অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
দুর্নীতি, লুটপাট করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে এবার চতুরমুখী সংকটে পড়েছে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। ডলার বাঁচাতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বাতিল করেছিল। উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ করেছে। সরকারি ব্যয় কমানোর নির্দেশ দিয়েছে। জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুত উৎপাদন কমিয়ে এনেছে। কিন্তু এত সব করেও সরকার এখন সামাল দিতে পারছে না।
সম্প্রতি দেশে মজুতকৃত জ্বালানি ফুরিয়ে আসছে। এখন জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দেশের মজুদকৃত জ্বালানি তেলে এক মাস চাহিদা পূরণ করা যাবে জানালেও, বর্তমান মজুদ ও দৈনিক জ্বালানি তেল বিক্রির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশে পেট্রলের মজুদ আছে ১৩ দিনের এবং অকটেনের মাত্র ১১ দিনের।
জানা গেছে, আগস্ট মাসের ৩ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেলের চাহিদার বিপরীতে বিপিসি ১৯ জুলাই পর্যন্ত মাত্র ১ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল আমদানির ঋণপত্র খুলতে পেরেছে।
জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশে ডিজেলের মজুদ আছে ৪ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন, ফার্নেস অয়েল প্রায় ৮২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। অকটেন মজুদ আছে ১৪ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন, জেড ফুয়েল ৫৮ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন, পেট্রল প্রায় ১৭ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন এবং কেরোসিন আছে ১৩ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন।
এদিকে চলতি মাসের ২৫ দিনের জ্বালানি তেল বিক্রির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, বর্তমানে দেশে দৈনিক ডিজেলের চাহিদা প্রায় ১৩ হাজার ৪৫৩ মেট্রিক টন। ফার্নেস অয়েলের চাহিদা দৈনিক ২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। অকটেন চাহিদা ১ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন। পেট্রলের চাহিদা ১ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন। এছাড়াও জেড ফুয়েল দৈনিক ১ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন করে বিক্রি হয়েছে।
বিপিসির শীর্ষ কর্মকর্তারা এক মাসের জ্বালানি মজুদের কথা বললেও জ্বালানি তেল মজুদের পরিমাণ ও দৈনিক বিক্রির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ থেকে উঠে আসছে ভিন্ন চিত্র। তাছাড়া বিভিন্ন ডিপোতে যে পরিমাণ জ্বালানি তেল মজুদ আছে তার ১০ শতাংশ (তলানি) পাম্পযোগ্য নয়। সেই হিসেবে দেশে মজুদ অকটেন দিয়ে ১১ দিনের এবং মজুদকৃত পেট্রল দিয়ে আর ১৩ দিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিপিসির পরিকল্পণা অনুযায়ী আগামী আগস্ট মাসে ডিজেল আমদানি করা হবে সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন, অকটেন আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন এবং জেড ফুয়েল আনা হবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন।
কিন্তু চলতি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডিজেল আমদানির জন্য বিপিসি বিভিন্ন ব্যাংকে মাত্র ৩টি ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পেরেছে। এই ৩টি এলসির বিপরীতে প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা হবে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী মাসের ১৫ তারিখের পরই দেশে জ্বালানি সংকট চরম আকার ধারণ করবে। জ্বালানির অভাবে দেশে অনেক কিছুই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমনকি জ্বালানির অভাবে যানবাহন চলাচলও সীমিত হয়ে আসতে পারে। তখন দেশজুড়ে বড় ধরণের অস্থিরতা সৃষ্টি হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জ্বালানির সাথে বর্তমান সরকারের মেয়াদও ফুরিয়ে আসতে পারে। কারণ, সরকার যদি পর্যাপ্ত জ্বালানি আমদানি করতে না পারে তাহলে সবই বন্ধ হয়ে যাবে। তখন সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।
Discussion about this post