অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
দেশে অর্থনৈতিক চরম সংকট চলছে। কিন্তু শেখ হাসিনাও তার দলের দুর্নীতিবাজ নেতারা প্রতিদিনই উন্নয়নের নামে ফাকাবুলি ছেড়ে মানুষকে গলধকরণ করাচ্ছেন। তবে সম্প্রতি সরকারি কর্মকর্তাদের সকল প্রকার বিদেশ সফর বাতিল করার মাধ্যমে শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক সংকট প্রকাশ্যে এসেছে। বেরিয়ে এসেছে মুদ্রার অন্যপিঠ। শুরু হলো শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক সংকট।
দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতাসীন সরকারের এসবক কথিত উন্নয়নের পেছনের গল্প পাঠকদের কাছে তুলে ধরে আসছে অ্যানালাইসিস বিডি। শতাধিক প্রতিবেদনে যথাযথ তথ্যউপাত্য দিয়ে বলা হয়েছে যে, শেখ হাসিনা দেশে কথিত উন্নয়নের নামে যে ফাকাবুলি শুনিয়ে যাচ্ছে তার পেছনে রয়েছে দেশকে লুট করার ফন্দি। তারাই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা সারাদেশে শত শত কথিত উন্নয়ন প্রকল্পের সাইনবোর্ড টানিয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে শেখ হাসিনা তার দলের নেতাকর্মীদেরকে লুটপাটের সুযোগ করে দিয়েছে।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বলছে-শেখ হাসিনার অবস্থা শ্রীলংকার মতো হতে আর বেশি দিন বাকী নাই। খুব শিগগিরই দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা আসতেছে।
অনুসন্ধান বলছে, বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভে এখন প্রতিদিনই কমছে। রপ্তানির চেয়ে দেশে আমদানি অনেকগুন বেড়েছে। যার কারণে ডলারের বাজারে দেখা দিয়েছে বড় ধরণের সংকট। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক রিজার্ভে মাত্র ৪১ বিলিয়ন ডলার আছে। যেটা দিয়ে মাত্র ৬ মাস আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।
পরিস্থিতি বলছে, আগামী ৬ মাস পর বাংলাদেশে ডলারের বড় ধরনের সংকট দেখা দিবে। তখন সরকার চাইলেও প্রয়োজনীয় পণ্য আমাদানি করতে পারবে না। আর বিদেশ থেকে পণ্য আমাদানি করতে না পারলে দেশের বাজারে এগুলোর দাম বেড়ে যাবে বহুগুন। তখন দেশে দেখা দিবে বড় ধরণের অস্থিরতা।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শুধু বৈদেশিক রিজার্ভ বাচাতে সরকার কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বাতিল করেছে। সরকার স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছে যে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই দেশে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিবে। রিজার্ভ সংকট যাতে না হয় সেইজন্য সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বাতিল করেছে সরকার। আর এতদিন ধরে রিজার্ভ নিয়ে সরকার যে গালগল্প করে আসছিল, সেটা যে মিথ্যা এখন তা প্রমাণিত।
অপরদিকে, বিলাসবহুল পণ্য আমাদানিতেও সরকার এক প্রকার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোই এখন আমাদানি করা হবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন-দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খুবই খারাপের দিকে যাচ্ছে। অর্থনীতি নিয়ে সরকার মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। সরকার যা বলছে বাস্তবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন না। যেকোনো সময় দেশের অর্থনীতি একেবারে ধসে পড়তে পারে।
তারা বলছেন, করোনা মহামারির দু’বছরে উচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং দাতা সংস্থাগুলোর ঋণ সহায়তায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছায়। গত আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়ায় রিজার্ভ। এখন তা নেমেছে ৪১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। বর্তমানের এ রিজার্ভ দিয়ে ছয় মাসের বেশি আমদানি দায় মেটানো সম্ভব নয়।
এছাড়া আমদানি ব্যয়ে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি এবং রেমিট্যান্স কমায় রিজার্ভে টান পড়েছে বলে মনে করছেন আর্থিক খাত বিশ্লেষকরা। গত মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে আমদানি ব্যয় প্রায় ৪৪ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ১৫২ কোটি ডলার হয়েছে। রপ্তানি ৩৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৬৬২ কোটি ডলার। অন্যদিকে রেমিট্যান্স কমে ১ হাজার ৫৩০ কোটি ডলারে নেমেছে। এতে বাড়ছে সামগ্রিক বাণিজ্য ঘাটতি।
এদিকে আমদানি দায় মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সবশেষ আমদানি বাবদ বিল পরিশোধ ও ডলার বিক্রির কারণে রিজার্ভ কমে ৪ হাজার ১৯৫ কোটি ডলারে দাড়িয়েছে। এতে গত দেড় মাসে কয়েক ধাপে ডলারের দাম বেড়েছে ৭০ পয়সা।
Discussion about this post