বিগত ১৫ বছর ধরে জাতির ঘাড়ে অবৈধভাবে চেপে বসে থাকা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনের চুড়ান্ত ধাপে চলে এসেছে বিএনপি। বুধবার জনসমাবেশ থেকে চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এই মহাসমাবেশের মধ্য দিয়েই মূলত বিএনপি হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চূড়ান্ত আন্দোলনে নামবে। বিএনপি নেতারা পরিষ্কার করে বলেছেন-স্বৈরাচারী হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা এবার মাঠেই থাকবেন।
বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপির চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলন ঠেকাতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও মরিয়া। তারা রাজপথে বিএনপিকে মোকাবেলার পাশাপাশি নামসর্বস্ব কিছু রাজনৈতিক সংগঠনকে এজেন্ট হিসেবেও মাঠে নামিয়েছে। একদিকে তারা মাঠে মোকাবেলা করবে, অপরদিকে বিএনপিকে আন্দোলন থেকে দূরে সরাতেও এজেন্টদের দিয়ে কাজ করছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আ.স.ম. আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, জুনাইদ সাকী ও সাইফুল হকদের নেতৃত্বে গণতন্ত্র মঞ্চ নামের জোটটি মূলত সরকারের ইশারাতেই গঠন হয়েছে। সরকার তাদেরকে দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ গঠন করে সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে বিএনপির কাছে পাঠিয়েছে।
সূত্রটি বলেছে, ২০১৮ সালে শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সরকার ড. কামাল ও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে দিয়ে কথিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করিয়েছিল। কামাল-জাফরুল্লাহ কৌশলে মির্জা ফখরুলসহ আওয়ামী ঘরানার বিএনপি নেতাদেরকে ঐক্যফ্রন্টে নিয়ে এসেছিল। তাদের টার্গেট কিন্তু শেখ হাসিনার পতন ছিল না। তারা মূলত হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় আনতেই কাজটি করেছিল। এবং সেই চক্রান্তে হাসিনা সফল হয়েছিল।
এরপর গতবার নির্বাচনের পর কোনো আন্দোলন না করায় পরবর্তীতে সাধারণ মানুষও বুঝতে পেরেছিল যে ঐক্যফ্রন্ট আসলে হাসিনার এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছিল। এরপর ড. কামালকে মানুষ আর বিশ্বাস করে না। এমনকি বিএনপির নেতাকর্মীরাও এখন আর কামালের নাম শুনতে পারে না। এজন্য সরকার এবার নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে। কথিত গণতন্ত্র মঞ্চও মূলত শেখ হাসিনার এজেন্ট। তারাই মূলত বিএনপির সরকার পতন আন্দোলনকে পেছাতে পেছাতে আগস্ট থেকে অক্টোবরের শেষ দিকে নিয়ে এসেছে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপিকে দাড়াতে দিবে না আওয়ামী লীগ। প্রথম দিন যদি বিএনপি দাড়াতে ব্যর্থ হয় তাহলে পরবর্তীতে আর সুবিধা করতে পারবে না। এরপর আ স ম রব, মান্না, জুনাইদ সাকী ও রেজা কিবরিয়ারা কৌশলে বিএনপি মহাসিচব মির্জা ফখরুলসহ বিএনপিতে থাকা বাম আদর্শের লোকগুলোকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা বলে আওয়ামী লীগের অধীনেই নির্বাচনে নেয়ার চেষ্টা করবে।
সচেতন মানুষ মনে করছেন, এবার যদি বিএনপি ২০১৮ সালের মতো হাসিনার কোনো ফাঁদে পা দেয় তাহলে দলটি একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তাই আন্দোলনের পাশাপাশি সরকারের এজেন্ট হিসেবে পরিচিত গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের থেকেও সতর্ক থাকতে হবে।
Discussion about this post