। সেহেতু সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে স্থানীয় সরকার বিভাগ আইন ২০০৯-এর ১২ উপধারা প্রদত্ত মতাবলে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।’
সর্বোচ্চ আদালতের অবমাননা করেছে সরকার : বুলবুল
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে গত রোববার সরকার ফের সাময়িক বরখাস্ত করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে তাকে এই সাসপেন্ড করা আদালত অবমাননার পর্যায়ে পড়ে কিনা বা কী প্রক্রিয়ায় তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে সে সম্পর্কে নিজের মতামত তুলে ধরেছেন তিনি। মেয়র বুলবুল বলেন, সরকার আমাকে ফের সাময়িক বরখাস্ত করে চরম অন্যায় ও সর্বোচ্চ আদালতের অবমাননা করেছে। এটি সরকারি ষড়যন্ত্র এবং এই ষড়যন্ত্রের সাথে রাসিকের ঊর্ধ্বতন তিনজন কর্মকর্তা ও ছয়জন কাউন্সিলর জড়িত রয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। এ ব্যাপারে আদালতে রিট করাসহ আদালত অবমাননার মামলা করবেন বলেও জানান মেয়র। মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বর্তমানে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন।
গতকাল সোমবার বিকেলে নিজ বাসভবনে দৈনিক নয়া দিগন্তের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এসব কথা বলেন। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নয়া দিগন্তের রাজশাহী ব্যুরো রিপোর্টার মুহা: আবদুল আউয়াল। সাক্ষাৎকারটি নিচে তুলে ধরা হলো-
নয়া দিগন্ত : আপনাকে মেয়রের পদ থেকে ফের সাসপেন্ড করেছে সরকার, এ ব্যাপারে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল : আমাকে মেয়রের পদ থেকে ফের সাময়িক বরখাস্ত করে সরকার চরম অন্যায় করেছে। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে সরকার সর্বোচ্চ আদালতের চরম অবমাননা করেছে।
তিনি বলেন, ‘যে কারণ দেখিয়ে আমাকে ফের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেয়া হয়েছে, সেই একই কারণ দেখিয়ে এর আগে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে উচ্চ আদালতের আদেশে আমি দায়িত্ব ফিরে পেয়েছি। উচ্চ আদালতের ওই আদেশে সাময়িক বরখাস্তের বিধানটি অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই আমাকে আবারো সাময়িক বরখাস্তের আদেশ সরকারের ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই আমি মনে করি, আমাকে আবারো সাসপেন্ড করে সরকার সর্বোচ্চ আদালতের চরম অবমাননা করেছে।’
মেয়র বুলবুল আরো বলেন, সরকার ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে সাসপেন্ড করেছে। আর সরকারের এই ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রমের সাথে রাসিকের তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ছয়জন কাউন্সিলর জড়িত রয়েছেন। তারা সরকারি এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করেছেন।
নয়া দিগন্ত : এ পরিস্থিতিতে আপনার পরবর্তী করণীয় বা পরিকল্পনা কী?
মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল : এ পরিস্থিতিতে আমি আদালতে রিট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পাশাপাশি আদালত অবমাননার মামলা করা হবে। আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) আদালতে এই মামলা করা হবে। এ ব্যাপারে আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হবে। তিনি বলেন, এর আগে আমি আদালতে ন্যায়বিচার পেয়েছি। তাই আদালতের শরণাপন্ন হলে আবারো আমি ন্যায়বিচার পাবো বলে আশা করছি।
নয়া দিগন্ত : ফের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ সঠিক নয় কেন?
মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল : আমাকে ফের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ সঠিক তো নয়ই, বরং তা সরকারের ষড়যন্ত্র ও প্রতিহিংসামূলক। এটি অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ। তিনি বলেন, আমাকে সাময়িক বরখাস্তের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আদেশ অবৈধ বলে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। গত ৫ মার্চ দেয়া আপিল বিভাগের এই আদেশের ফলে মেয়রের দায়িত্বগ্রহণে আর কোনো বাধা নেই। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ রাষ্ট্রপরে আবেদন খারিজ করে এই আদেশ দেন।
নয়া দিগন্ত : আদালত রায়ে কী বলেছেন?
মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল : যে কারণ দেখিয়ে এবং যে বিধান বলে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল তা সর্বোচ্চ আদালত অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন, আপিল বিভাগের ওই রায়ে সাময়িক বরখাস্তের বিধান- ধারা ১২ এর উপধারা (১) অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। আপিল বিভাগের ওই আদেশে বলা হয়, মামলায় অভিযোগপত্র দিলেই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করা যায় না। যেহেতু এটি ইলেকটেড পোস্ট (নির্বাচিত পদ), তাই মামলায় অভিযোগপত্র দিলেই একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করা যায় না। সুতরাং আমাকে সাময়িক বরখাস্তের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আদেশ অবৈধ। পাশাপাশি দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিযাম উল আযীমের ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র’ পদে দায়িত্ব গ্রহণও বৈধতা হারায়।
নয়া দিগন্ত : আপনাকে ধন্যবাদ।
মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল : আপনাকেও ধন্যবাদ।
জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্যই বারবার বহিষ্কার : গউছ
হবিগঞ্জ পৌরসভার সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ জি কে গউছ সরকারকে তামাশা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন ‘জনগণ একজনকে নির্বাচিত করে আর সরকার সেই নির্বাচিত প্রতিনিধিকে বহিষ্কার করে। হয় সরকারকে এ ধরনের খেলা বন্ধ করতে হবে নতুবা এই সরকারের অধীনে আর যাতে কোনো নির্বাচন না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, নির্বাচন দিলে ভিন্ন মতের নেতারা নির্বাচিত হতেই পারেন। তাদেরকে সহ্য করার মতা সরকারের থাকতে হবে। সহ্য করতে না পারলে কেন নির্বাচন দেয়া হয়। হবিগঞ্জ পৌরমেয়র হিসেবে চতুর্থ দফা বহিষ্কারের পর নয়া দিগন্তের সাথে আলাপকালে জি কে গউছ এসব কথা বলেন। ২০০৪ সালে বিএনপি সরকারের আমলে হবিগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হন জি কে গউছ। ২০০৭ সালে দীর্ঘমেয়াদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জি কে গউছকে গ্রেফতার করা হয়। হবিগঞ্জ, কুমিল্লা ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কাটে তার সাড়ে ১৯ মাস। ওই সময় জি কে গউছকে সাময়িক বহিষ্কার করে পৌর কাউন্সিলর কল্পনা বালা পালকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে নিজের পদ ফিরে পান জি কে গউছ। পরে আওয়ামী লীগের আমলে ২০১২ সালে দ্বিতীয়বারের মতো পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। এর পরই তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেয়া হতে থাকে।
এ ছাড়া এক যুগেরও পুরনো সব মামলায় তাকে আসামি করা হয়। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জে সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা মামলায় ২০১৪ সালে তৃতীয় দফা সম্পূরক চার্জশিটে জি কে গউছকে আসামি করা হয়। ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করলে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। পরে জি কে গউছকে মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করে সরকার। ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিএনপি ঘরানার কাউন্সিলর পেয়ারা বেগম। পরে পেয়ারা বেগম আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
জি কে গউছকে হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট কারাগারে থাকতে হয় দুই বছর সাত দিন। কারাগারে থাকা অবস্থায়ই পৌরসভার নির্বাচনে বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন জি কে গউছ। প্যারোলে মুক্তি পেয়ে শপথ গ্রহণের পর আবারো তাকে সাময়িক বহিষ্কার করে সরকার। এবার ভারপ্রাপ্ত মেয়র হন আওয়ামী লীগ নেতা কাউন্সিলর দিলীপ দাস।
২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েও নিজের পদ ফিরে পেতে তাকে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়। হাইকোর্ট থেকে জি কে গউছের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করা হলেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সেই আদেশ গ্রহণে কালপেণ শুরু করে। পরে হাইকোর্টে আরেকটি পিটিশনের মাধ্যমে সেই বাধা দূর হয়। অবশেষে গত ২৩ মার্চ মেয়র জি কে গউছ হবিগঞ্জ পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
দায়িত্ব গ্রহণের পর দিনের বেশির ভাগ অংশ তিনি কাটিয়েছেন পৌর এলাকার আনাচেকানাচে। চষে বেরিয়েছেন এ প্রান্ত থেকে সে প্রান্ত। জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারকরণ, পৌর এলাকায় লাইটিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ থেকে শুরু করে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে ব্যাকুল পৌরমেয়র আলহাজ জি কে গউছ মাত্র ১১ দিনের মাথায় গত ২ এপ্রিল পেলেন নিজের বহিষ্কারাদেশ। সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সুনামগঞ্জের জনসভায় হামলা হয় ১২ বছর আগে। সেই মামলায় কারান্তরীণ জি কে গউছকে গ্রেফতার দেখানো হয় অনেক আগেই। ওই মামলায় জামিনও পান তিনি। সেই মামলায়ই এবার বহিষ্কার করা হলো জি কে গউছকে।
এত সবের পর হাস্যোজ্জ্বল জি কে গউছ বলেন, আমি কোনো কিছুতেই ভড়কে যাই না। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি আমার সাথে রাজনীতিতে না পেরে প্রতিহিংসার পথ বেছে নেবে এটাই স্বাভাবিক। আমি ব্যক্তি ও সরকারের প্রতিহিংসার শিকার। আমাকে ধ্বংস করতে এমন কোনো পন্থা নেই যা সরকার করেনি। দুই মেয়াদে প্রায় চার বছর জেলে রাখা হয়েছে, জেলের ভেতরে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে, ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, বিনা চিকিৎসায় রাখা হয়েছে, কারাগারে ভাতের সাথে বালি মিশ্রিত করে দেয়া হয়েছে, কিন্তু আমাকে ধ্বংস করা সম্ভব হয়নি। এভাবে আমাকে ধ্বংস করাও সম্ভব নয়। যারা মনে করে বারবার বহিষ্কার করে আমাকে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়া হবে, আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেয়া হবে তারা আসলে দিবা স্বপ্ন দেখছে। আমি নির্বাচনের মানুষ, জনগণ আমার শক্তি, চারবার নয় এক শ’বার বহিষ্কার করা হলেও আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা যাবে না। আইনি প্রক্রিয়া শেষে দ্রুতই পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলেও জানান জি কে গউছ।
সূত্র: নয়াদিগন্ত
Discussion about this post