অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক:
বিগত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন এবং আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই কথা বলছেন অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দাবি, কথিত উন্নয়নে খুশি হয়ে দেশের মানুষ নাকি আওয়ামী লীগকে বিগত দুইটি নির্বাচনে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। আর দুর্নীতি, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কারণে নাকি মানুষ বিএনপি-জামায়াতকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এছাড়া, আগামী দ্বাদশ নির্বাচন নিয়েও শেখ হাসিনা সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে সরকার কোনো ভয়ে নেই। জনগণ ভোট দিলে থাকবে, না দিলে বিরোধী দলে যাবে। তার দাবি, তিনি জনগণের জন্য কাজ করেছেন তাই জনগণ আবার আওয়ামী লীগকে ভোট দিবে।
নির্বাচন নিয়ে সরকারের কোনো ভয় নেই-শেখ হাসিনা এই কথাটা সত্য বলেছেন। আসলেই নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো উদ্বেগ বা ভয় নেই। কারণ, নির্বাচনে যদি জনগণ ভোট দিতে পারে তাহলে একটা ভয় থাকে। দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ পায় তাহলে আওয়ামী লীগের সব প্রার্থী যে জামানত হারাবে এটা হাসিনা ভাল করেই জানে। এজন্য দিনের ভোট এখন রাতেই শেষ করে ফেলে যাতে ভোটারদের ঘুম থেকে উঠে আর কেন্দ্রে যেতে না হয়।
দেশের জনগণের অধিকার রক্ষায় ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরাই এখন নির্বাচনে হাসিনার মূল ভোটার। জনগণের ভোট আর এখন হাসিনার দরকার নাই। র্যাব-পুলিশ আর সেনাবাহিনী দিয়েই হাসিনা রাতের আধারে সিল মেরে ব্যালট বক্স ভরতে পারে। তাই নির্বাচন নিয়ে শেখ হাসিনার ভয় থাকবে কেন?
এরপর, কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত বিগত তিনটি নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়েছিল। দেশের মানুষ নিরাপদে স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিল। বাধাহীনভাবে তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছিল। কিন্তু ২০০৯ সালে ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের সহযোগিতায় ক্ষমতায় এসে ২০১১ সালে প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে ২০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে জনপ্রিয় কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করেছে শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারতের নির্দেশে পিলখানায় ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পরই হাসিনা বুঝতে পেরেছিল যে এদেশের মানুষ আর ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগকে ভোট দিবে না। নির্বাচনে পাস করতে হলে জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল আর ডাকাতি করেই পাস করতে হবে। সেই জন্যই শেখ হাসিনা জনপ্রিয় কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করেছিল।
হাসিনা এখন প্রায় প্রতিদিনই বলছে যে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের উন্নয়ন দেখে বারবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। এরচেয়ে প্রতারণা আর বাটপারি আর কিছুই হতে পারে না। সারাবিশ্বের মানুষ দেখেছে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে কি হয়েছে এবং হাসিনা কিভাবে ক্ষমতা দখল করেছে। শেখ হাসিনার যদি ন্যূনতম লজ্জা শরম থাকতো তাহলে বিগত দুইটি নির্বাচন নিয়ে কথা বলতো না।
Discussion about this post